Ajker Patrika

পরিবারের কাছাকাছি

পরিবারের কাছাকাছি

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সম্পর্ক প্রতিদিন নতুন মোড় নেয়। সাফল্যের নিরিখে ওঠানামা করে সম্পর্কের পারদ। আজ সেখানে আলো তো কাল অন্ধকার। কিন্তু পরিবার পাশে থাকলে সাফল্যের সূর্য ডোবে না। এই সত্যটা উপলব্ধি করেই এ সময়ের জনপ্রিয় তারকারা পরিবারকে করেছেন পাথেয়। কারণ, দর্শক মুখ ফিরিয়ে নিলেও পরিবার মুখ ফেরায় না। এমন কয়েকজন তারকার গল্প তুলে ধরা হয়েছে এ লেখায়।

শহিদ কাপুরশহিদ কাপুর
শহিদের পরিবার নিয়ে বলতে গেলে কিছুটা ভূমিকা দরকার। শহিদের মা নীলিমা, পিতা পঙ্কজ কাপুর। বিচ্ছেদের পর পঙ্কজ বিয়ে করেন সুপ্রিয়া পাঠককে এবং নীলিমা বিয়ে করেন রাজেশ খাট্টারকে। শহিদ ছোটবেলা থেকেই পরিবারের প্রতি ভালোবাসা লালন না করলে হয়তো তাঁর পারিবারিক সম্পর্ক টিকত না। সৎভাই ঈশান খাট্টার নিজমুখে স্বীকার করেন, ছোটবেলা থেকে শহিদের ভালোবাসা ও গাইডেন্স পেয়ে বড় হয়েছেন। আবার পঙ্কজ-সুপ্রিয়ার মেয়ে সানা কাপুরের বলিউডে অভিষেক হয়েছিল শহিদের সাহায্যেই। নিজ হাতে বোনের বিয়েও দিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, মা নীলিমার দ্বিতীয়পক্ষ রাজেশ খাট্টারের সঙ্গেও শহিদের সম্পর্ক ভালো। এমন নিদর্শন

কিন্তু উন্মুক্তমনা বলিউডেও খুব কম। অর্জুন কাপুর এবং জাহ্নবী কাপুরের মধ্যে বরফ গলতে সময় লেগেছিল বহু বছর। সেখানে শহিদ ছোটবেলা থেকেই পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল, নিঃসন্দেহে এটা তাঁর বৃহৎ হৃদয়ের পরিচয় দেয়। তবে প্রেমের সম্পর্কে বরাবরই হতভাগ্য ছিলেন তিনি। কারিনা কাপুর, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, বিদ্যা বালানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালেও কোনোটাই টেকেনি। মীরা রাজপুতের সঙ্গেই থিতু হয়েছেন। মীরা এবং দুই ছেলেমেয়ের সঙ্গে সময় কাটাতে প্রায়ই কাজ থেকে ছুটি নেন শহিদ।

বরুণ ধাওয়ানবরুণ ধাওয়ান
পরিবারের ছোট ছেলে বরুণ ধাওয়ান, নিজের অভিভাবক মনে করেন দাদা রোহিতকে। দাদাকেই সবচেয়ে বেশি ভয় পান তিনি। কারণ, দাদা নাকি কড়া শাসনে বড় করেছেন বরুণকে। লকডাউনের আগে তিনি আলাদা ফ্ল্যাট কিনে শিফট করেছিলেন। তবে পুরো লকডাউনের সময়টা মা-বাবা, দাদা-বৌদির সঙ্গে পুরোনো বাড়িতেই কাটিয়েছেন তিনি। বরুণের বিয়েটাও ছিল পরিবার-পরিজন ঘেরা। ইন্ডাস্ট্রির কেউ সেখানে নিমন্ত্রিত ছিলেন না। যত হিট সিনেমাই তাঁর ঝুলিতে থাকুক না কেন, এখনো নিজের হাতে ক্ষীর রেঁধে বাবাকে ইমপ্রেস করতে পারলে, সেটাই বরুণের সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার।

কার্তিক আরিয়ানকার্তিক আরিয়ান
কার্তিক যখন মুম্বাইয়ে স্ট্রাগল করছিলেন, তখন ১১ জনের সঙ্গে একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। তখনই ঠিক করে নিয়েছিলেন, একদিন এ শহরেই নিজের একটি আশ্রয় তৈরি করবেন এবং মাকে নিয়ে আসবেন। কারণ, মা ছাড়া তাঁর খাবারের ব্যাপারটা কেউ বোঝে না।স্ট্রাগলের দিন পেরিয়ে কার্তিক এখন বলিউডের হার্টথ্রুব। বর্তমানে শহিদ কাপুরের পুরোনো বাংলোয় ভাড়া থাকেন কার্তিক। সঙ্গে শুধু মা নন, বাবা এবং বোনও থাকেন। আগে যে কার্তিক পার্টি আর বাউন্ডুলেপনায় ব্যস্ত থাকতেন, এখন অধিকাংশ সময় পরিবারের সঙ্গেই কাটান। বোনের সঙ্গে তাঁর রিল তো বেশ জনপ্রিয়। মায়ের হাতের রান্না খেয়ে রোজ শুটিংয়ে যান। মা-বাবার সঙ্গে সিরিজ-সিনেমা দেখেন।কার্তিক যখন প্রথম একটি বিলাসবহুল স্পোর্টস কার কিনেছিলেন, সেই গাড়ির সামনের সিটে মাকে বসিয়ে ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলেন পুরো মুম্বাই শহর।

কৃতি শ্যাননকৃতি শ্যানন
মায়ের বারণের জন্য করণ জোহরের ‘লাস্ট স্টোরিজ’-এর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কৃতি। পরে সেটি কিয়ারা আদভানির কাছে যায় এবং ভীষণ জনপ্রিয় হয়। তখন কৃতি ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন। ওই সময় করণ জোহরের মতো প্রভাবশালী পরিচালক-প্রযোজককে ‘না’ করে দেওয়া, মানে বুঝতেই পারছেন, পরিবারের সম্মতি কৃতির কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ? চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বাবা এবং ফিজিকসের অধ্যাপক মায়ের মেয়ে কৃতি পড়াশোনা করেছেন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। ফলে মেয়ের অভিনয়ে আসার সিদ্ধান্তের কথা শুনে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন মা-বাবা।

তবে মেয়েকে বাধা দেননি দিল্লি থেকে মুম্বাই যেতে। শর্ত ছিল, কোনো বিতর্কিত দৃশ্যে অভিনয় করা যাবে না। আর প্রথম দুটো ছবি সফল না হলে ঘরের মেয়েকে ঘরে ফিরতে হবে। ‘হিরোপান্তি’ ও ‘দিলওয়ালে’ জনপ্রিয় হওয়ায় ফিরে যেতে হয়নি কৃতিকে। উল্টো তিনিই মুম্বাইয়ে নিয়ে এসেছেন মা-বাবা ও বোনকে। বোন নূপুর শ্যাননকে গান ও অভিনয়ের জগতে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অনেক কিছু করেছেন। প্রতিটি সিনেমার শুটিং সেরেই পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে যান কৃতি।

আয়ুষ্মান খুরানা আয়ুষ্মান খুরানা 
যখন চণ্ডীগড় থেকে মুম্বাই আসেন আয়ুষ্মান, তখন তাঁর হাতে কেবল অভিনয়ের কাজ ছিল না। রেডিও জকি ছিলেন, গানের ব্যান্ড ছিল, সঞ্চালনা করতেন; ফলে কাজের অভাব ছিল না। স্ত্রী তাহিরা কশ্যপ তাঁর জীবনের অন্যতম স্তম্ভ। নিজে অধ্যাপনা করে আয়ুষ্মানের স্ট্রাগলের দিনগুলোতে পাশে ছিলেন তিনি। ভাই অপারশক্তি খুরানাও একই কাজ করেছেন। দুই ভাই যখন মুম্বাইয়ে স্ট্রাগল করছেন, তখনই মা-বাবাকে চণ্ডীগড় থেকে নিয়ে আসেন তাঁরা। স্ত্রী তাহিরা যখন ক্যানসারে আক্রান্ত হন, তখন আয়ুষ্মান ‘দম লাগাকে হাইসা’, ‘বাধাই হো’ সিনেমা নিয়ে চরম ব্যস্ত। সেই সময় খুরানা পরিবারের সদস্যরা সার্বক্ষণিক ছিলেন তাহিরার পাশে। কয়েক মাস আগে আয়ুষ্মানের বাবার আকস্মিক মৃত্যু হয়। বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণার ভিডিওতে ভ্রাতৃদ্বয় চালিয়েছিলেন ‘আই অ্যাম আ ডিস্কো ডান্সার’ গান।

কারণ, বাবা বলেছিলেন, তাঁর মৃত্যুতে যেন খুরানা পরিবারের আনন্দময় জীবনযাপনে ব্যাঘাত না ঘটে এবং ছেলেরা যেন তাঁদের মায়ের খেয়াল রাখে। এখন আয়ুষ্মানের সাফল্যে ইন্ডাস্ট্রিতে বন্ধু তৈরি হয়েছে প্রচুর। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির বড় দিওয়ালি পার্টিগুলোতে তিনি যান না। তিনি ও স্ত্রী তাহিরা বাড়িতেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে দিওয়ালি পার্টি দেন, যেখানে ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুবান্ধবও আসেন। দেখতে দেখতে সেই পার্টি এখন বলিউডের অন্যতম বড় দিওয়ালি পার্টিতে পরিণত হয়েছে। পরিবার পাশে থাকলে কী না হয়!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১টা বাজলেই আর স্কুলে থাকে না শিক্ষার্থীরা, ফটকে তালা দিয়েও ঠেকানো গেল না

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আসামে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ বহাল থাকবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত

জম্মু-কাশ্মীরে ধ্বংস করা হলো ৪৪ হাজার কেজি রসগোল্লা

সরকারের কমিটি পছন্দ হয়নি, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ‎প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত