Ajker Patrika

টাকা নিয়ে লাপাত্তা এনজিও

ফরিদপুর সংবাদদাতা
টাকা নিয়ে লাপাত্তা এনজিও

স্বল্পসুদে ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি এনজিওর বিরুদ্ধে। যমুনা ফাউন্ডেশন নামের ওই এনজিওর কোনো অফিস বা কর্মকর্তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।

জানা গেছে, ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের ধুলজুড়ি গ্রামের কয়েক শ গ্রাহকের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫ হাজার থেকে ৪৪ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছেন ওই এনজিওর কর্মকর্তারা। টাকা নেওয়ার সময় তাঁদের দেওয়া হয়নি কোনো কাগজপত্র।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের পক্ষে উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের জয়দেবপুর গ্রামের মো. চুন্নু ফকির বাদী হয়ে ওহিদুল মোল্যা ও আবু সাঈদ মোল্যাসহ অজ্ঞাতনামা সাতজনের বিরুদ্ধে আলফাডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের ধুলজুড়ি গ্রামে ওহিদুল মোল্যার বাড়ি ভাড়া নিয়ে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করে যমুনা ফাউন্ডেশন নামের ওই এনজিও প্রতিষ্ঠান। গত ২৫ নভেম্বর ওহিদুল মোল্যার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে ১৮ জন মিলে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৪৪ হাজার টাকা সঞ্চয় দিয়ে ওই এনজিওর সদস্য হন। ওই দিন তাঁরা ২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা দেন। ৩০ নভেম্বর দুপুরে ঋণের টাকা দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়। ঋণ বিতরণের দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের কাউকেই পাওয়া যায়নি। এরপরই বিষয়টি জানাজানি হয়।

বাড়ির মালিক ওহিদুল মোল্যার ছেলে ওবায়দুর মোল্যার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে চারজন যুবক যশোর জেলার দড়াটানা উপজেলার বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে এনজিও অফিস করবেন বলে আমাদের বাড়ি ভাড়া নিতে চান। ভাড়া বাবদ অগ্রিম পাঁচ লাখ টাকা চাওয়া হলে তাঁরা সেই দাবি মেনে নিয়ে ৩০ নভেম্বর টাকা দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। তার আগেই মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। আমাদের বাড়িতে যমুনা ফাউন্ডেশন নামের কোনো এনজিওর সাইনবোর্ড ছিল না। যাঁরা এসব প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন তাঁদের নামে অভিযোগ না দিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।’

ধুলজুড়ি গ্রামের ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার বাড়িতে এক ব্যক্তি আসেন। তিনি যমুনা ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা বলে দাবি করেন। বাড়িতে এসে বলেন এক লাখ টাকা লোন দেবেন, সেই টাকা দুই বছর ধরে পরিশোধ করতে হবে। তার বিনিময়ে ১০ হাজার টাকা দিয়ে সদস্য হতে হবে। বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছি। পরে জানতে পারি, তাঁরা প্রতারণা করে পালিয়ে গেছেন। আমাদের গ্রামসহ উপজেলার অনেক গ্রামের মানুষের সঙ্গে তাঁরা প্রতারণা করেছেন।’

বেড়িরহাট বাজারের ডেকোরেটর ব্যবসায়ী মাসুদ বলেন, ‘এনজিও কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে দোকান থেকে চেয়ার ও টেবিল ২ হাজার ১০০ টাকা দিয়ে ভাড়া করে ১০০ টাকা পরিশোধ করে বাকি টাকা পরে দেবেন বলে জানান। ভাড়া না দিয়ে চেয়ার, টেবিল রেখে পালিয়ে গেছেন।’

যমুনা ফাউন্ডেশনের নামে প্রতারণা করে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের সদস্যরা লাপাত্তা হয়ে যাওয়ায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

তাঁদের মোবাইল ফোন নম্বরও পাওয়া যায়নি।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বজলুর রশীদ বলেন, যমুনা ফাউন্ডেশন নামের কোনো এনজিও উপজেলা সমাজসেবার তালিকাভুক্ত নেই। একটি প্রতারক চক্র মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে পালিয়ে গেছে।

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু তাহের বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রতারকদের খুঁজে বের করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত