Ajker Patrika

পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তি

আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২১, ১৮: ২০
পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তি

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘট চলছে। বিআরটিসির বাস ছাড়া দূরপাল্লার সব যানবাহন বন্ধ রয়েছে। এ কারণে গতকাল শুক্রবার ভোগান্তিতে পড়েন দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা। বেশি টাকা খরচ করে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে হয়েছে তাঁদের। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

ঝালকাঠি: ডিজেলসহ সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঝালকাঠির ১৪ রুটে চলছে পরিবহন ধর্মঘট। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় এই ধর্মঘট। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সকাল থেকেই যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বাস না পেয়ে ছোট যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়ায় গন্তব্যে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। ঝালকাঠি আন্তজেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বাহাদুর চৌধুরী জানান, জ্বালানি তেলের দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়ানোর প্রতিবাদে সারা দেশের ন্যায় বরিশাল-ঝালকাঠি-খুলনা-ঢাকাসহ ১৪ রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জ্বালানি তেলে দাম কমানো না হলে ধর্মঘট চলবে বলেও জানান তিনি।

ভোলা: জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটের প্রথম দিন ভোলা-বরিশাল রুটে গণপরিবহন বন্ধ ছিল। তবে চলাচল করছে যাত্রীবাহী লঞ্চ। শুক্রবার সকালে ভোলার ভেদুরিয়া ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বরিশালের লাহারহাট থেকে ফেরি কৃষ্ণচূড়া ভোলা ফেরিঘাটে নির্ধারিত সকাল সাড়ে ৬টায় আসার কথা থাকলেও সেই ফেরি এসেছে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে। সেই ফেরিতে ৭-৮টি মালবাহী ট্রাক ও পিকআপ, অ্যাম্বুলেন্স ও ৪-৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে ভোলার ভেদুরিয়া ফেরিঘাট থেকে বরিশালের লাহারহাটে যেতে দেখা গেছে।

এ বিষয়ে ভোলা-বরিশাল রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ মেঘদূতের মাস্টার নাসির উদ্দিন জানান, শুক্রবার সকাল থেকেই যাত্রী সংখ্যা ছিল অনেক কম। বরিশাল থেকে সকাল ৭টায় আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ভোলার উদ্দেশে ছেড়ে আসে ওই লঞ্চ। ভোলায় পৌঁছে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে।

অন্যদিকে, ভোলা-চরফ্যাশন রুটে সকাল থেকে বাস চলাচল করছে। তবে, বাসেও যাত্রী আগের চেয়ে কম লক্ষ্য করা গেছে। এ বিষয়ে ভোলা জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ শুক্রবার বিকেলে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভোলায় গণপরিবহন চলছে। আমরা একটা দ্বীপের মধ্যে আছি। তাই, আমরা যাত্রীদের অসুবিধার কথা চিন্তা করে এ রুটে গণপরিবহন বন্ধ করতে পারি না।’

শিবচর (মাদারীপুর) : শুক্রবার সকাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীরা শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে এসে ভোগান্তিতে পড়েন। বিআরটিসি ছাড়া দূর পাল্লার সব যানবাহন বন্ধ থাকায় পরিবহন সংকটে পড়েন ঢাকা থেকে আসা অসংখ্য যাত্রী। মাইক্রোবাস ও থ্রি হুইলারে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে হয় তাঁদের।

বরিশালগামী যাত্রীরা জানান, বিআরটিসি বাস চলছে শুধু। তবে প্রচণ্ড ভিড়। এ ছাড়া থ্রি হুইলারে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে ভুরঘাটা পর্যন্ত যাওয়া যাচ্ছে। সেখান থেকে গাড়ি পাল্টে বরিশাল যাওয়া যাবে। গাড়ি বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।

মাদারীপুরগামী যাত্রী মো. ইদ্রিস বলেন, ‘বাংলাবাজার ঘাট থেকে থ্রি হুইলারে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে। ঢাকা থেকে আসতেও হয়েছে সিএনজি চালিত ছোট যানবাহনে করে। পথে পথে ভোগান্তি হয়েছে।’

বিএমএফ পরিবহনের চালকের সহকারী সাকিবুল হাসান বলেন, ‘তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিবহন বন্ধ থাকলে আমাদের আয়ও বন্ধ। আমরা চাই তেলের দাম কমে যাক।’

খুলনাগামী ফাল্গুনী পরিবহনের চালক মো. হানিফ বলেন, ‘তেলের দাম বেড়েছে। যাত্রীভাড়া না বাড়ানো হলে লোকসান গুনতে হবে পরিবহন মালিকদের। এ কারণেই পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে।’

এদিকে, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। যাত্রীদের চাপ শুক্রবার কিছুটা বেশি দেখা যায়।

মাতবর নেভিগেশনের মালিক মো. লিটন মাতবর বলেন, ‘তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লঞ্চ চলাচলে আমাদের লোকসান হবে। তেলের দাম কমাতে হবে নইলে যাত্রী ভাড়া বাড়াতে হবে।’

বিআইডব্লিউটিএ’র বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেন, ‘লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক আছে। তেলের দামের প্রভাব এখনো পড়েনি। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত