তরুণ চক্রবর্তী
নদী যেমন এক পাড় ভাঙে অন্য পাড় গড়ে, ঠিক তেমনি ভারতীয় রাজনীতিতে খরস্রোতা নদীর মতোই বিজেপি এখন বহমান। বেশির ভাগ রাজ্যে বিজেপি ভেঙে ছারখার করে দিচ্ছে শতাব্দীপ্রাচীন কংগ্রেস দলটিকে। নিয়ম করে ‘অসাম্প্রদায়িক’ কংগ্রেস নেতারা নাম লেখাচ্ছেন ‘সাম্প্রদায়িক’ বিজেপিতে। প্রায় গোটা দেশেই এক ছবি। কিন্তু ব্যতিক্রম পশ্চিমবঙ্গ। গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ভেঙে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হ্যাটট্রিকের পর ফের উল্টো স্রোত। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানের হিড়িক পড়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ছোটখাটো নেতারা তো বটেই, জাতীয় সংসদের ডাকাবুকো সদস্যরাও নাম লেখাচ্ছেন মমতার তৃণমূলে। মমতার ভাইপো, দলের সাধারণ সম্পাদক ও এমপি অভিষেক ব্যানার্জির তাই কটাক্ষ, ‘দলের দরজা খুলে দিলে রাজ্যে আর বিজেপি থাকবে না।’ যেভাবে দলবদল শুরু হয়েছে তাতে করে অভিষেকের কটাক্ষ পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু কেন এই উল্টো স্রোত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই বিজে-মূল কটাক্ষ শুরু করেছেন। তারই মধ্যে বেড়ে গিয়েছে বিচারব্যবস্থা ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতাও।
বিজেপির নির্বাচনী প্রতীক পদ্মফুল। আর ঘাসের আগায় জোড়া ফুল হচ্ছে তৃণমূলের নির্বাচনী প্রতীক। ইদানীং পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বিজেপির এক ফুলের বদলে তৃণমূলের জোড়াফুলের কদর কীভাবে বেড়ে গেল, তা নিয়ে নানা চর্চা শুরু হয়েছে। এই চর্চার মধ্যেই চলছে তৃণমূলের দাপুটে নেতা এবং মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর লাগাতার তদন্ত। এ ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের তৎপরতাও বেশ চোখে পড়ার মতো। ইতিমধ্যেই রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, এককালের বাম-নেতা পরেশ অধিকারীর মেয়ে অনুষ্কার শিক্ষকতার চাকরি চলে গিয়েছে উচ্চ আদালতের নির্দেশে। সাবেক শিক্ষা, বর্তমান শিল্পমন্ত্রী এবং তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রায়ই জেরা করছে সিবিআই। হাইকোর্টের নির্দেশ, প্রয়োজনে পার্থবাবুকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েও জেরা করবে। কয়লা পাচারের অভিযোগে মমতার ভাইপোকেও দিল্লিতে ডেকে জেরা করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। মমতার অভিযোগ, সবই হচ্ছে প্রতিহিংসার রাজনীতি। ভোটে হেরে গিয়ে তৃণমূলকে চমকে-ধমকে বাগে আনতে চাইছে বিজেপি। অন্যদিকে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা একসময়ের মমতার মন্ত্রিসভার সদস্য ‘দলবদলু’ শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তদন্তের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। চুরি করেছেন, তাই জেলে যাবেন তৃণমূলের নেতারা।
প্রকাশ্যে তৃণমূল বিজেপির সমালোচনা করে চলেছে। বিজেপিও তা-ই। এরই মধ্যে চলছে দলবদল। কিছুদিন আগেই যাঁরা তৃণমূলের বিরোধিতা করে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন, তাঁরাই এখন মমতা-অভিষেকের জয়গানে ব্যস্ত। তৃণমূল ক্ষমতায় আসতেই পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দলবদল করেন সপুত্র বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায়। তারপর সাবেক কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এমপিগিরি ছেড়ে নাম লেখান ঘাসফুল শিবিরে। তৃণমূল থেকে বিজেপি শিবিরে নাম লিখিয়েও ফিরে আসেন এমপি সুনীল মণ্ডল। সাবেক মন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জিও ফের তৃণমূলে। সম্প্রতি বাহুবলি সাংসদ অর্জুন সিং তৃণমূলে ফিরে আসার পর রাজ্য বিজেপিতে ত্রাহি ত্রাহি রব শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি এমনটা দাঁড়িয়েছে যে দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরাকে সংবাদ সম্মেলন করে জানাতে হচ্ছে যে তিনি এখনো বিজেপিতে আছেন। একই অবস্থা এমপি সৌমিত্র খাঁ ও লকেট চ্যাটার্জির। একঝাঁক বিধায়ক ইতিমধ্যেই তৃণমূলে চলে এসেছেন। অথচ ভারতের সর্বত্র উল্টো ছবি। কংগ্রেস ভেঙে বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপির পাশাপাশি আম আদমি পার্টি বা তৃণমূলে যেতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহের আমলে বিজেপি ছেড়ে অন্য দলে? নৈবচ নৈবচ!
কিন্তু কেন এই উল্টো স্রোত? এ নিয়ে নানামুনির নানা মত। পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস ও সিপিএম নেতাদের মতে, পুরোটাই নাকি গট-আপ! দিদি (মমতা)-মোদির নাকি গোপন সমঝোতা রয়েছে। সিবিআই তদন্ত করলেও তাই কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। দলবদলে আদর্শের নাকি কোনো বালাই নেই। বিজেপিকে নাকি পশ্চিমবঙ্গের বিনিময়ে অন্য রাজ্যে সুবিধা করে দিচ্ছে তৃণমূল। যেমন গোয়ায় কংগ্রেস ভেঙে বিজেপির রাস্তা পরিষ্কার করে দিয়েছে তৃণমূল। আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়েও তা-ই হয়েছে। কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল হয়েছেন নেতারা। বিরোধী ভোট ভাগ করে বিজেপির সুবিধা করে দিয়েছেন মমতা—এমনটাই অভিযোগ। একই অভিযোগ অবশ্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধেও রয়েছে। পাঞ্জাবে নিজেরা পারবে না জেনেই নাকি আম আদমি পার্টিকে মদদ জুগিয়েছে বিজেপি। এখনো রাজস্থান, ছত্তিশগড়, গুজরাটে কংগ্রেসের ভোট কাটতে নাকি ব্যবহৃত হচ্ছে তারা। সে যা-ই হোক, পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু বিজেপি ভাঙছেই। কিছুতেই সেই ভাঙন রুখতে পারছে না বা চাইছে না বিজেপি। আর সেটাই বড় রহস্যজনক লাগছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। তৃণমূল নেতারা অবশ্য বিজেপির সমালোচনায় ব্যস্ত। তাঁদের আশা, ২০২৪ সালে মমতাকেই দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করবেন।
২০২৪-এ লোকসভার সাধারণ নির্বাচন। তবে এখন থেকেই শাসক দল বিজেপি থেকে শুরু করে সবাই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। ভারতের ৫৩৪টি আসনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের আসন ৪২টি। গতবার এই ৪২টির মধ্যে তৃণমূল ২২, বিজেপি ১৮ এবং কংগ্রেস ২টি আসনে জিতেছিল। বামপন্থীরা একটি আসনও পায়নি। কিন্তু বিধানসভা ভোটের পর বিজেপিতে যে ভাঙন লক্ষ করা যাচ্ছে, তাতে করে এবার তাদের আসন কমার আশঙ্কাই বেশি। সে ক্ষেত্রে তৃণমূলের আসনই বাড়বে। প্রশ্ন হচ্ছে, জাতীয় সংসদে তৃণমূল সে ক্ষেত্রে কী ভূমিকা নেবে? অতীতে তৃণমূলকে বিজেপির সঙ্গে একাধিকবার সরকারে যেতে দেখা গেছে। কংগ্রেসের সঙ্গেও সরকার গড়েছে তারা। তবে দুটি ক্ষেত্রেই সমর্থন তুলে নেওয়ার রেকর্ডও তাদের রয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম ভোটারদের কথা মাথায় রেখে নির্বাচনের আগে মমতা কখনো বিজেপির সঙ্গে সখ্য করতে পারবেন না। অথচ দিল্লির এই হিন্দুত্ববাদী শাসক দলের সঙ্গে গোপন সমঝোতা তাদের রাখতেই হবে। এটা ভারতীয় রাজনীতির চুনোপুঁটিরাও বুঝতে পারছেন। তাই সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের বিশ্বাসযোগ্যতা আরও কমছে। এবার আবার মমতার নিজেরই প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারের দিকে নজর পড়েছে। তাই আরও রহস্যজনক চেহারা নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য-রাজনীতি। রহস্য নেই যে বিষয়ে সেটি হলো, অবাধ দলবদলে প্রমাণিত রাজনীতিতে নীতি বা আদর্শের বালাই দ্রুতগতিতে কমছে।
লেখক: তরুণ চক্রবর্তী ,কলকাতা প্রতিনিধি, আজকের পত্রিকা
নদী যেমন এক পাড় ভাঙে অন্য পাড় গড়ে, ঠিক তেমনি ভারতীয় রাজনীতিতে খরস্রোতা নদীর মতোই বিজেপি এখন বহমান। বেশির ভাগ রাজ্যে বিজেপি ভেঙে ছারখার করে দিচ্ছে শতাব্দীপ্রাচীন কংগ্রেস দলটিকে। নিয়ম করে ‘অসাম্প্রদায়িক’ কংগ্রেস নেতারা নাম লেখাচ্ছেন ‘সাম্প্রদায়িক’ বিজেপিতে। প্রায় গোটা দেশেই এক ছবি। কিন্তু ব্যতিক্রম পশ্চিমবঙ্গ। গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ভেঙে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হ্যাটট্রিকের পর ফের উল্টো স্রোত। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানের হিড়িক পড়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ছোটখাটো নেতারা তো বটেই, জাতীয় সংসদের ডাকাবুকো সদস্যরাও নাম লেখাচ্ছেন মমতার তৃণমূলে। মমতার ভাইপো, দলের সাধারণ সম্পাদক ও এমপি অভিষেক ব্যানার্জির তাই কটাক্ষ, ‘দলের দরজা খুলে দিলে রাজ্যে আর বিজেপি থাকবে না।’ যেভাবে দলবদল শুরু হয়েছে তাতে করে অভিষেকের কটাক্ষ পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু কেন এই উল্টো স্রোত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই বিজে-মূল কটাক্ষ শুরু করেছেন। তারই মধ্যে বেড়ে গিয়েছে বিচারব্যবস্থা ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতাও।
বিজেপির নির্বাচনী প্রতীক পদ্মফুল। আর ঘাসের আগায় জোড়া ফুল হচ্ছে তৃণমূলের নির্বাচনী প্রতীক। ইদানীং পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বিজেপির এক ফুলের বদলে তৃণমূলের জোড়াফুলের কদর কীভাবে বেড়ে গেল, তা নিয়ে নানা চর্চা শুরু হয়েছে। এই চর্চার মধ্যেই চলছে তৃণমূলের দাপুটে নেতা এবং মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর লাগাতার তদন্ত। এ ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের তৎপরতাও বেশ চোখে পড়ার মতো। ইতিমধ্যেই রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, এককালের বাম-নেতা পরেশ অধিকারীর মেয়ে অনুষ্কার শিক্ষকতার চাকরি চলে গিয়েছে উচ্চ আদালতের নির্দেশে। সাবেক শিক্ষা, বর্তমান শিল্পমন্ত্রী এবং তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রায়ই জেরা করছে সিবিআই। হাইকোর্টের নির্দেশ, প্রয়োজনে পার্থবাবুকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েও জেরা করবে। কয়লা পাচারের অভিযোগে মমতার ভাইপোকেও দিল্লিতে ডেকে জেরা করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। মমতার অভিযোগ, সবই হচ্ছে প্রতিহিংসার রাজনীতি। ভোটে হেরে গিয়ে তৃণমূলকে চমকে-ধমকে বাগে আনতে চাইছে বিজেপি। অন্যদিকে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা একসময়ের মমতার মন্ত্রিসভার সদস্য ‘দলবদলু’ শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তদন্তের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। চুরি করেছেন, তাই জেলে যাবেন তৃণমূলের নেতারা।
প্রকাশ্যে তৃণমূল বিজেপির সমালোচনা করে চলেছে। বিজেপিও তা-ই। এরই মধ্যে চলছে দলবদল। কিছুদিন আগেই যাঁরা তৃণমূলের বিরোধিতা করে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন, তাঁরাই এখন মমতা-অভিষেকের জয়গানে ব্যস্ত। তৃণমূল ক্ষমতায় আসতেই পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দলবদল করেন সপুত্র বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায়। তারপর সাবেক কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এমপিগিরি ছেড়ে নাম লেখান ঘাসফুল শিবিরে। তৃণমূল থেকে বিজেপি শিবিরে নাম লিখিয়েও ফিরে আসেন এমপি সুনীল মণ্ডল। সাবেক মন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জিও ফের তৃণমূলে। সম্প্রতি বাহুবলি সাংসদ অর্জুন সিং তৃণমূলে ফিরে আসার পর রাজ্য বিজেপিতে ত্রাহি ত্রাহি রব শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি এমনটা দাঁড়িয়েছে যে দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরাকে সংবাদ সম্মেলন করে জানাতে হচ্ছে যে তিনি এখনো বিজেপিতে আছেন। একই অবস্থা এমপি সৌমিত্র খাঁ ও লকেট চ্যাটার্জির। একঝাঁক বিধায়ক ইতিমধ্যেই তৃণমূলে চলে এসেছেন। অথচ ভারতের সর্বত্র উল্টো ছবি। কংগ্রেস ভেঙে বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপির পাশাপাশি আম আদমি পার্টি বা তৃণমূলে যেতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহের আমলে বিজেপি ছেড়ে অন্য দলে? নৈবচ নৈবচ!
কিন্তু কেন এই উল্টো স্রোত? এ নিয়ে নানামুনির নানা মত। পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস ও সিপিএম নেতাদের মতে, পুরোটাই নাকি গট-আপ! দিদি (মমতা)-মোদির নাকি গোপন সমঝোতা রয়েছে। সিবিআই তদন্ত করলেও তাই কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। দলবদলে আদর্শের নাকি কোনো বালাই নেই। বিজেপিকে নাকি পশ্চিমবঙ্গের বিনিময়ে অন্য রাজ্যে সুবিধা করে দিচ্ছে তৃণমূল। যেমন গোয়ায় কংগ্রেস ভেঙে বিজেপির রাস্তা পরিষ্কার করে দিয়েছে তৃণমূল। আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়েও তা-ই হয়েছে। কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল হয়েছেন নেতারা। বিরোধী ভোট ভাগ করে বিজেপির সুবিধা করে দিয়েছেন মমতা—এমনটাই অভিযোগ। একই অভিযোগ অবশ্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধেও রয়েছে। পাঞ্জাবে নিজেরা পারবে না জেনেই নাকি আম আদমি পার্টিকে মদদ জুগিয়েছে বিজেপি। এখনো রাজস্থান, ছত্তিশগড়, গুজরাটে কংগ্রেসের ভোট কাটতে নাকি ব্যবহৃত হচ্ছে তারা। সে যা-ই হোক, পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু বিজেপি ভাঙছেই। কিছুতেই সেই ভাঙন রুখতে পারছে না বা চাইছে না বিজেপি। আর সেটাই বড় রহস্যজনক লাগছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। তৃণমূল নেতারা অবশ্য বিজেপির সমালোচনায় ব্যস্ত। তাঁদের আশা, ২০২৪ সালে মমতাকেই দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করবেন।
২০২৪-এ লোকসভার সাধারণ নির্বাচন। তবে এখন থেকেই শাসক দল বিজেপি থেকে শুরু করে সবাই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। ভারতের ৫৩৪টি আসনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের আসন ৪২টি। গতবার এই ৪২টির মধ্যে তৃণমূল ২২, বিজেপি ১৮ এবং কংগ্রেস ২টি আসনে জিতেছিল। বামপন্থীরা একটি আসনও পায়নি। কিন্তু বিধানসভা ভোটের পর বিজেপিতে যে ভাঙন লক্ষ করা যাচ্ছে, তাতে করে এবার তাদের আসন কমার আশঙ্কাই বেশি। সে ক্ষেত্রে তৃণমূলের আসনই বাড়বে। প্রশ্ন হচ্ছে, জাতীয় সংসদে তৃণমূল সে ক্ষেত্রে কী ভূমিকা নেবে? অতীতে তৃণমূলকে বিজেপির সঙ্গে একাধিকবার সরকারে যেতে দেখা গেছে। কংগ্রেসের সঙ্গেও সরকার গড়েছে তারা। তবে দুটি ক্ষেত্রেই সমর্থন তুলে নেওয়ার রেকর্ডও তাদের রয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম ভোটারদের কথা মাথায় রেখে নির্বাচনের আগে মমতা কখনো বিজেপির সঙ্গে সখ্য করতে পারবেন না। অথচ দিল্লির এই হিন্দুত্ববাদী শাসক দলের সঙ্গে গোপন সমঝোতা তাদের রাখতেই হবে। এটা ভারতীয় রাজনীতির চুনোপুঁটিরাও বুঝতে পারছেন। তাই সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের বিশ্বাসযোগ্যতা আরও কমছে। এবার আবার মমতার নিজেরই প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারের দিকে নজর পড়েছে। তাই আরও রহস্যজনক চেহারা নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য-রাজনীতি। রহস্য নেই যে বিষয়ে সেটি হলো, অবাধ দলবদলে প্রমাণিত রাজনীতিতে নীতি বা আদর্শের বালাই দ্রুতগতিতে কমছে।
লেখক: তরুণ চক্রবর্তী ,কলকাতা প্রতিনিধি, আজকের পত্রিকা
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১৭ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫