কাশিয়ানীতে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ

দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে কাশিয়ানী উপজেলার ৬নম্বর রাতইল ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের ভোটকেন্দ্র দখল এবং ব্যালট পেপারে সিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।

তবে কাশিয়ানী উপজেলার অন্য সব ভোট কেন্দ্রে সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন সাধারণ ভোটাররা। সকালের দিকে নারীদের তুলনায় পুরুষ ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রগুলোতে বাড়তে থাকে ভোটারদের সংখ্যা। সকাল ৮টা থেকে ১২৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাররা সুশৃঙ্খলভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোট গ্রহণ শেষ হয় বিকেল ৪ টায়।

১৪টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৬২ জন প্রার্থী। সাধারণ সদস্য পদে ৪০৩ এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১২৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। উপজেলায় মোট ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৭৬ হাজার ৮০১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৮ হাজার ২৭৭জন এবং নারী ভোটারের সংখ্যা ৮৮ হাজার ৫২৪ জন। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরে আনন্দিত তাঁদের অনেকে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী থাকলেও বাকি ৭টিতে উন্মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে র‍্যাব পুলিশ,বিজিবি ও আনসার সদস্যরা একযোগে কাজ করেছেন।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাশিয়ানী উপজেলার ৬নম্বর রাতইল ইউপিতে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বি এম হারুন অর রশিদ পিনুর একদল সমর্থক অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে ভোট কেন্দ্র দখল করে ব্যালটে সিল মারা শুরু করে। এ সময় ব্যালটে সিল মারতে বাঁধা দিলে দায়িত্বরত দুই পুলিশ সদস্য মোহাম্মদ হোসাইন ও সুলাইমানকে মারধর করে আহত করে তাঁরা। এ সময় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারকে এবং ছবি তুলতে গেলে দুই সাংবাদিককেও লাঞ্ছিত করা হয়। পরে খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন্দ্রে এসে লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ওই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।

রাতইল ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থী বি এম হারুন অর রশিদ পিনুর সমর্থকেরা ভোট কেন্দ্র দখল করে ব্যালটে সিল মারতে থাকে। এ সময় বাঁধা দিতে গিলে তার সমর্থকেরা পুলিশের পাশাপাশি আমার ওপরও হামলা চালায়।’

ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সেলিম সরদার বলেন, বেলা ১২ টার দিকে কিছু লোকজন এসে কেন্দ্র দখল করে। এ সময় তারা ১৫০টি ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেয়। এর মধ্যে ১শ ব্যালটে সিল দিয়ে ব্যালট বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়। বাকি ৫০ টি ব্যালট ঢোকাতে ব্যর্থ হয়। আমরা বাধা দিতে গেলে আমাদের ওপর হামলা করে। এ সময় কর্তব্যরত পুলিশ এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা চালায় নৌকার সমর্থকেরা। পরে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে দেওয়া হয়।’

এদিকে কাশিয়ানী সদর ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে কাশিয়ানী সদর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মশিউর রহমান খানকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটকের এক ঘণ্টা পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রথীন্দ্র নাথ রায় বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মশিউর রহমান খানকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।