Ajker Patrika

হোক না একটি সংলাপ

সম্পাদকীয়
হোক না একটি সংলাপ

দেশের প্রধান দুটি দলের নেতারা প্রতিদিন বাহাস করছেন। একজন যে কথা বলছেন, অন্যজন তার জবাব দিচ্ছেন। কোনো কোনো নেতার তো যেন প্রধান কাজই হলো পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেওয়া।  বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যা বলেন তার জবাব আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তো দেনই, অন্য নেতারাও সুযোগ পেলে ছাড়েন না। সর্বশেষ দেখা গেল মির্জা ফখরুলের একটি বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।

সোমবার বিএনপির মহাসচিব বলেন, দাবি মেনে পদত্যাগ না করলে আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না। মঙ্গলবার কৃষক লীগের এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কথার জবাবে বলেন, ‘যিনি এ বক্তৃতা দেন, তাঁকে স্মরণ করাতে চাই, শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ কোনো দিন পালায় না, পালাই নাই।‘ প্রধানমন্ত্রী উল্টো বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক জিয়া আর রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়ে ২০০৭  সালে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনা প্রশ্ন রেখেছেন, এক পলাতক আসামির তত্ত্বাবধানে এত লম্বা কথাটা আসে কোথা থেকে?

বিএনপির মহাসচিব বা বিএনপির পক্ষ থেকে আর কেউ হয়তো এর পাল্টা বক্তব্যও দেবেন, আবার না-ও দিতে পারেন। তবে এ প্রসঙ্গে আমাদের কথা হলো, এই যে বাইরে বাইরে বা দূরে দূরে আপনারা পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছেন, তা না করে বসুন না এক টেবিলে। এ কথাগুলোই বলুন না মুখোমুখি বসে, চোখে চোখ রেখে। দেখবেন, একটি উপায় বেরিয়ে যাবেই। চোখে চোখ রেখে নাকি অসত্য কথা বেশিক্ষণ বলা যায় না।

এখন পর্যন্ত এমন কোনো লক্ষণ নেই, যা থেকে বলা যায়, দুই দল আলোচনায় বসতে চায়; বরং বাস্তবে এটাই দেখা যাচ্ছে যে মাঠে উভয় পক্ষের শক্তি দেখাতে গিয়ে সংঘাত-সংঘর্ষের আশঙ্কা বাড়ছে। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকছে না। শুধু রাজধানী ঢাকায় নয়, জেলা-উপজেলায়ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। হামলা-মামলার ঘটনা যত বাড়বে, ততই পরিস্থিতি হয়তো নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবে। তখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানই অসম্ভব হয়ে পড়বে।

এর মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর এক টেবিলে বসা উচিত। একসঙ্গে চা খাওয়া উচিত। তারপর আলোচনা করে, এই সংকটগুলো নিরসনের চেষ্টা করা উচিত।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার আলোচনায় বসার কথা বলেছেন, তাঁর সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বৈঠকের পর। পিটার হাস বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হোক, তার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ দেখিয়ে আসছে। আমাদের নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের নাক গলানোটা ভালো নয়। তাই আমরা চাইব, বিদেশিদের পরামর্শ বা উপদেশের ওপর ভর না করে আমাদের রাজনৈতিক নেতারা নিজেরা শুভবুদ্ধির পরিচয় দেবেন এবং রাজপথে ফয়সালার নীতি পরিহার করে আলোচনার টেবিলে বসবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত