Ajker Patrika

খানিক আশার আলো

জাহীদ রেজা নূর
খানিক আশার আলো

২২ মার্চ মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠকে ভুট্টো উপস্থিত ছিলেন। এ বৈঠক চলে ৭০ মিনিট। তাতে মনে হয় বরফ গলছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং ভুট্টো ‘আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন। চার দফা পূর্বশর্ত পূরণ না হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেবে না বলে ঘোষণা করে। এ ব্যাপারে শেখ মুজিবুর রহমান যে আপসহীন ভূমিকা গ্রহণ করেছেন, তাতে ইয়াহিয়া এবং ভুট্টো উভয়েই তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েছেন বলে অনুমান করা হয়। এই অনুমানের কারণ, সামরিক আইন প্রত্যাহার ও গণপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরসহ বঙ্গবন্ধুর দাবি পূরণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভুট্টোর উপস্থিতিতে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠককালে এদিন প্রেসিডেন্ট জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। 

প্রেসিডেন্ট ভবনের আশপাশে এদিন কড়া পাহারা ছিল। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে নির্ধারিত আলোচনা শেষে নিজ বাসভবনে ফিরে শেখ মুজিব সাংবাদিকদের কাছে আভাস দেন যে, আলোচনায় আরও অগ্রগতি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠকে মিলিত হয়েছি। জনাব ভুট্টো সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর উপস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট আমাকে জানান যে, তাঁর সঙ্গে আমার যেসব আলোচনা হয়েছে, তা তিনি ভুট্টো সাহেবকে অবহিত করেছেন এবং এ ব্যাপারে ভুট্টোর সঙ্গে আলাপ করেছেন। আমি এর চেয়ে বেশি কিছু এ মুহূর্তে বলতে চাই না।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের একুশতম দিবসে বিক্ষুব্ধ মানুষের সভা-শোভাযাত্রা এবং গগনবিদারী ধ্বনিতে ঢাকা মহানগরী প্রকম্পিত থাকে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারা দিন রাজধানীর রাজপথে অবিচ্ছিন্ন মিছিলের স্রোত আর স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার বলিষ্ঠ শপথের বজ্রনির্ঘোষ ধ্বনি-প্রতিধ্বনিত হতে থাকে।

সকালের দিকে স্কুল ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ এবং সিদ্ধিরগঞ্জের হকার কর্মচারীদের এক যৌথ মিছিল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। একটি দীর্ঘ মিছিলে ভুট্টোর কুশপুত্তলিকা বহন করা হয় এবং কুশপুত্তলিকাটি মিছিলকারীরা হাতের বর্শা দিয়ে আঘাত করে ছিন্নভিন্ন করে ফেলেন।

কচিকাঁচার মেলার বিভিন্ন শাখা বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল বের করে। নীল টুপি পরিহিত লাঠিধারী কচিকাঁচাদের এই অপূর্ব মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শপথ গ্রহণ এবং দেশাত্মবোধক সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে। বাংলাদেশ খ্রিষ্টীয় পরিষদের এক সভায় বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করা হয়। বিমান এবং স্থলবাহিনীর সাবেক সৈনিকেরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মসূচিকে সর্বাত্মকভাবে সফল করে তোলার জন্য সোমবার শপথ গ্রহণ করেন। এদিন বিকেলে বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে আয়োজিত বিমান এবং স্থলবাহিনীর সাবেক সৈনিকদের সম্মিলিত সমাবেশ থেকে বাংলাদেশের সব অবসরপ্রাপ্ত সৈনিককে নিজ নিজ এলাকায় আওয়ামী লীগ সংগ্রাম পরিষদ এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সহযোগিতা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অহিংস অসহযোগ আন্দোলনকে সফল করে তোলার ব্যাপারে আত্মনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

গ্রন্থনা: জাহীদ রেজা নূর

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: ফেসবুকে বাকের মজুমদার

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

যুদ্ধ বলিউডের সিনেমা নয়: ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান

রাজপথের চাপে কোনো বিচার করা সম্ভব নয়: চিফ প্রসিকিউটর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত