Ajker Patrika

নয়নাভিরাম হামহাম ঝরনা

মাহিদুল ইসলাম, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১৯: ১৮
নয়নাভিরাম হামহাম ঝরনা

হামহাম জলপ্রপাত। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি। প্রতিবছর অসংখ্য দর্শনার্থী ভিড় করেন হামহাম জলপ্রপাতের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে। তবে হামহাম জলপ্রপাত দেখতে দর্শনার্থীদের পোহাতে হয় ভোগান্তি। সরাসরি যাতায়াত সুবিধা নেই। সরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়নি কোনো অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থা।

স্থানীয় প্রশাসন বলছে, সরকারি বরাদ্দ পর্যাপ্ত না হওয়ায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন অবকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশেকুল হক বলেন, ‘হামহাম জলপ্রপাতে পর্যটকের আকর্ষণ বাড়াতে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে অবকাঠামো এবং যোগাযোগের সুবিধা বাড়াতে কাজ করা হচ্ছে। তবে পর্যটনকেন্দ্রের উন্নয়নে সরকার যে বরাদ্দ দেয়, তা যথেষ্ট নয়। পর্যটনশিল্পের টেকসই উন্নয়নে সরকারি ও ব্যক্তিসহযোগিতা বাড়ানো প্রয়োজন।’

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বনবিট এলাকায় হামহাম জলপ্রপাত। এটিই দেশের অন্যতম জলপ্রপাত। এই জলপ্রপাতটি প্রায় ৩০ ফুট প্রশস্ত। উচ্চতা প্রায় ১৩৫ ফুট। সারা বছরই এই জলপ্রপাত থেকে পানি পড়ে। তবে বর্ষা মৌসুমে জলপ্রপাতটি নতুন করে যৌবন ফিরে পায়। এই সময় ঝরনার গতি বৃদ্ধি পায়। শীতে গতি একটু কমে।

স্থানীয় উপজাতিদের ভাষায় ‘হামহাম’ শব্দের অর্থ প্রবল বেগে পানি পড়ার শব্দ। প্রবল বেগে পানি পতিত হয় বলে এই জলপ্রপাতের নাম হামহাম জলপ্রপাত। তবে ভিন্ন মতও আছে। ‘হাম্মাম’ (গোসলখানা) শব্দ থেকে ‘হামহাম’ শব্দটি এসেছে বলে অনেকেই ধারণা করেন।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে রাজকান্দি রেঞ্জের কুরমা বনবিট এলাকার পশ্চিম দিকে চম্পারায় চা-বাগান। এই কুরমা বনবিটের প্রায় আট কিলোমিটার ভেতরে দৃষ্টিনন্দন এই হামহাম জলপ্রপাত। এটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যসীমান্তে অবস্থিত। এখানে সরাসরি পৌঁছানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। উপজেলা চৌমুহনা থেকে কুরমা চেকপোস্ট পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার যান চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে। বাকি পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ হেঁটে যেতে হয়। এ সময় চোখ পড়বে চা-বাগানের অপূর্ব দৃশ্যে। জলপ্রপাত দেখতে হলে তৈলংবাড়ি বা কলাবন বস্তির আদিবাসীদের সাহায্য নিতে হয়। পাহাড়ের আঁকাবাঁকা, উঁচু-নিচু পথে চলা খুবই কষ্টের। সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করতে হয়। যাওয়ার পথে দেখা মিলবে চশমা বানরের। হামহাম যাওয়ার পথে মাকাম পাহাড়ের দেখা মেলে। হেঁটে জলপ্রপাতটিতে পৌঁছাতে প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় লাগে। দিন দিন এই জলপ্রপাত দেখতে পর্যটক বাড়ছে।

হামহাম জলপ্রপাতে আসা সাঈদুল ইসলাম বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন স্থান। অনেক কষ্ট করে এখানে এসেছি। তবে ঝরনার পানিতে গোসল করে যেন সব কষ্ট দূর হয়েছে। আসার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে ও রেস্ট হাউস থাকলে পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত