Ajker Patrika

এক দফার ‘চ্যালেঞ্জিং লড়াইয়ে’ ভুল না করতে সতর্ক বিএনপি

রেজা করিম, ঢাকা
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৩, ১১: ১২
এক দফার ‘চ্যালেঞ্জিং লড়াইয়ে’ ভুল না করতে সতর্ক বিএনপি

শুধু সরকারের পতন নয়, বিএনপির জন্য যেন বাঁচা-মরার লড়াইও হতে চলেছে এক দফার আন্দোলন। যেকোনো মূল্যে এই আন্দোলনের সফল পরিণতি চায় দলটি। এ নিয়ে সুচিন্তিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শেষ সময়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত রয়েছে তারা।

আন্দোলনের কৌশল ও কর্মসূচির ধরন নিয়ে দলীয় ফোরামের পাশাপাশি আলোচনা করছে শরিক ও সমমনাদের সঙ্গেও। শেষ সময়ে এসে আর কোনো ভুল করতে চায় না তারা। যদিও লক্ষ্যপূরণের পথে রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ।

কাল ১২ জুলাই বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সানে সমাবেশ করবে বিএনপি। সমাবেশ করার বিষয়ে গতকাল সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মৌখিক আশ্বাসও পেয়েছে দলটি। ওই সমাবেশ থেকে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে এক দফা ও রাষ্ট্র সংস্কারের যৌথ রূপরেখা ঘোষণা করা হবে। এদিন নিজ নিজ জায়গা থেকে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকেরাও একই দাবি ও কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

দলীয় সূত্র বলছে, গত শনিবার রাতে বৈঠক করে এক দফার ঘোষণা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। এর আগে থেকেই চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে সমমনা দল ও জোটগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। এর অংশ হিসেবে গতকালও গণতন্ত্র মঞ্চ, গণ অধিকার পরিষদ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ও লেবার পার্টির সঙ্গে বৈঠক হয়।

গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের গন্তব্যস্থল একটাই—সরকারের পতন। সরকারের পতনের পরে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সংসদ হবে, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেই ভিত্তির ওপরেই আমাদের যৌথ ঘোষণা আসবে।’

যৌথ ঘোষণার বিষয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘চলমান আন্দোলনকে নতুন পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য বিএনপিসহ যুগপৎ শরিকেরা নিজ নিজ জায়গা থেকে এই ঘোষণা জনগণের সামনে তুলে ধরবে।’

এক দফা আন্দোলনের বিষয়ে বিএনপি ও তাদের শরিক দলগুলোর নেতারা বলছেন, বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) তথ্যানুসন্ধানী মিশন ঢাকায় আছে। সামনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলও আসছে। এই সময়কেই এক দফার মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণার জন্য মোক্ষম সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। তাঁরা বলছেন, এবার আন্দোলন সফল করতে না পারলে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। দেশের গণতন্ত্র আরও হুমকির সম্মুখীন হবে। কাজেই এই আন্দোলনের সফলতার বিকল্প কিছু ভাবার অবকাশ নেই।’

এই লক্ষ্য এক দফার আন্দোলনে যাওয়ার আগে ১২ জুলাইয়ের সমাবেশ সফল করতে নানা প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। ওই সমাবেশে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি জনগণের বড় ধরনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কাজ চলছে। রাজধানীর অনেক এলাকায় সমাবেশকে কেন্দ্র করে মাইকিং করা হচ্ছে, যা আগে দেখা যায়নি। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে আশপাশের জেলাগুলো থেকে বিপুলসংখ্যক লোক জমায়েতের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সমাবেশ সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিটগুলোকে এ বিষয়ে গুরুত্বসহকারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সমাবেশে বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হবে বলে প্রত্যাশা করছি।’

গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ১২ জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে নতুন ঘোষণা আসবে। ওই ঘোষণার মধ্য দিয়ে আন্দোলনের নতুন যাত্রা শুরু হবে।

আছে নানা চ্যালেঞ্জ
এক দফার আন্দোলনকে ঘিরে গ্রেপ্তার ও মামলা-হামলার পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও চোখ রাঙাচ্ছে বিএনপিকে। দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলছেন, বিএনপির চূড়ান্ত পর্যায়ের আন্দোলনকে টার্গেট করে ক্ষমতাসীনেরা অবশ্যই মাস্টারপ্ল্যান করে রেখেছে।

এক দফার আন্দোলনের কর্মসূচি পালন শুরু হলেই তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করবে। মামলা-হামলা ও গ্রেপ্তার বাড়িয়ে দেবে, নির্যাতন-নিপীড়নের মাত্রা বাড়াবে, কোনো সন্দেহ নেই। আবার পুরোনো কায়দায় বিএনপি ও সমমনা দলগুলোকে প্রলোভনও দেখাবে। এতে করে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বিশ্বাসঘাতকতার ঘটনাও ঘটতে পারে। একই সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংস রূপ দিতে সরকারের তরফ থেকে আসতে পারে নানা উসকানিও। তবে এসব বিষয়ে এবার খুব সতর্ক আছে দলের হাইকমান্ড।

ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের হাতে সময় কম। সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে আমরা রাজপথে থাকব। ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা সশস্ত্রভাবে আমাদের ওপর হামলা করছে প্রায়ই। ভবিষ্যতেও হয়তো তারা এমনই করবে। যেহেতু আমরা যুদ্ধে নেমেছি, সেই যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য যা যা করা দরকার, পরিস্থিতি অনুযায়ী সেটাই করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দাম্পত্য কলহের গুঞ্জন, মুখ খুললেন জাহিদ হাসান

অবশেষে ইকবালের পরিবারমুক্ত হলো প্রিমিয়ার ব্যাংক

‘হেল্প, হেল্প’ বলে চিৎকার—শিক্ষক এগিয়ে যেতেই গলায় ছুরি চালাল কিশোরী

শিশুদের জন্য বিনা মূল্যে টাইফয়েডের টিকা, যেভাবে রেজিস্ট্রেশন করবেন

‘আপত্তিকর’ ভিডিও: বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠালেন গভর্নর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত