Ajker Patrika

‘সরল বিশ্বাসে’ জমি কিনে প্রতারিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২২, ১৭: ৩০
‘সরল বিশ্বাসে’ জমি কিনে প্রতারিত

ঢাকার সাভারের ব্যাংক কলোনিতে ছোট বলিমেহের মৌজায় বেদখল হয়ে যাওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জমি উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি পাকা স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন পাউবো সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল সকাল ১০টার দিকে এক্সকাভেটরের সাহায্যে তিন তলা ভবন ভাঙার মধ্য দিয়ে অভিযান শুরু করা হয়। ভবনটির সামনে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের নির্দেশনার নোটিশ ঝোলানো ছিল। তবে যাচাইয়ে তা ভুয়া প্রমাণিত হওয়ার পর ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় মালিক বা তাঁর পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। কোনো ভাড়াটেও ছিলেন না।

ওই ভবনের কয়েক গজ দূরে সাভার দারুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা। প্রায় ৫০ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত মাদ্রাসাটির একটি পাকা ভবনসহ একাধিক আধা পাকা ভবন রয়েছে, যার একটিও ভাঙা হয়নি। মাদ্রাসা সরিয়ে নেওয়ার শর্তে তাঁদের কয়েক দিন সময় দেওয়া হয়েছে বলে পাউবোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ ফেরদৌস মাহমুদ বলেন, তাঁরা ২০১৯ সালে তিন ব্যক্তির কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা দাম ধরে ৪১ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন। গত তিন বছরে তাঁরা ৪১ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। জমির মালিকানাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে সাফ কবলা করা সম্ভব না হওয়ায় তাঁরা বাকি টাকা পরিশোধ করেননি। তবে জমি দখলে নিয়ে ওই বছরই মাদ্রাসার কার্যক্রম শুরু করেছেন।

জমি নিবন্ধন না করে বা জমির মালিকানা নিয়ে জটিলতা আছে—এমন তথ্য জানার পরেও মাদ্রাসার মতো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্থাপনা নির্মাণ করার কারণ জানতে চাইলে ফেরদৌস মাহমুদ বলেন, ‘আমরা যাঁদের কাছ থেকে জমিটা বায়না করেছিলাম, তাঁরা আমাদের আত্মীয়। তাই এত কিছু খতিয়ে দেখিনি।’

একইভাবে সরল বিশ্বাসে জমি কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আলমগীর হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বছরখানেক আগে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর কাছ থেকে পাউবোর বেদখল হওয়া আট শতাংশ জমি কেনেন। তবে জমির দলিল দেখাতে না পারায় গতকাল তাঁর আধা পাকা বাড়িটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

শুধু এ দুই ঘটনা নয়, স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী পাউবোর জমি দখল করে ভুয়া দলিল ও কাগজপত্রের মাধ্যমে তা বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রভাবশালী এ চক্র ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও যাঁরা না বুঝে ওই জমি কিনেছেন তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

পাউবো ঢাকার নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আইনুল হক বলেন, সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের অভিযান চলবে। স্থাপনা উচ্ছেদের পর ওই জমিতে পাউবোর দপ্তর ও কলোনি করা হবে।

যেসব স্থাপনা উচ্ছেদে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ওইসব স্থাপনার বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে? জানতে চাইলে দেওয়ান আইনুল হক বলেন, আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে এসব দখলদারকে উচ্ছেদ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত