Ajker Patrika

রাজধানীর ঈদের বাজারে বৈশাখী কেনাকাটায় ভাটা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানীর ঈদের বাজারে বৈশাখী কেনাকাটায় ভাটা

লাল, সাদা আর জলপাইরঙা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে মাটির গয়না খুঁজছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী মেহনাজ করিম। কিন্তু বিভিন্ন ধাতব অলংকারের ভিড়ে মাটির গয়না কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। অথচ ক্লাস সিক্সে পড়ুয়া ভাগনির আবদার—মাটির গয়নাই লাগবে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মৌচাক মার্কেটে কথা হয় মেহনাজের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পয়লা বৈশাখের মাসখানেক আগে থেকেই এসব দোকানে মাটির গয়না পাওয়া যায়। কিন্তু এবার আর পাচ্ছি না। ঈদের বাজারে পয়লা বৈশাখের আমেজটা একটু কমই মনে হচ্ছে।’ বৈশাখে সাধারণত নিজের জন্য শাড়ি কেনেন মেহনাজ। এবার ঈদের কারণে তা আর হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

এ বছর ঈদের পরপরই বাংলা নববর্ষ। বৈশাখের প্রথম দিনটা গ্রামের বাড়িতে কাটাবে অধিকাংশ মানুষ। ফলে নববর্ষ উদ্‌যাপনের যে শহুরে আয়োজন, তা এবার খুব একটা জমছে না বলে ধারণা করা যায়। কেনাকাটায়ও এর ছাপ পড়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তাঁরা বলছেন, ঈদের সঙ্গে মিলিয়ে বৈশাখের কেনাকাটা চলছে টুকটাক। তবে দুই উৎসব কাছাকাছি সময়ে হওয়ায় বৈশাখী আয়োজনে এবার ভাটার টান। বাজেট কাটছাঁট করতে অনেকে এবার বৈশাখের কেনাকাটা বাদ দিচ্ছেন।

রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেটের উৎসব ফ্যাশনের বিক্রেতা মোহাম্মদ মুসা বলেন, বৈশাখের পোশাকের কেনাকাটা এবার কম। ঈদেরটা চলছে মোটামুটি।

পোশাক ব্যবসায়ী ও ফ্যাশন ডিজাইনাররা জানান, ঈদ এবং বৈশাখী আয়োজনে রং আর নকশায় কিছু ভিন্নতা থাকে। দুটি উৎসব পাশাপাশি হওয়ায় এবার ঈদকে প্রাধান্য দিয়েই পোশাকের নকশা করা হয়েছে ৷ আর বৈশাখের পোশাক এসেছে খুবই কম। কিছু কিছু ফ্যাশন হাউস আবার বৈশাখের পোশাক আনেইনি।

ফ্যাশন হাউস আবির্ভাবের কর্ণধার শিশির কুমার হাজরা বলেন, ‘এবার বৈশাখে নতুন তেমন কিছু আনছি না। ঈদের পর অনেকে ঢাকার বাইরে থাকবেন। তাই বৈশাখের পোশাকের ক্রেতা কম। তবে একেবারেই বিক্রি হচ্ছে না, তা বলা যাবে না। ঈদের সঙ্গে হালকা চালে বৈশাখের কেনাকাটাও চলছে।’

ঈদ বলে বৈশাখ একেবারে উদ্‌যাপন করা হবে না, তা কী করে হয়! এ জন্য অনেক ক্রেতা এমন পোশাক কিনছেন, যেটা ঈদ ও পয়লা বৈশাখ—দুটি উৎসবেই পরা যায়। রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মলে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, এবার সুতি কাপড়ের ওপর ব্লকের বা হাতের কাজের পাঞ্জাবি কেনার ইচ্ছা। ঈদ ও পয়লা বৈশাখ একই পাঞ্জাবিতে চালিয়ে দেওয়া যাবে৷

বিক্রেতারা মনে করছেন, পয়লা বৈশাখের কেনাকাটা আগামী বছরের আগে স্বরূপে ফিরবে না। গত বছরও রমজানের মধ্যে বাংলা নববর্ষ হওয়ায় পয়লা বৈশাখের কেনাকাটা জমেনি। কারণ, রমজানে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকে। আর পয়লা বৈশাখের বেশির ভাগ অনুষ্ঠান হয় স্কুল ও কলেজকেন্দ্রিক। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় অনুষ্ঠান আয়োজন থাকে কম। ফলে কেনাকাটাও কম হয়। 

ছুটির দিনে ক্রেতার ভিড় এবার রমজানের শুরু থেকেই ব্যবসায়ীরা জানিয়ে আসছেন, ঈদের বাজারে ক্রেতাসমাগম কম হচ্ছে। তবে ছুটির দিনে দোকান বা ফুটপাত—সব জায়গা ক্রেতার ভিড় থাকছে। গতকাল শুক্রবারও এর ব্যতিক্রম ছিল না। বৃষ্টির পূর্বাভাস উপেক্ষা করে সকাল থেকে ক্রেতারা মার্কেটে আসতে শুরু করেন। কেউ নিজের পোশাক কিনতে ব্যস্ত, কেউ আবার নিজেরটা বাদ রেখে পরিবারের অন্যদের মুখে হাসি ফোটাতে উন্মুখ। মৌচাক মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা এনজিও কর্মী রাবেয়া ইসলাম বলেন, ঈদে নিজের জন্য কিছু কেনাটা বাড়তি খরচ মনে হয়। বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি, আত্মীয়স্বজনকে দিতে হয়। সবাইকে দিতে পারলেই আনন্দ লাগে।

মৌচাকের বিক্রেতা শাহীন আলম বলেন, ‘ছুটির দিন ছাড়া এবার কাস্টমার পাইতেছি না। আজকে একটু মোটামুটি ভালো বিক্রি হইসে। শেষের দশ দিন আশা করি ভালো বেচাকেনা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত