Ajker Patrika

বইমেলা নিয়ে শঙ্কা হতাশায় প্রকাশকেরা

সাখাওয়াত ফাহাদ, ঢাকা
আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ৪৫
বইমেলা নিয়ে শঙ্কা হতাশায় প্রকাশকেরা

বইপ্রেমীদের প্রাণের উৎসব অমর একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজন নিয়ে চলতি বছরও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ইতিমধ্যে দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে বইমেলা। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ মেলা শুরু হয়। তবে এবার শেষ পর্যন্ত মেলা হয় কি না, সেটাও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না বাংলা একাডেমি। এদিকে মেলা স্থগিত হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছেন প্রকাশকেরা। তাঁরা জানান, বইমেলা ঘিরে ইতিমধ্যে বই ছাপিয়ে ফেলেছেন। মেলা না হলে তাঁরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন।

অন্বেষা প্রকাশনের প্রকাশক মো. শাহাদাত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনার মধ্যে প্রকাশনা শিল্প কোনো ধরনের প্রণোদনা পায়নি। অনেক বাইন্ডিং, প্রিন্টিং কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। গতবারও নানা বিধিনিষেধে মেলা হয়েছে। গতবারের মেলায় খুবই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছে। করোনা কমায় ভালো প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেখি শুরুর আগেই স্থগিত করা হয়েছে মেলা। আমাদের ৫০টি বই বের হচ্ছে।’

এদিকে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি ছাড়া বইমেলা জমে না বলে জানান অনেক প্রকাশক। তাঁদের মতে, ভাষার মাসের আবেগের সঙ্গে মেলার আদর্শ মিলে যায়। অন্য মাসে হলে লোকজন খুব একটা আসতে চান না।

প্রকাশক শাহাদাত বলেন, ‘যারা বই পড়ে তারা সৃজনশীল, শিক্ষিত মানুষ। তারা নিজেরাই অনেক সচেতন। জাতীয় ঐতিহ্য রক্ষা এবং পাঠক সৃষ্টির জন্য বইমেলা যথাসময়ে হওয়া জরুরি। রাষ্ট্রকে গড়তে হলে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ-মনস্তাত্ত্বিক উন্নয়নও দরকার। বইমেলা না হলে আমাদের পাশাপাশি লেখকেরাও হতাশ হবেন।’

তাম্রলিপির প্রকাশক এ কে এম তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘মেলা স্থগিত হওয়ায় ইতিমধ্যে অনেকেই অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ফেব্রুয়ারি মাসকে কেন্দ্র করে সবাই বছরব্যাপী মেলার প্রস্তুতি নেয়। ফেব্রুয়ারিতে মেলা না হলে পাঠকেরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। এতে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে আমাদের।’

পুথিনিলয় প্রকাশনীর মোহাম্মদ জসিম বলেন, ‘আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বইমেলা। মেলা না হলে এ বছরও ব্যবসায় ধস নামবে।’

প্রকাশকেরা জানান, অমর একুশে বইমেলা আয়োজন নিয়ে প্রতিবছর এমন শঙ্কা দেখা দিলে পাঠক, প্রকাশক ও প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রেস, প্রিন্টিং, বাইন্ডিং শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। সূর্যোদয় প্রকাশনীর প্রকাশক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘মেলা না হলে আমরা পথে বসে যাব। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে মেলা করা যায়, সেটা নিয়ে ভাবা উচিত বাংলা একাডেমির।’

বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি এবং সময় প্রকাশনের প্রকাশক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘সরকার দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে। আশা করছি এরপর মেলা শুরু হবে। তবে আমি মনে করি, বন্ধ হয়ে যাওয়ার চেয়ে কয়েক দিন পরে হলেও পুরো এক মাস মেলা হওয়া ভালো।’

গত ১৬ জানুয়ারি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, করোনা পরিস্থিতির কারণে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে না মেলা। গত বছরও করোনার কারণে ১৮ মার্চে মেলা শুরু হয়েছিল।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখ পর্যন্ত মেলা স্থগিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। তবে এটা ঠিক, যত দ্রুত সম্ভব আমরা মেলা আয়োজনের চেষ্টা করব। ইতিমধ্যে স্টল নির্মাণের কাজ চলছে। আমরা চাই না প্রকাশকেরা ক্ষতির সম্মুখীন হোক। তা ছাড়া, বইপ্রেমীদের জন্যও মেলাটি গুরুত্বপূর্ণ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত