Ajker Patrika

সমান কাজে নারীদের পারিশ্রমিক অর্ধেক

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ২৫
সমান কাজে নারীদের পারিশ্রমিক অর্ধেক

কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর নারী কবিতায় বলেছেন, ‘শস্য ক্ষেত্র উর্বর হল, পুরুষ চালাল হাল, নারী সেই মাঠে শস্য রোপিয়া করিল সুশ্যামল।’ এমনি দৃশ্য চোখে পড়ে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের পাশে নন্দীগ্রাম উপজেলার কৈডালা মাঠে। সেখানে পুরুষেরা ধানের চারা রোপণের জন্য পাওয়ারটিলার দিয়ে জমি চাষ করে দিচ্ছেন। আর নারী শ্রমিকেরা ধানের চারা রোপণ করছেন।

কবি নজরুলের সাম্যের গান কর্মক্ষেত্রে মিলে গেলেও মজুরির ক্ষেত্রে মিলছে না। মাঠে কাজ করা এ নারী শ্রমিকেরা সকাল-সন্ধ্যা পুরুষ শ্রমিকদের মতো কাজ করেন। কিন্তু তাঁদের মজুরি পুরুষ শ্রমিকদের তুলনায় অনেক কম। নারী শ্রমিকদের মজুরি বৈষম্যের শিকার হওয়ার বিষয়টি জোরেশোরে শুধু নারী দিবসে উচ্চারিত হয়। সমান কাজ করে একজন পুরুষ যেখানে পান ৫০০ টাকা, সেখানে নারীদেরও একই পারিশ্রমিক পাওয়ার কথা। তবে তাঁরা পান ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

জানতে চাইলে কৃষিশ্রমিক কান্তি বালা উরাও বলেন, তাঁরা ধান লাগানো, জমি নিড়ানি, ধান কাটা, মাটি কাটাসহ সব ধরনের কাজ করেন। কিন্তু পুরুষের চেয়ে মজুরি অনেক কম পান। একজন পুরুষের ৫০০ টাকা মজুরি হলে, সেখানে মেয়েরা পান ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

একই কথা বললেন আরব আলী হোটেলের নারী শ্রমিক চম্পা আক্তার। তিনি বলেন, ‘হোটেলের একজন পুরুষ শ্রমিক এক দিন কাজ করলে ৬০০ টাকা বেতন পায়। আমি সকাল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত থালাবাসন ধুয়ে পাই ২০০ টাকা।’

এ বিষয় জানতে চাইলে নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিফা নুসরাত বলেন, নারী শ্রমিকেরা মজুরির বৈষম্যের শিকার হন। এটি দুঃখজনক হলেও সত্য। একজন নারী শ্রমিক পুরুষ শ্রমিকের সমান কাজ করেও মজুরি অনেক কম পান। মজুরি বৈষম্য দূর করতে হলে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে সচেতন হতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম নন্দীগ্রাম উপজেলা শাখার সভাপতি প্রদীপ কুমার বলেন, ‘নারী শ্রমিকেরা পুরুষ শ্রমিকদের সমান কাজ করেও বেতন কম পায়। এটা খুব দুঃখজনক ব্যাপার। আমরা আদিবাসী ফোরামের পক্ষ থেকে গরিব নারী শ্রমিকদের সাহায্যের চেষ্টা করি।’

জাতীয় মহিলা সংস্থা নন্দীগ্রাম উপজেলা শাখার চেয়ারম্যান মাহফুজা বেগম বলেন, ‘নারীদের প্রাপ্য অধিকার নিয়ে এবং তাঁরা যাতে ন্যায্য মজুরি পান সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা সফল হলেও কিছু জায়গায় এখনো সফল হতে পারেনি। ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হওয়া শ্রমিকদের প্রাপ্য মজুরি দিতে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে আমরা দাবি জানায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত