Ajker Patrika

দেখো দেখি কাণ্ড!

সম্পাদকীয়
দেখো দেখি কাণ্ড!

পাসপোর্ট আটকে লাখ টাকা ‘মেরে’ দিতে চেয়েছিলেন কাস্টমসের এক সিপাহি। মুফতে টাকা ‘ঝেড়ে’ দেওয়ার মওকা পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষরক্ষা আর হয়নি। আছাদুল্লাহ হাবিব নামের এই সিপাহি পুঙ্গব ফেঁসে গেছেন। বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের হাতে ধরা পড়ে গেছেন তিনি।

বিমানবন্দর এলাকাটি কেমন যেন এক রহস্যময় স্থানে পরিণত হয়েছে। নানাভাবে যাত্রীদের হেনস্তা করার খবর সংবাদমাধ্যমে অহরহ দেখা যায়। এই তো কিছুদিন আগে একজন ভুক্তভোগী ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানালেন, নিষিদ্ধ মাদক নিয়ে যাচ্ছেন—এই অভিযোগে তাঁর ব্যাগ তল্লাশি করা হয়েছিল। সেখানেই থেমে থাকেনি ঘটনা। তাঁর স্যুটকেসগুলোও ফিরিয়ে এনে তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয়েছিল। মুশকিল হলো, যাত্রী যতই বলুন না কেন, যন্ত্রটি বিকল কি না পরীক্ষা করে দেখুন, সে কথা কানে তোলা হয়নি। পরে আরও বড় কর্মকর্তা এলে তাঁর সামনে প্রমাণিত হয় যে যন্ত্রটি বিকল। এই হেনস্তার জন্য কোনো ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তার মানে, চাইলেই যেকোনো যাত্রীকে হেনস্তা করা যায়! এর কোনো প্রতিকার নেই!

বিমানবন্দরের ‘বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো’র কথা তো আমরা কিছুদিন আগেই জেনেছি। এক নাবালক ইমিগ্রেশন পার হয়ে দিব্যি একটা বিমানে চড়ে বসেছিল। এতগুলো সংস্থা রয়েছে বিমানবন্দরে, তাদের কারও চোখেই পড়েনি একটা শিশু বিনা টিকিটে, বিনা বোর্ডিং পাসে, বিনা ভিসায় পার হয়ে গেল সিকিউরিটি পোস্টগুলো!

ওপরের দুটো ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয়, আমাদের বিমানবন্দরে যাত্রীদের নিরাপত্তাব্যবস্থা খুবই ঠুনকো। এর ওপর বিভিন্ন সংস্থার বিভিন্ন সদস্য যদি হঠাৎ করে মনে করে বসেন, মুফতে ‘টু-পাইস’ কামাই করতে হবে, তাহলে অকারণেই একজন যাত্রীকে হেনস্তা করা 
মামুলি ব্যাপার।

মুশকিল হলো, যে দেশগুলোকে আমরা ‘সভ্য’ দেশ বলে অভিহিত করে থাকি, সেই দেশগুলোও একসময় এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকায় কম ‘গুন্ডামি, মাস্তানি’ চালায়নি। তাদের ধনবান হয়ে ওঠার পথ গড়ে দিয়েছে এই লুণ্ঠন। কিন্তু যৌক্তিক পথে নিরন্তর হেঁটে মাতব্বর দেশগুলো জ্ঞানে-বিজ্ঞানে পৌঁছে গেছে অন্য এক উচ্চতায়। ফলে সমাজ ও সভ্যতার বিকাশে রয়েছে তাদের অবদান। এ কারণেই তাদের দেশে বিমানবন্দর এলাকায় সবগুলো সংস্থাই চেষ্টা করে, একজন যাত্রী যেন কোনো ধরনের হাঙ্গামা ছাড়াই এয়ারপোর্ট পার হয়ে যেতে পারে। তারা মনে করে, তারা হলো যাত্রীদের সেবকমাত্র।

এখানেই সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। আমাদের দেশের বিমানবন্দরে চাকরিরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিজেদের জনগণের সেবক বলে ভাবেন না, ভাবেন, জনগণ বা এ ক্ষেত্রে যাত্রী তাঁদের অধীন কর্মচারী। তাঁদের বিরুদ্ধে যেমন ইচ্ছে, তেমন ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব এবং সে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় আইনকানুন মানতে হবে, এমনও কোনো মাথার দিব্যি নেই। কখনো কখনো সীমা অতিক্রম করে গেলে কেউ কেউ হয়তো ধরা পড়েন। কিন্তু সামগ্রিকভাবে এই অপরাধ নিরোধের উপায় নিয়ে কেউ কি ভেবেছেন? হেনস্তাই যাত্রীদের ভাগ্যের লিখন হতে পারে না। কর্তাব্যক্তিদের এ কথা বুঝতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুর, আবারও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

২০২৬ সালের পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নামের আগে গণহত্যাকারী, ফেসবুকে আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত