Ajker Patrika

বেগুনি ধানে খেত রঙিন

তাজরুল ইসলাম, পীরগাছা
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২১, ১২: ১১
বেগুনি ধানে খেত রঙিন

পীরগাছায় প্রথমবারের মতো চাষ করা ভিটামিন-ই এবং ফাইবার সমৃদ্ধ উচ্চফলনশীল বেগুনি জাতের ধান নজর কেড়েছে উপজেলাবাসীর। মাত্র দুই শতক জমিতে চীনা এ ধান চাষ করে এখন আলোচনায় রয়েছেন চাষি মোজাফফর আহমেদ মিন্টু।

সবুজের মধ্যে বেগুনি ধানখেত দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছে মানুষ। ইতিমধ্যে কৃষি অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা খেতটি পরিদর্শন করে গেছেন।

উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের জগজীবন গ্রামের মোজাফফর জানান, তিনি এক বন্ধুর কাছ থেকে এক কেজি বীজ ধান নিয়ে এসেছিলেন। পরে তা পরীক্ষামূলকভাবে দুই শতক জমিতে চাষ করেন। এ ধানের গাছ বেগুনি রঙের হলেও শিষ অন্য ধানের মতো। তবে শিষ অনেক বেশি হয় এবং ধানের ছড়া অনেক লম্বা হয় বলে জানান তিনি।

কীটনাশক ব্যবসায়ী মোজাফফর বলেন, ‘আমি কৌতুহলবশত বীজ এনে চারা করে রোপণ করি। সাধারণ মানুষ ও কৃষি অফিসের এ ধরনের সাড়া পাব বুঝিনি। তাহলে আরও বেশি করে রোপণ করতাম।’

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ ধানকে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ নাম দিয়েছে ‘পার্পল লিফ রাইস’। আর স্থানীয়রা নাম দিয়েছেন ‘দুলালি সুন্দরী’। ধানের চালের রং বেগুনি হয় এবং মোটা হয়ে থাকে। বোরো ও আমন দুই মৌসুমেই চাষাবাদ করা যায়। একর প্রতি ৫৫ থেকে ৬০ মণ ধান উৎপাদন হয়।

সংশ্লিষ্ট ব্লকের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আহসানুল হক জানান, অনেক পুষ্টিগুণের পাশাপাশি দীর্ঘদিন এই ধানের ভাত খেলে ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও হৃদ্‌রোগের মতো অনেক রোগের ঝুঁকি কমে। সাধারণত অন্য জাতের ধান চাষ থেকে এ ধানে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক পরিমাণে কম লাগে। এ জাতের ধান কৃষকের ঘরে তুলতে প্রায় ৯০ দিন সময় দরকার হয়।

বেগুনি জাতের ধানের খেতটি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ। তাঁরা বলেন, যদি ফল ভালো হয় তাহলে অন্য কৃষকদের এটি চাষ করতে উৎসাহিত করা হবে। আর যেহেতু পীরগাছায় এই প্রথম বেগুনি ধানের চাষ হচ্ছে তাই খেতে মানুষের আনাগোনা একটু বেশি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল আলম বলেন, ‘বেগুনি জাতের ধান চাষ পীরগাছায় এই প্রথম। ফলন যদিও একটু কম, কিন্তু খেতে সুস্বাদু। ধান ও চালের সার্বিক উৎপাদনের মধ্যে এটি উল্লেখযোগ্য কোনো প্রভাব না রাখলেও এর ধান ও চাল দেখতে অনেক সুন্দর। এটা পরিবেশের ওপর ভালো একটা প্রভাব রাখবে। যদি ফলন ভালো হয় তাহলে আমরা কৃষকদের চাষাবাদ করতে উদ্বুদ্ধ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত