Ajker Patrika

শিক্ষকেরা গরহাজির, স্কুল ছাড়ছে শিক্ষার্থীরা

মুরাদনগর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২২, ১২: ০৩
শিক্ষকেরা গরহাজির, স্কুল  ছাড়ছে শিক্ষার্থীরা

মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের নোয়াগাঁও উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অনুপস্থিতির অভিযোগ উঠেছে। এদিকে নামমাত্র ক্লাস হওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী এখন অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে গেছে।

এ ছাড়া বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি চাকরি করেন ঢাকায়। দুই বছর ধরে বন্ধ আছে নির্মাণাধীন ভবনের কাজ।

গত সোমবার সকালে বিদ্যালয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ল কয়েকজন শিক্ষার্থী বাইরে খেলা করছে। বিদ্যালয়ের চলমান নির্মাণাধীন ভবনের পাশের ছোট্ট টিনের ঘরের একটি রুমে বসে আছেন প্রাক-প্রাথমিকের চারজন শিক্ষার্থী। শিক্ষকদের রুমে গিয়ে দেখা গেল, একজন ব্যস্ত তাঁর বাচ্চা সামলাতে, অপরজন আছেন ফেসবুকে। কেউ একজন বিদ্যালয়ে এসেছেন বুঝতে পেরে দুই শিক্ষক হাতে খাতা নিয়ে ছুটছেন ক্লাস রুমের দিকে।

প্রধান শিক্ষক কোথায়? এমন প্রশ্নের জবাবে তাঁরা বলেন, কামরুল স্যার উপজেলায় অফিসের কাজে ব্যস্ত, আসবেন। সাড়ে ৯টায় ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আপনারা এখনো অফিস রুমে কেন? জবাবে তাঁরা বলেন, স্কুলটিতে বর্তমানে শিক্ষার্থী অনেক কম। আর যারা আছে, তারা সঠিক সময়ে আসে না। পাশে একটা মাদ্রাসা হয়েছে। সবাই এখন ওখানে পড়ে।

এ নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগও অনেক। বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি হাফেজ আব্দুর রউফ বলেন, আগে স্কুলটির অবস্থা এমন ছিল না। সঠিক সময়ে স্কুল খোলা-বন্ধ হতো। কারণ শিক্ষকদের বাড়িও ছিল স্কুলের আশপাশের গ্রামে। তাই প্রতিটি শিক্ষকের জবাবদিহিতা ছিল। কিন্তু দুই বছর স্কুলটিতে চলছে নানা বিশৃঙ্খলা। শিক্ষকেরা সময়মতো আসেন না। শিক্ষকদের তদারকি না থাকায় শিক্ষার্থীরাও গ্রামের মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে গেছে। নির্মাণাধীন ভবনটি আটকে আছে প্রায় দুই বছর। কোনো কাজ হচ্ছে না। প্রধান শিক্ষক সময় না দেওয়াতে স্কুলটি এখন আইসিইউতে আছে। সংশ্লিষ্টরা যদি নজর না দেয় অচিরেই প্রাণ হারাবে স্কুলটি।

স্কুলের পাশে বসবাসরত তারা মিয়া বলেন, স্কুলের কোনো মা-বাপ নাই। প্রধান শিক্ষক রাজনীতি করেন। ভয়ে তাঁর সামনে কেউ কিছু বলেন না। তাঁর খেয়াল-খুশিমতো স্কুলে আসেন। মাঝেমধ্যে উপজেলা থেকে অফিসার তাঁর সঙ্গেই স্কুলে আসেন। আবার তাঁর সঙ্গেই চলে যান।

বিদ্যালয়ের সভাপতি আবু বক্কর বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে আমি সভাপতি হয়েছি। আমি ঢাকায় চাকরি করি, মাঝেমধ্যে শুক্রবারে এলাকায় আসি। এবার বাড়িতে এসে সবাইকে নিয়ে বসে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’

এদিকে প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলাম বলেন, স্কুলে না যাওয়ার বিষয়টি মিথ্যা। বিদ্যালয়ের কাজে শিক্ষা অফিসে যেতে হয়। তাই মাঝেমধ্যে স্কুলে যেতে দেরি হয়। তবে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষকের স্বল্পতা রয়েছে।

ওই ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সায়েমা সাবরিন বলেন, ‘আমি মাঝেমধ্যে না জানিয়ে ভিজিটে যাই। তেমন কোনো অনিয়ম চোখে পড়েনি এখন পর্যন্ত।’

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফওজিয়া আকতার বলেন, কোনো শিক্ষকই বিদ্যালয় ছুটির আগে অফিসে আসার সুযোগ নেই। কেউ যদি স্কুল ফাঁকি দেন, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত