Ajker Patrika

আমাদের এত মাথাব্যথা কেন

সম্পাদকীয়
আমাদের এত মাথাব্যথা কেন

মাঝে মাঝে মনে হয়, সবকিছুকেই আমরা এ রকম নেতিবাচকভাবে দেখি কেন? একটু ইতিবাচক করে দেখলেই তো অনেক সমস্যা মিটে যায়। আজকের পত্রিকায় এই যে খবর বেরিয়েছে, সরকারি টাকায় দুটি পারিবারিক সেতু নির্মিত হচ্ছে সুনামগঞ্জে, তা নিয়ে খুশি হলে সমস্যা কী? ভাবা যায়! সরকারি টাকায় একটি সেতু গড়ে দিয়ে শুধু একটি পরিবারের জীবনে কতটাই না আনন্দ এনে দেওয়া হলো!

না হয় প্রভাব খাটিয়েই বানানো হলো সেতুগুলো, কিন্তু সেতু তৈরি হচ্ছে তো! অন্তত একেক সেতুতে একেকটি পরিবার লাভবান হচ্ছে, এই বা কম কিসে? আমরা তো এখন আশায় আশায় থাকতে পারি, যদি প্রয়োজন হয়, আমার বাড়ির দোরগোড়ায়ও এসে পৌঁছুবে এই সেবা! দেশের একটি মানুষও থাকবে না সরকারের নজরের বাইরে। যার বাড়িতে ওয়াসার পানি আসে না, তার বাড়িতে পৌঁছে যাবে ওয়াসার লাইন, যার বাড়িতে নেই বিদ্যুতের সংযোগ, তার কাছে এসে সরকারি কর্মচারীরা ঘ্যানঘ্যান করে বলবেন, ‘ভাইয়েরা, বোনেরা, আমাদের উদ্ধার করুন। আপনাদের বাড়িতে বিদ্যুৎসেবা দিতে পারছি না বলে আমাদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। দয়া করে সংযোগ নিন।’ আর পুরোনো আবেদনের গল্প তৈরি করে রাজধানীর প্রতিটি বাড়িতে দেওয়া হবে গ্যাসের সংযোগ। কত বিশাল অঙ্কের টাকার লেনদেন হবে তাতে, তা নিয়ে উৎসুক হওয়ার দরকার নেই।

আমরা তো এটাও চাই, বাজারে বাজারে মুদি দোকানদার ক্রেতাকে ডেকে ডেকে বলবে, ‘আসুন, আসুন, সব শালা সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছেন মন্ত্রী-মিনিস্টাররা! ভরা মৌসুমে চাল নিয়ে রংবাজি? হতে দেব না। এই দেখুন, চালের কেজি চলে এসেছে ৩০ টাকায়। যত খুশি নিয়ে যান। আর পেঁয়াজের কথা বলছেন? লজ্জা দেবেন না স্যার! ওই ৪০ টাকাই রাখব। আমরা পাক্কা ঝানু বোলার। পেঁয়াজকে সেঞ্চুরি করতেই দেব না। ভালো ফিল্ডিং সাজিয়েছি।’

সুতরাং, পরিবারের জন্য গড়ে দেওয়া সেতু নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করার কোনো মানেই হয় না। তবে ছোট্ট যে খটকাটা আছে, সেটার জট খুলতে হবে আগে। দেখা যাচ্ছে, সরকারি লোকজন মুফতে সেতু করে দিচ্ছে না। এর পেছনে আছে প্রভাব। সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নে এমনি এমনি ‘পারিবারিক সেতু’ নির্মিত হচ্ছে না। এলাকার আর কারও কাজে আসবে না জেনেও এই সেতু নির্মাণ করার অনুমতি পাওয়া গেছে স্রেফ সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীর এপিএস ও তার ভাইয়ের প্রভাবের কারণে। মুশকিল হলো, সাধারণ জনগণের সঙ্গে তো সব জেলার সব মন্ত্রীর এপিএস ও তার ভাইয়ের সখ্য নেই। তাই তাদের দোরগোড়ায় কী করে পৌঁছুবে উন্নয়ন? প্রশ্ন শুধু এটুকুই। দেশের প্রত্যেক মানুষ যদি কোনো না কোনো মন্ত্রীর এপিএসের কাছের মানুষ হয়, তাহলে উন্নয়নের সুফল তার কাছ অবধি পৌঁছে যাবে। আর যদি সেই সখ্য না থাকে?

ধুৎ! আমজনতা নিয়ে আমাদের এত মাথাব্যথা কেন?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত