Ajker Patrika

খ্রিষ্টীয় নতুন বছর

সম্পাদকীয়
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ০৪
খ্রিষ্টীয় নতুন বছর

আবার একটি নতুন বছর।  খ্রিষ্টীয় নববর্ষে সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। অভিনন্দন জানাচ্ছি আরও একটি নতুন দিনের সূর্য দেখার সুযোগ পাওয়ার জন্য। কোভিড এখনো ছেড়ে যায়নি বিশ্বকে। প্রতিনিয়ত জানা-অজানা অনেক মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে এই অতিমারিতে। তারপরও এই অতিমারির স্রোতের বিপরীতে টেনে নিয়ে যাওয়া জীবন জানিয়ে দিচ্ছে, এগিয়ে যেতে হবে সামনে।

কত কিছুই না ঘটে গেল ২০২১ সালে। প্রায় থেমে গিয়েছিল স্বাভাবিক জীবন এবং এই সংকটের মধ্য থেকেও ধীরে ধীরে আবার ফিরে আসছিল প্রাণস্পন্দন। কৃষক বাঁচলে বাঁচে গোটা দেশ। শ্রমিক বাঁচলে বাঁচে গোটা দেশ। সমাজের ওপরতলের মানুষেরা মূলত মৌলিক এই দুই জায়গা থেকেই বাঁচার প্রেরণা পায়। অর্থনীতির চাকা না ঘুরলে জীবন হয়ে যেতে চায় স্থবির। এ সময়টায় সে রকম আতঙ্ক দেখা দিয়েছিল অনেকের জীবনেই। কত মানুষ যে এ সময় চাকরি হারিয়েছে, কত ব্যবসা যে এ সময় নষ্ট হয়েছে, তার হিসাব নেই। সরকারের পক্ষ থেকে কখনো কখনো প্রণোদনা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে তৃণমূলের মানুষের। কিন্তু তা অনিশ্চয়তার আতঙ্ক দূর করতে পারেনি। একই সঙ্গে বিভিন্ন ফাটকাবাজি প্রতিষ্ঠান মানুষের সরলতা আর লোভের সুযোগ নিয়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। গত বছরটিতে দেখা গেছে, চালিয়াত মানুষ, প্রতারক মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই মেধা ও পরিশ্রম ব্যতিরেকেই হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। নতুন বছরে এই দুর্বৃত্তদের লাগাম টেনে ধরা যায় কি না, সেটাই হয়ে উঠতে পারে বড় চ্যালেঞ্জ।

গত বছরে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বেশ কিছু অঘটন ঘটিয়েছিল। যে অসাম্প্রদায়িক মনোভঙ্গি নিয়ে এ দেশে স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, তা ভুলে গিয়ে সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে বসবাসের প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। ইসলামের নাম ভাঙিয়ে ধর্মব্যবসায়ীরা বিভ্রান্ত করেছে সাধারণ মানুষকে। বছরের শেষ দিকে আগুনে পুড়ে গেল লঞ্চ। নিহত হলো কত মানুষ। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। বিভক্ত জাতি কী করে এগিয়ে যাবে, সে চিন্তাও ধীরে ধীরে শঙ্কা বাড়াচ্ছে। দেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি রয়েছে, এ রকম আজব একটি দেশ পৃথিবীতে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। আমাদের দুর্ভাগ্য, কখনো কখনো সেই শক্তি দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।

রাষ্ট্রীয়ভাবেও বেশ কিছু প্রশ্নের মীমাংসা হওয়া দরকার। নির্বাচন কমিশন, ভোট, রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন রোধ, রেমিট্যান্স প্রবাহ নিয়ে ভাবনা তো রয়েছেই। কিন্তু সবচেয়ে জরুরি কাজের একটি হলো, শিশুর বিকাশ। আমাদের দেশে শিশুরা বেড়ে ওঠার সময় পরিবার বা শিক্ষালয় থেকে ঠিক দিকনির্দেশনা পাচ্ছে না। ভালো মানুষ না হয়ে নম্বর তৈরির যন্ত্র হয়ে ওঠার এই প্রবণতা বুদ্ধিবৃত্তিক জগৎকে নষ্ট করে দিচ্ছে। সে জায়গাটা ঠিক না করলে সামনে ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে।

নতুন খ্রিষ্টীয় বছরে মানবিক একটি বিশ্বের দিকে যাত্রা শুরু হোক। আমাদের পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা, দেশের অগণিত মানুষকে খ্রিষ্টীয় নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই। স্বাগত ২০২২।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

আইসিএক্স বাদ দিলে ঝুঁকিতে পড়বে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব, বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ

‘কলেমা পড়ে বিয়ে’ করা স্ত্রীর ঘরে গিয়ে মধ্যরাতে ঘেরাও পুলিশ কনস্টেবল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত