Ajker Patrika

বিয়ের দেনমোহর নির্ধারণ করবেন যেভাবে

আবদুল আযীয কাসেমি
বিয়ের দেনমোহর নির্ধারণ করবেন যেভাবে

প্রশ্ন: ইসলামি শরিয়তে বিয়ের মোহরানা নির্ধারণের মূলনীতি কী কী? সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মোহরানা কি নির্দিষ্ট করা আছে? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হব।
ফাহমিদা কামাল, ঢাকা

উত্তর: ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। হালাল উপায়ে জৈবিক চাহিদা পূর্ণ করতে আল্লাহ তাআলা এ বিধান বিধিবদ্ধ করেছেন। স্ত্রীর মোহরানা আদায় করা বিয়ের অন্যতম শর্ত। নারীকে সম্মানিত ও মূল্যবান হিসেবে উপস্থাপন করার জন্যই মূলত মোহরানার বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। তাই মূল্যবান বস্তুর বিনিময়েই শরিয়াহসম্মত উপায়ে নারীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। এ কারণেই পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা অর্থের বিনিময়েই স্ত্রী সন্ধান করার নির্দেশ দিয়েছেন। (সুরা নিসা: ২৪)

ইসলামি শরিয়তে মোহরানার সুনির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ নির্ধারিত নেই। তবে মোহরানা অবশ্যই এমন কিছু হতে হবে, যা শরিয়তের দৃষ্টিতে অর্থ হিসেবে বিবেচিত। অথবা এমন কোনো বস্তু হতে হবে, যার বিনিময়ে অর্থ পরিশোধ করতে হয়। সেটি অবশ্যই কোনো বস্তু হতে হবে। সুতরাং ইসলামি শরিয়তে শ্রমের বিনিময়ে মোহরানা দেওয়া শুদ্ধ হয় না।

যেসব বস্তু শরিয়াহর দৃষ্টিতে হারাম ও মূল্যহীন, যেমন শূকর, মাদক ইত্যাদি, তা মোহরানা ধরলে শুদ্ধ হবে না। এ ক্ষেত্রে বরকে একশ্রেণির ও সমগোত্রীয় মেয়েদের মোহরানার সমপরিমাণ মোহরানা আদায় করতে হবে। কোনো কোনো বর্ণনায় মোহরানার সর্বনিম্ন পরিমাণ ১০ দিরহাম তথা ৩০ দশমিক ৬১৮ গ্রাম রুপা অথবা এর সমপরিমাণ অর্থের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এটি হানাফি মাজহাবের মত।

মোহরানা পরিমাণে বেশি হলে শরিয়তের দৃষ্টিতে আপত্তি নেই। বেশি মোহরানাও ইসলামে অনুমোদিত। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা যদি এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নাও এবং তাদের একজনকে (আগের স্ত্রী) প্রচুর অর্থও দিয়ে থাকো, তবু তা থেকে কিছুই ফেরত নিয়ো না।’ (সুরা নিসা: ২০)

বিয়ের মোহরানা নির্ধারণে ইসলামের সাধারণ নির্দেশনা হলো, উভয় পক্ষের সম্মতিতে বর-কনের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে একটি ভারসাম্যপূর্ণ নির্দিষ্ট অঙ্ক ঠিক করা।

মেয়ের পারিবারিক অবস্থা, আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় মোহরানার পরিমাণে কমবেশি হতে পারে। তবে অতিমাত্রায় মোহরানা ঠিক করা ইসলামের শিক্ষা নয়। ইসলাম বিয়েকে সহজ করতে উৎসাহিত করে। সাহাবিদের জীবনের দিকে তাকালেই তা বোঝা যায়। হজরত আলী (রা.) নবীতয়না হজরত ফাতেমা (রা.)-এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর যখন বাসর করতে চাইলেন, মহানবী (সা.) বললেন, ‘কিছু মোহর দেওয়া ছাড়া বাসর করা যাবে না।’ হজরত আলী বললেন, ‘আমার কাছে তো দেওয়ার মতো কিছু নেই।’ নবীজি বললেন, ‘তোমার বর্মটা দিয়ে দাও।’ (আবু দাউদ)

হজরত আবদুর রহমান বিন আউফ (রা.) ছিলেন বিখ্যাত ব্যবসায়ী সাহাবি। তিনি এক টুকরো স্বর্ণ মোহরানা দিয়ে বিয়ে করেছিলেন। এমনকি বিয়েতে নবীজি (সা,)-কে পর্যন্ত দাওয়াত করেননি। (বুখারি) বোঝা যায়, বিয়ে অত্যন্ত সহজ বিষয় ছিল। নবীজি নিজেও সব স্ত্রীকে সমান মোহরানা দেননি। কেবল হজরত উম্মে হাবিবা (রা)-কে সর্বোচ্চ মোহরানা দিয়েছিলেন, যা আদায় করেছিলেন ইথিওপিয়ার বাদশাহ নাজাশি। (বুখারি ও মুসলিম)

উত্তর দিয়েছেন
আবদুল আযীয কাসেমি
শিক্ষক ও হাদিস গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত