Ajker Patrika

পরিত্যক্ত ভবনেই বসবাস

কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ১৪
পরিত্যক্ত ভবনেই বসবাস

প্রবেশপথের দেয়ালে লেখা ‘ভবনটি ব্যবহারের অযোগ্য’। অথচ ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়বে, ‘বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের পাঠকক্ষ’। যার ৯টি টেবিলে পড়ছিলেন প্রায় ৩০ জন ছাত্রী। পাঠকক্ষের পাশে আছে একটি মিলনায়তন, ডাক্তার ও মনোবিজ্ঞানীর কক্ষ। ভবনটির দোতলার প্রথম কক্ষের চার কোনায় রয়েছে চারটি বিছানা। চার বিছানায় থাকছেন আটজন। একই কক্ষের মেঝেতে বিছানা করে থাকছেন আরও ছয়জন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের শিকদার মনোয়ারা ভবনে সম্প্রতি সরেজমিনে এমন পরিবেশ দেখা যায়। ঢাবির ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার নির্দেশনা অমান্য করেই যেখানে প্রতিবছর ছাত্রী ওঠানো হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনেই বাস করছে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী। শিকদার মনোয়ারাতে বসবাস করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী বলেন, ‘এই ভবনের সবগুলোই গণরুম। আমরা এক রুমে ১২ জন থাকি। আমাদের কাপড়ের ব্যাগ আর বিছানাই শুধু রুমে রাখা গেছে। বাকি সব জিনিসপত্র আমরা বারান্দায় রাখি।’

পাঠকক্ষে থাকা আরেক ছাত্রী জানান, ভবনের পেছনের দিকে একটি ওয়াশরুম রয়েছে। অনেক সময় মেয়েরা সেখানে গোসল করে। কারণ, তিনতলার এ ভবনে ২০০ ছাত্রীর জন্য মাত্র দুটি গোসলখানা রয়েছে।

 হলের ভেতরে পাঁচতলা একটি মূল ভবনও রয়েছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, মূল ভবনে যেতে হলে বেশির ভাগের ক্ষেত্রে তৃতীয় বর্ষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। তা ছাড়া, দুই ভবনের জন্য রয়েছে মাত্র একটি ডাইনিং। যেখানে খাবারের মানও খুব একটা ভালো নয়।

অভিযোগ নিয়ে চানতে চাইলে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের প্রভোস্ট নাজমুন নাহার বলেন, ‘এটা যে ঝুঁকিপূর্ণ তা আমরা জানি। তবে ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্রীরা সেখানে নতুন করে মেয়ে তুলছে। তবে হলের নিয়ম মেনে নতুন করে যারা আসবে, আমরা তাদের সেখানে ওঠাব না।’

হল শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি ফরিদা পারভিন বলেন, ‘মেয়েরা মূলত প্রশাসনের মাধ্যমেই বিভিন্ন ভবনে ওঠেন। ছাত্রীদের সমস্যার কথা ভেবে মাঝেমধ্যে আমরা অতিথিকক্ষে কাউকে কাউকে থাকতে বলি।’ শামসুন নাহার হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আবাসন সংকট রয়েছে হলে। ডাইনিংয়ের খাবারের মান খুবই বাজে। অনেক সময় পরিমাণেও কম দেয়, ভাতে ময়লা পড়ে থাকে। তা ছাড়া, রাত ৮টার পর বিল্ডিংয়ের অভ্যন্তরীণ গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই হলে থেকেও মেয়েরা এক বিল্ডিং থেকে অন্য বিল্ডিংয়ে যেতে পারে না।’

সরেজমিনে দেখা যায়, শামসুন নাহার হলের মোট গণরুম ১০টি। এসব গণরুমে মেয়েদের অনেক গাদাগাদি করে থাকতে হয় বলে জানান হল সংসদের সাবেক ভিপি তাসনিম আফরোজ ইমি। তিনি বলেন, ‘পলিটিক্যাল মেয়েদের সঙ্গে সমঝোতা করে অনেক মেয়েই গণরুম থেকে মূল বিল্ডিংয়ে যায়। পরে বনিবনা না হলে হুটহাট সেই মেয়েদের আবার গণরুমেই ফেরত পাঠানো হয়। তখন হল কর্তৃপক্ষেরও কিছু করার থাকে না।’

হলটির প্রভোস্ট লাফিফা জামাল বলেন, ‘নির্ধারিত দামের মধ্যে যতটুকু মানসম্মত খাবার হওয়া সম্ভব আমরা সেটাই দিচ্ছি। আর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শতভাগ আবাসিক নয়। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে সমস্যাগুলো অবশ্যই সমাধান করতে হবে।’ এদিকে রোকেয়া, বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ও কবি সুফিয়া কামাল হলের অবস্থা মোটামুটি ভালো বলে জানান হলের ছাত্রীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষার্থীদের ‘কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে’ সপরিবারে পালিয়েছেন বিএসবির বাশার

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ: পাকিস্তানে নিহত বেড়ে ২৬, ভারতে ১০

সীমান্তে সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী

কাশ্মীরে বিধ্বস্ত বিমানের অংশবিশেষ ফরাসি কোম্পানির তৈরি, হতে পারে রাফাল

পাকিস্তানে হামলায় ‘লোইটারিং মিউনিশনস’ ব্যবহারের দাবি ভারতের, এটি কীভাবে কাজ করে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত