Ajker Patrika

প্রকৃতিকে পাশে পেয়েও ধুঁকছে বাংলাদেশ

প্রিন্স রাসেল, ঢাকা
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ২৩
প্রকৃতিকে পাশে পেয়েও ধুঁকছে বাংলাদেশ

দিনের খেলা তখন শেষ। সাজঘরে ফিরে গেছেন দুই দলের ক্রিকেটাররা। মাঠকর্মীরা উইকেট ঢাকা নিয়ে একটু-আধটু ব্যস্ত। ঠিক ওই সময়ে ব্যাট হাতে নেমে পড়লেন ইবাদত হোসেন। সীমানাদড়ির পাশে মিনিট দশেক করলেন ব্যাটিং অনুশীলন। হয়তো ২২ গজেও আসতে পারতেন তিনি। সেটা হয়নি আলোক স্বল্পতার কারণে। প্রকৃতির এই আশীর্বাদ নিয়েও গতকাল ফলোঅন আতঙ্কে কেটেছে বাংলাদেশের।

আশঙ্কা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। মিরপুর টেস্টে ফলোঅন এড়াতে আজ পঞ্চম ও শেষ দিনে বাংলাদেশকে করতে হবে আরও ২৫ রান। হাতে আছে ৩ উইকেট। গতকাল শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মিরপুর টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা শেষে ৭ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭৬ রান, এখনো ২২৪ রান পিছিয়ে। ৪ উইকেটে কাঁটায় কাঁটায় ৩০০ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেন সফরকারী অধিনায়ক বাবর আজম।

বোলিংয়ের হতাশা ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশের হতশ্রী ব্যাটিংয়ে। এই হতাশার গভীরতা কৃষ্ণগহ্বরে। সাজিদ খানের স্পিনবিষে নীল বাংলাদেশের টপ ও মিডলঅর্ডার। স্বাগতিকদের পতন হওয়া উইকেটের ৬টিই গেছে পাকিস্তানি অফ স্পিনারের ঝুলিতে। ভাগ্যিস মুমিনুল হক রান আউট হয়েছিলেন! না হলে হয়তো তাঁরও ঘাতক হতে পারতেন সাজিদ। তবে সাকিব আল হাসানের সৌভাগ্য বলতেই হবে। রান আউটের হাত থেকে বেঁচে গেছেন তিনি।

দিন শেষে সাকিব অপরাজিত ২৩ রানে। নাজমুল হোসেন শান্ত  আউট ৩০ রান করে। ব্যাটিং করতে আসা বাকি সাত ব্যাটার যেতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘরে। তিনজন খুলতে পারেননি রানের খাতা। তবে ‘নাইট ওয়াচম্যান’ তকমার স্বার্থকতা দেখিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। আজ সাকিবের সঙ্গী তিনিই। দুজনের প্রথম লক্ষ্য ফলোঅন এড়ানো। এরপর আসল লড়াই—টেস্টটা বাঁচানো।

এসব দৃশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে দুই বছর আগের চট্টগ্রাম টেস্ট। প্রকৃতি দুই হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পরও চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ বাঁচাতে পারেনি বাংলাদেশ। সেদিন সাকিবরা হেরেছিলেন ২২৪ রানে। ওই টেস্টও বাঁচানোর দায়িত্ব বর্তেছিল সাকিবের কাঁধেই। চলমান মিরপুর টেস্টের প্রেক্ষাপটও অনেকটা একই। পার্থক্য শুধু, আফগানদের দুবার ব্যাটিং করিয়েছে বাংলাদেশ। আর পাকিস্তান প্রথম ইনিংসেই কাজটা অনেক দূর এগিয়ে রেখেছে।

পাকিস্তানের কাজটা সহজ করে দিয়েছেন সাজিদ। বাংলাদেশের বেশির ভাগ ব্যাটারই উইকেট দিয়ে এসেছেন তাঁকে। আত্মঘাতী শট আর টেস্ট বিরুদ্ধ অহেতুক আক্রমণাত্মক মেজাজের ব্যাটিং মুমিনুলদের প্রায় ছিটকে দিয়েছে ম্যাচ থেকে। অথচ আলোক স্বল্পতার কারণে ১ ওভারের বেশি পেসারদের বিপক্ষে পরীক্ষা দিতে হয়নি বাংলাদেশকে। তবু ধস এড়ানো যায়নি। বিষয়টি মানতে পারছেন না স্বয়ং বাংলাদেশ দলের ‘টিম ডিরেক্টর’ খালেদ মাহমুদ সুজন। প্রথম দিনের খেলা শেষে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘উইকেটে স্পিন হচ্ছিল এবং ওরা ভালো স্পিনও করেছে। কিন্তু ভালো স্পিন খেলার সামর্থ্য তো আমাদের আছে। হয়নি কেন, বা এত তাড়াহুড়ো কেন, সেটা জানি না।’

ধৈর্য আর সংযমের সংস্করণের ফরম্যাট টেস্টে এভাবে উইকেট দেওয়ার প্রতিযোগিতা কেন? এ প্রশ্নে দিন শেষে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা নাজমুল হাসান শান্তর ব্যাখ্যা, ‘শুধু রক্ষণাত্মক খেলে সারা দিন পার করা কঠিন। শট খেললে ওদের আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং ছড়িয়ে যেত। আমার মনে হয় না কেউ অতিরিক্ত আগ্রাসী ছিল।’ কোণঠাসা হয়ে থাকার পরও শান্ত আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বললেন, মিরপুর টেস্ট তাঁরা বাঁচাতে পারবেন, ‘অবশ্যই (ম্যাচ বাঁচানো সম্ভব)। সাকিব ভাই ও তাইজুল ভাই যদি জুটি গড়তে পারে, অবশ্যই আমরা ম্যাচ বাঁচাতে পারব।’

তবে দিনের নায়ক পাকিস্তানি অফ স্পিনার সাজিদ বলেছেন, তাঁরা দ্রুত গুঁড়িয়ে দিতে চান বাংলাদেশকে, ‘পরিকল্পনা হচ্ছে, কাল (আজ) এই তিনজনকে আউট করে ওদের আবার ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে আরেকবার অলআউট করে দিয়ে জয়ের চেষ্টা করা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৫০ সাল নাগাদ ইনফ্লুয়েন্সারদের চেহারা কেমন হবে, ধারণা দিলেন গবেষকেরা

২৪ ঘণ্টার মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও গণঅধিকারকে নিষিদ্ধ করতে হবে: শামীম পাটোয়ারী

গোয়ালন্দে পিরের আস্তানায় হামলায় ১ জন নিহত, আশঙ্কাজনক ৫

ভূমিকম্পে হতাহত নারীদের উদ্ধার করেনি তালেবান কর্মীরা

দেশে প্রথমবারের মতো চালু হলো ভয়েস ওভার ওয়াই-ফাই, সুবিধা কী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত