Ajker Patrika

পদ্মায় ফের ভাঙন শুরু

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ৪৫
পদ্মায় ফের ভাঙন শুরু

পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে আবারও পদ্মার ভাঙন শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে রাজবাড়ী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভাঙন শুরু হয়। মুহূর্তের নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় ৩০ মিটার এলাকা।

এদিকে ভাঙন ঠেকাতে ৩৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মার ডান তীর সংরক্ষণ বাঁধ দেওয়া হয়েছিল তা কোনো কাজেই আসছে না। তিন মাসে সদর উপজেলার গোদার বাজার এলাকায় নদীতে বিলীন হয়েছে দেড় হাজার মিটার এলাকার সিসি ব্লকসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি। হুমকির মুখে রয়েছে শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ। ফলে আতঙ্কে রয়েছে পদ্মার পাড়ের বাসিন্দারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজবাড়ী শহর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে এখন পদ্মা নদীর অবস্থান। দুই মাস ধরে গোদার বাজার এলাকার পদ্মার ভাঙন যেন থামছেই না। এরই মধ্যে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়ন পেরিয়ে নদী এখন পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও পদ্মার ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা অন্তত ১০টি পরিবারের লোকজন ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। কেউ ঘরের চালা খুলছে, কেউ ঘরের আসবাবপত্র। শেষ সম্বলটুকু নদীতে হারিয়ে যেতে দেখে অনেকই উচ্চ স্বরে কান্না করছে। ভাঙন রোধের জন্য দুটা ট্রলারে অন্তত ৫০ জন শ্রমিক বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে ভাঙন স্থানে। জিও ব্যাগ ফেলা শ্রমিকেরা জানান প্রায় ৩০ মিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়েছে।

স্থানীয় জাহানার বেগম বলেন, আমাদের বাড়ি ঘর নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। এখন কোথায় যাব? আমাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। অনেক কষ্ট করে ছেলে অটোরিকশা চালিয়ে বাড়িটা করেছিল। এখন সেটা নদীতে চলে যাচ্ছে। সরকার কি আমাদের দেখে না? আমরা কত কষ্টে আছি।

সত্তর বছর বয়সী আজগর আলী বিশ্বাস জানান, বাপ-দাদার ভিটা ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে। পদ্মার ভাঙন ভয়াবহ হচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরেই ভাঙছে। জিও ব্যাগ ফেললেও কোনো কাজে আসছে না। শুনেছি সরকার ভাঙন ঠেকানোর জন্য অনেক টাকা দিয়েছে। তবুও ভাঙন থামছে না।

১২ বছর বয়সী রাশেদ বিশ্বাস জানায়, দুপুরে ভাঙন শুরু হয়। হঠাৎ করে তাদের টয়লেট নদীতে হারিয়ে যায়। তখন থেকেই সে তার মা–বাবার সঙ্গে ঘরের আসবাবপত্র বেড়িবাঁধে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছে।

রশিদ ব্যাপারী জানান, তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান। অনেক কষ্ট করে একটু জায়গা রেখে বাড়িটা করেছিলেন। সেটাও এখন নদীতে চলে যাবে। পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় যাবেন জানেন না।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আহাদ জানান, সোমবারের ভাঙনের কোনো তথ্য তাঁদের কাছে নেই। বিষয়টি তিনি জানেনও না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত