Ajker Patrika

দুই শত্রু: দুর্নীতি ও সাম্প্রদায়িকতা

সম্পাদকীয়
দুই শত্রু: দুর্নীতি ও সাম্প্রদায়িকতা

একই দিনে দুটি পৃথক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দুটি বক্তৃতায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। দুর্নীতি যে আমাদের সমাজে এক দুরারোগ্য ব্যাধি হয়ে উঠেছে, এটা নিয়ে বিতর্ক করা অর্থহীন। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, যাঁরা ক্ষমতাবান, তাঁদের কঠোরতা ছাড়া এই ব্যাধি থেকে মুক্ত হওয়ার কোনো উপায় নেই। সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়ার পরও কেন দুর্নীতি না কমে বরং দিনে দিনে বাড়ছে, সেই প্রশ্ন অনেকের মনেই আসে, কিন্তু জবাব দেওয়ার কি কেউ আছেন? কারা, কীভাবে দুর্নীতি করে, তা নিশ্চয়ই কারও অজানা নয়। তার পরও কেন দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা যায় না?

জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের তৃতীয় দিনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ডিসিরা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি তাঁদের দুর্নীতিমুক্ত থাকতে এবং অন্যরা যাতে দুর্নীতির সুযোগ না পায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, দুর্নীতি দেশের উন্নয়নের সবচেয়ে বড় অন্তরায়। দুর্নীতির কারণে টেকসই উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি দুর্নীতিকে উন্নয়নের অন্তরায় হিসেবে উল্লেখ করেছেন বলেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে, বিষয়টি তেমন নয়। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকে অল্পসংখ্যক মানুষ। আর এতে ক্ষতি হয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের। এতে সমাজে বৈষম্য প্রকট হয়, সামাজিক অসন্তোষ বাড়ে, রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হয়। তাই দুর্নীতি অগ্রগতির শত্রু। শত্রুকে রোখা না গেলে বিপদ সবারই। 
একই দিনে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন।

দুর্নীতির সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, প্রয়োজন সবাই মিলে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করা। লড়াই করা প্রয়োজন দুর্নীতির বিরুদ্ধে ও মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে। সবাই একসঙ্গে থেকে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ‘আমাদের সংবিধানের মূল একটি নীতি হলো ধর্মনিরপেক্ষতা, যেটা সংশোধনের ক্ষমতা জাতীয় সংসদেরও নেই। আর এই ধর্মনিরপেক্ষতা মানে এই না যে, আমি মুসলিম মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ত পারব না, আমি হিন্দু মণ্ডপে গিয়ে পূজা করতে পারব না। যে যেই ধর্মেরই হোক না কেন, বাংলার মাটি সবার, সবাই একসঙ্গে বসবাস করব, এটিই হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতার স্পিরিট। কোনো হীনম্মন্যতার প্রশ্ন নেই। এটা ১৯৭১ সালে মীমাংসা হয়ে গেছে। যারা উসকাতে চায়, তারা একাত্তরের স্পিরিটকে বিশ্বাস করে না।’

প্রধান বিচারপতি আরও বলেছেন, ‘বাংলাদেশের আইন-সংস্কৃতি কেমন হবে, সেটা আমাদের সংবিধানে উল্লেখ আছে। কার স্ট্যাটাস কেমন হবে, সেটারও উল্লেখ আছে। আমরা কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠ নই, আবার কেউ সংখ্যালঘুও নই। সবাই আমরা এ দেশের নাগরিক। সবার পরিচয় আমরা বাঙালি।’

বিভাজনের অপচেষ্টায় যারা লিপ্ত, তারাও সাধারণ মানুষের শত্রু, শত্রুদের প্রতিহত করার বিকল্প নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত