Ajker Patrika

উন্নয়নে পিছিয়ে চরের মানুষ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৩৯
উন্নয়নে পিছিয়ে চরের মানুষ

গাইবান্ধার তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র-যমুনাবেষ্টিত ভৌগোলিক এলাকার ৩৫ শতাংশ নদী ও চরাঞ্চল। জেলার মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ মানুষের বসবাস চরাঞ্চলে, যার ৮৫ শতাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে। বন্যা, নদীভাঙন ও শৈত্যপ্রবাহের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে এসব মানুষ জীবনযাপন করে আসছেন। তবে গত তিন দশকে বিভিন্ন এনজিওর পক্ষ থেকে অন্তত হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও দৃশ্যত তেমন উন্নয়ন হয়নি। কৃষিতে কিছুটা সফলতা এলেও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, নারী উন্নয়ন, মাতৃমৃত্যু রোধ, অপুষ্টি, বাল্যবিবাহ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কারিগরি শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তি উন্নয়নে পিছিয়ে এখানকার মানুষ।

তবে চরাঞ্চলের মানুষজন এখন উন্নয়নের পথে হাঁটছেন বলে দাবি করে জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বলেন, সরকারও এখন চর নিয়ে টেকসই পরিকল্পনা করেছ। এ জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ, হাটবাজার গড়ে তোলা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়ালেখার মান বৃদ্ধি, কৃষিতে বিশেষ ভর্তুকি ও গবাদিপশু পালনে কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া চরাঞ্চলে ১০টি আশ্রয়ণ প্রকল্প গ্রহণ ও শতাধিক বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

তিনি আরও দাবি করেন, চরের ভুট্টা ও মরিচ এখন দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। তবে শিক্ষা, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আরও উন্নয়ন করতে হবে বলে তিনি মনে করেন। চরের জন্য পৃথক বোর্ড থাকলে উন্নয়ন দ্রুত হবে। দেশের উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি এনজিওগুলো সহযোগী হিসেবে কাজ করছে।

জানা যায়, জেলার ফুলছড়ি, সদর, সুন্দরগঞ্জ ও সাঘাটা উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের ১৭০টি চর-গ্রাম রয়েছে। প্রতিবছর বন্যায় চরাঞ্চলের প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। আর নদীভাঙনে বছরে গড়ে ৪ হাজার পরিবার বসতভিটা ও জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়। আবার নদীর নাব্যসংকটে নৌকাকেন্দ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থাও সীমিত হয়ে পড়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষায় কিছুটা অগ্রগতি হলেও বেসরকারি উদ্যোগে মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে মাত্র চারটি। এখন পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে কোনো কলেজ গড়ে না ওঠায় উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত চরের ছেলে-মেয়েরা। ইউনিসেফের এক তথ্য অনুযায়ী চরাঞ্চলে স্যানিটেশন, অপুষ্টি, বাল্যবিবাহ ও ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে চরাঞ্চলে বিভিন্ন সংস্থার ২০টির অধিক প্রকল্প চালু রয়েছে। এর আগে শতাধিক স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করেছে।

সাঘাটার উদয়ন স্বাবলম্বী সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শাহাদৎ হোসেন মণ্ডল জানান, চরাঞ্চলের শিক্ষার করুণ অবস্থা, মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ না থাকায় প্রাথমিকে শেষ করেই ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। এতে করে বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রমে যুক্ত হতে বাধ্য হচ্ছে।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণ-উন্নয়ন কেন্দ্রের (জিইউকে) প্রধান নির্বাহী এম আবদুস্ সালাম বলেন, চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে প্রয়োজন গবেষণার আলোকে প্রকল্প গ্রহণ করা। কেননা চরের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় প্রকল্প গ্রহণ করে সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে যোগ করতে হবে।

এম আবদুস্ সালাম দাবি করেন, চরের মানুষজনের দুর্যোগ মোকাবিলা, নারী উন্নয়ন, বাল্যবিবাহ, প্রাথমিক শিক্ষা, স্যানিটেশন, কৃষি ও গবাদিপশু পালনভিত্তিক পারিবারিক আয়-উপার্জন বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত