Ajker Patrika

অঙ্গীকার যেন কাগুজে না হয়

সম্পাদকীয়
অঙ্গীকার যেন কাগুজে না হয়

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। ইশতেহারে অঙ্গীকার করা হয়েছে পরেরবার ক্ষমতায় গেলে বা সরকার গঠন করলে কী কী করা হবে। বুধবার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সিনিয়র নেতা, বিদেশি কূটনীতিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পেশাজীবীসহ সমাজের বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে এই ইশতেহার বা অঙ্গীকারনামা প্রকাশ করেছেন।

সাধারণত প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজনৈতিক দলগুলো প্রথাগতভাবে নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করে থাকে। এটা অনেকটা আনুষ্ঠানিক একটি ব্যাপার বলে মনে হলেও এর গুরুত্ব খাটো করে দেখা উচিত হবে না।

নির্বাচনী ইশতেহার হলো এসব প্রতিশ্রুতির লিখিত রূপ। ধরে নেওয়া হয়, নির্বাচিত হলে ওই দল ও দলের বিজয়ী প্রার্থীরা এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকবেন।

অনেকে মনে করেন, আমাদের দেশে নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ একটা অর্থহীন রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ ইশতেহারে মুখরোচক কথাবার্তা লেখা থাকলেও নির্বাচন হওয়ার পর ইশতেহারের পাতা উল্টে দেখার সময় অনেকেরই হয় না, কোনো ফলোআপও হয় না। সাধারণ মানুষও ইশতেহার নিয়ে খুব মাতামাতি করে বলে মনে হয় না।

তারপরও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার একেবারে গুরুত্বহীন নয়। ভবিষ্যতে রাজনীতি নিয়ে গবেষণার জন্য এটা কাজে লাগবে।

রাষ্ট্র ও সমাজের সব স্তর থেকে ঘুষ-দুর্নীতি উচ্ছেদ, অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং দুর্নীতিবাজদের অবৈধ অর্থ ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করাসহ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ যে ১১টি অগ্রাধিকার ঠিক করেছে, এর মধ্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও কর্মসংস্থান, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া, লাভজনক কৃষির লক্ষ্যে সমন্বিত কৃষিব্যবস্থা, যান্ত্রিকীকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দৃশ্যমান অবকাঠামোর সুবিধা নিয়ে এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে শিল্পের প্রসার ঘটানো, ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানো, নিম্ন আয়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ করা, সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থায় সবাইকে যুক্ত করা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকারিতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা, সাম্প্রদায়িকতা এবং সব ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ রোধ করা এবং সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুরক্ষা ও চর্চার প্রসার ঘটানোর প্রতিশ্রুতি রয়েছে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবতা তো ভিন্ন। ২০১৮ সালের ইশতেহারের বেশ কিছু বিষয় কাগজেই রয়ে গেছে। এবারেরগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হবে, সে নিশ্চয়তা কে দেবে?

২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গ্লানিমুক্ত করেছে। আবার টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকার সময়েও বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার রোধে কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে। কিন্তু এটা কি অস্বীকার করা যাবে যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সবচেয়ে 
বড় ক্ষতিটা হয়েছে আওয়ামী লীগ আমলেই। বিএনপি বারবার নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরে থেকে গণতন্ত্রের এই দুরবস্থাকে ত্বরান্বিত করেছে বটে, তবে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দায়টাই বেশি।

এবারের অঙ্গীকারগুলোও যেন কাগুজে বিষয় হয়ে না থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুর, আবারও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

২০২৬ সালের পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নামের আগে গণহত্যাকারী, ফেসবুকে আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত