Ajker Patrika

পানির নিচে শত হেক্টর জমির আধা পাকা ধান

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ৪৩
পানির নিচে শত হেক্টর জমির আধা পাকা ধান

চলতি মাসে বৃষ্টি হয়নি গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায়। তবে আশপাশের বিভিন্ন জেলার বৃষ্টির পানি যমুনা নদী হয়ে তুরাগ নদে এসে পড়ে। ফলে এ বৃষ্টির পানি ও জোয়ারের কারণে কালিয়াকৈর উপজেলার আশপাশের নিচু এলাকার কৃষিজমি তলিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ পানি বাড়ায় ইতিমধ্যেই বিলের শতাধিক হেক্টর ধানখেত পানির নিচে।

জানা গেছে, উপজেলার মকশ বিল, কালিয়াদহ বিল, রঘুনাথপুর, বোয়ালী বিল, চান পাত্রা, আলুয়া বিলসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১০০ হেক্টর জমির কাঁচা ও আধা পাকা বোরো ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। গত দুই দিনে উপজেলার কালিয়াদহ বিল ও মকশ বিলের আশপাশের নিচু এলাকায় প্রায় আড়াই থেকে তিন হাত পানি বেড়েছে।

পানি বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ খেতের কাঁচা ও আধা পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকেরা। এতে বোরো ধান কাটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। তবে ধান কাটার উপযোগী না হলেও কাঁচা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক কৃষক। অসহায় কৃষকেরা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া বোরো ধান কেটে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

একদিকে জোয়ারের পানিতে জমির ধান নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে ধানকাটা শ্রমিকের মজুরি জনপ্রতি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা দিতে হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে ধান কাটতে হবে—এমন পরিস্থিতি থেকেই বেড়েছে শ্রমিকের মজুরি। সব মিলিয়ে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার প্রায় ১০ হাজার ১৭৫ হেক্টরে বোরো ধান চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং বীজ, সার ও কীটনাশক কৃষকের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকার কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে।

উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের রঘুনাথপুরের রহিম মিয়া বলেন, ‘এই জমিগুলোতে আমাদের মাত্র একটি ফসল অয়, তা-ও আবার জোয়ারের পানি আইয়া ডুবাইয়া গেল। এই সময় পানি আইব স্বপ্নেও ভাইবা দেহি নাই। সারা বছর কী কইরা যে চলমু বুছতাছি না।’

মৌচাক ইউনিয়নের বাঁশতলী গ্রামের চাঁন মিয়া বলেন, ‘আমার মোট চার বিঘা জমিতে ধান লাগাইছিলাম। এর মধ্যে দুই বিঘা জমির ধান পানিতে ডুইবা গেছে। কয় দিন আগেও কোনো পানি আছিল না, দুই দিনে আড়াই-তিন আত পানি বাড়ছে। এহন ধানের চিন্তায় রাইতে ঘুম আহে না। অনেক ট্যাকা লছ অইব, হের লাইগা কাচা ধানই কাইটা ফালাইতাছি।’

চাঁন মিয়া আরও বলেন, ‘হঠাৎ কইরা জোয়ারের পানি আইব, কোনো দিন চিন্তাও করি নাই। এমন কইরা এই সময় যে আমাগো এইহানে পানি আহে, আমার জীবনেও দেহি নাই। এই পানির লিগা আমার অনেক ক্ষতি অইয়া গেল।’

কালিয়াকৈর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, কালিয়াকৈর উপজেলায় এবার ১০ হাজার ১৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে দেড় থেকে দুই হাজার হেক্টর জমি বিভিন্ন বিলের মধ্যে। কয়েক দিন ধরে তুরাগ নদ হয়ে জোয়ারের পানিতে ১০০ হেক্টরের বেশি জমির ধান ডুবে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে। যাঁদের বেশি ক্ষতি হয়েছে, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত