Ajker Patrika

শিক্ষকের মৃত্যুতে কুয়েটে অচলাবস্থা

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ৫৯
শিক্ষকের মৃত্যুতে কুয়েটে অচলাবস্থা

শিক্ষক মো. সেলিম হোসেনের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় দায়ীদের শাস্তির দাবিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট)। গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষকেরা একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেননি। সারা দিনই ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পৃথকভাবে অবস্থান কর্মসূচি ও শোক র‍্যালি করেছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় কুয়েট ক্যাম্পাসের দুর্বার বাংলা পাদদেশে প্রতিবাদ সভা করেছেন শিক্ষক সমিতির নেতারা। এতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রতীক চন্দ্র বিশ্বাস। শিক্ষকেরা বলছেন, অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যু কোনো অবস্থায় স্বাভাবিক ঘটনা নয়। তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করার মধ্যে দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এর আগে সকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমবেত হন শিক্ষকেরা। এরপর বেলা সোয়া ১১টায় প্রতিবাদ র‍্যালি বের করেন।

শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে গতকাল বিকেল ৩টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৪টায় তারা ক্যাম্পাসে শোক র‍্যালি বের করে ।

এদিকে শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটিতে কাজ করতে অসম্মতি প্রকাশ করেছেন এই কমিটির দুই সদস্য অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান এবং অধ্যাপক ড. কল্যাণ কুমার হালাদার। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কুয়েট রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান রহমান ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত বুধবার কুয়েট কর্তৃপক্ষ এই কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্য হলেন অধ্যাপক ড. মো. আরিফুর রহমান।

অধ্যাপক মো. সেলিম হোসেন কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং লালন শাহ হলের প্রভোস্ট ছিলেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে খাবারের জন্য তিনি বাসায় যান। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে তাঁর স্ত্রী লক্ষ্য করেন, সেলিম হোসেন বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। এরপর দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে সিসিটিভিতে দেখা যায় গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুয়েট ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে ড. সেলিম হোসেনকে জেরা করা শুরু করে। পরে তাঁকে অনুসরণের পর তাঁর ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করে। তাঁরা আনুমানিক আধা ঘণ্টা ড. সেলিম হোসেনের সঙ্গে রুদ্ধদার বৈঠক করেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, ওই সময় তাকে অপদস্থ করা হয়েছে যে কারণে তার মৃত্যু হয়। দোষীদের বিচারের দাবিতে গত দুই দিন কুয়েট ক্যাম্পাস রয়েছে উত্তপ্ত। শিক্ষক পরিষদ গত বুধবার ঘোষণা করেছে যে, দোষীদের শাস্তি না দেওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম অংশ নেবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত