Ajker Patrika

আমবাগান কেটে পুকুর

চারঘাট প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২২, ২২: ৩৪
আমবাগান কেটে পুকুর

ফসলি জমির পর এবার চারঘাটের আমবাগানে থাবা পড়েছে পুকুর খননকারীদের। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আমবাগান ধ্বংস করে সেখানে রাতারাতি খনন করা হচ্ছে পুকুর।

নিয়মের তোয়াক্কা না করে এভাবে পুকুর খননে সাবাড় হচ্ছে আমসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের বাগান। এতে জমির মালিকেরা সাময়িকভাবে লাভবান হলেও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির মুখে পড়ছেন খননকৃত পুকুরের আশপাশে থাকা ফসলি জমির মালিক ও বাগানমালিকেরা।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আমের চেয়ে মাছে বেশি লাভের গল্প শুনিয়ে কৃষকদের জমি নামমাত্র মূল্যে লিজ নিয়ে উপজেলাজুড়ে পুকুর খনন করা হচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের কলাপাড়া, ভায়ালক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের রায়পুর, ইউসুফপুর ইউনিয়নের শ্রীখন্ডী, শলুয়া ইউনিয়নের জাফরপুর ও সরদহ ইউনিয়নের সাদীপুরের আমবাগান নষ্ট করে পুকুর খনন চলছে। অধিকাংশ পুকুর খননকারী বিভিন্ন জমির মালিকদের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে বাগান লিজ নিয়ে গাছ উজাড় করে এসব পুকুর খনন করছেন।

ভায়ালক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জমির মালিক সাইফুল ইসলাম দিনের বেলায় আমবাগান কেটে সাবাড় করে পুকুর খনন করছেন। এ সময় সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার জমি পুকুর খননের জন্য রশিদ নামের একজনকে লিজ দিয়েছি।’ বাগান কেটে পুকুর খনন অবৈধ কি না জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার জমিতে আমি বাগান করব না পুকুর করব, সেটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। তা ছাড়া স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়ে পুকুর খনন করছি। পাশের জমির কারও ক্ষতি হলে সে দায়ভার আমার না।’

এ বিষয়ে পুকুর খননকারী রশিদ আলী বলেন, ‘আমরা মাটি কেটে নিচ্ছি। এ মাটি ভাটায় দেওয়া হচ্ছে। শুধু আমি না, এভাবে আমের বাগান কেটে পুকুর খনন চলছে পুরো উপজেলাজুড়েই।’

স্থানীয় রায়পুর বাজারের ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আশপাশের মাঠগুলোতে অপরিকল্পিত পুকুর খনন হলেও আমাদের মাঠে আমবাগান শোভা পেত। কিন্তু এলাকাবাসীর মতামত উপেক্ষা করে সাইফুল ইসলাম পুকুর খনন করছেন। এতে আশপাশের বাগানগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন চারঘাট শাখার সভাপতি মো. কামরুজ্জামান বলেন, দিনে অভিযান চালিয়ে যেই পুকুর খনন বন্ধ করা হয়, রাতেই আবার সেই পুকুর খনন করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করছেন। গত পাঁচ বছরে শুধু রাজশাহী জেলায় কৃষিজমি কমেছে ১৫ হাজার হেক্টর। পুকুর খননের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন লাখো কৃষক। চারঘাটের কৃষকেরাও পুকুর খননের বিরুদ্ধে নানা রকম কর্মসূচি পালন করছেন। কিন্তু পুকুর খননকারী সিন্ডিকেট ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার বলেন, কৃষিজমি বা বাগান নষ্ট করে পুকুর খনন সম্পূর্ণরূপে অবৈধ। গত কয়েক বছরে চারঘাট উপজেলায় প্রতিনিয়ত কৃষিজমি কমছে। জলাবদ্ধতায় জমি অনাবাদি হয়ে পড়ছে। সবার স্বার্থেই অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ হওয়া উচিত।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়তি রানি কৈরী বলেন, বাগান কেটে পুকুর খনন সম্পূর্ণভাবেই অবৈধ। উপজেলার যে প্রান্তেই পুকুর খননের সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

প্রশাসনিক আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ ভুল, আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধ সঠিক: বিএনপি

এবার ‘পাকিস্তানপন্থার’ বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ মাহমুদ

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

পাকিস্তানে হামলায় ভারত কি ‘ব্রহ্মস’ ছুড়েছিল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত