Ajker Patrika

ফুটবলারদের ফ্যাশন ব্যক্তিত্ব কেন এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ

হাসনাত শোয়েব, ঢাকা
ফুটবলারদের ফ্যাশন ব্যক্তিত্ব কেন এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ

ফুটবলারদের ফ্যাশনের বিষয়টি একেবারে নতুন কিছু নয়। অনেক বছর ধরে ধীরে ধীরে বিবর্তিত হয়েছে খেলোয়াড়দের ফ্যাশন আইকন হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার বিষয়টি। তবে সেটি হয়তো এখনকার সময়ের মতো এত বেশি গুরুত্বপূর্ণ কখনোই ছিল না। ফুটবল এবং ফ্যাশন এখন নানামুখী সম্পর্কের মধ্য দিয়ে অভিনব এক মিথস্ক্রিয়া গড়ে তুলেছে।

ম্যানচেস্টার সিটি ও কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের সাবেক ডিফেন্ডার নেদুম ওনোওহা যেমনটা বলছিলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে এটা অনেকটাই বদলে গেছে। ২০০০ সালের দিকে আমার ক্যারিয়ার যখন শুরু হয়, তখন এ নিয়ে রীতিমতো উত্ত্যক্ত করা হতো। যদি আপনার জামা-জুতো পছন্দ না হয় তবে আপনাকে জ্বালিয়ে মারত। এসব দিয়েই আপনাকে সব সময় বিচার করা হতো। যে কারণে আপনি এর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতেন।’

ফ্যাশনকে ফুটবলের সঙ্গে এমনভাবে মেশানো হয়েছে, এটা অনেকটা আত্মপরিচয় বা আত্মমর্যাদার বিষয়েও পরিণত হয়েছে। লিডস ইউনাইটেডের সাবেক কোচ ব্রায়ান ক্লাফ একবার বলেছিলেন, তিনি গ্যারি ম্যাকঅ্যালিস্টারকে দলে নেননি; কারণ, চুক্তি নিয়ে কথা বলার জন্য তিনি কাউবয় বুট পরে এসেছিলেন। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন বলেছিলেন, ১৯৯৬ সালের এফএ কাপ ফাইনালে তিনি লিভারপুলকে হারানোর ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন। কারণ, তাঁর প্রতিপক্ষ দল ম্যাচে সাদা স্যুট পরে এসেছিল। ফার্গুসন বলেন, ‘এটা খুবই হাস্যকর। নীল শার্ট, লাল-সাদা টাই, সাদা স্যুট পরা। এটা ডিজাইন কে করেছে? তারা বলল, আরমানি। আমি বলেছিলাম, দেখো, তাদের ব্যবসায় ধস নামবে।’

রয় কিন হেয়ারব্যান্ড পরা বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন রুড ফন নিস্টলরয়কে। কারণ, তিনি তখন প্রিমিয়ার লিগে খেলতে এসেছেন।  
তবে পরিস্থিতি এখন আর আগের মতো নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের উত্থানের কারণে খেলোয়াড়দের ফ্যাশন এখন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ওনোওহা বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মানে প্রত্যেকেরই এখন নিজস্ব ব্র্যান্ড আছে। এখন নিজের ছবি শেয়ার করা খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার।’

ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডের বিষয়টি সামনে আসার পর অনুশীলন মাঠগুলো এখন লেবেল এবং স্টাইল-বার্তায় ভরে গেছে। এমনকি স্টাইলের কারণে খেলোয়াড়দের কটূক্তির মুখেও পড়তে হচ্ছে। ম্যানচেস্টার সিটি তারকা বের্নার্দো সিলভাকে নিয়ে নাকি প্রায়ই মজা করা হয়। তাঁর অপরাধ, তিনি সাধারণ জামা-কাপড় পরে চলাফেরা করেন।

ফ্যাশন হচ্ছে মূলত ব্র্যান্ডের একটি অংশ। ফুটবলারের ফ্যাশন আইকন হওয়ার গুরুত্ব সামনের দিনগুলোতে হয়তো আরও স্পষ্ট হবে। ২০২৬ সালে বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ধারণা করা হচ্ছে, ফুটবল বিশ্বকাপের এক মহাযজ্ঞ হবে সেখানে। মার্কিন সংস্কৃতিতে এমনিতেই খেলাধুলা, ফ্যাশন, সংগীত এবং বিনোদন মূলত এক বিন্দুতে এসে মিশে যায়। ২০২৬ বিশ্বকাপে এটি সবচেয়ে বেশি দেখা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর বিশ্বকাপের সেই মঞ্চে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে বড় বড় ফ্যাশন-পরাশক্তি। সেখানে তাঁরাই বড় তারকা হিসেবে আবির্ভূত হবেন, যাঁরা কিনা আগামী কয়েক বছরে নিজেদের আলাদা আইকন হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন। আর বর্তমান প্রজন্ম ফ্যাশন বলতে ফ্যাশনই বোঝে না, তারা ফুটবলারদের জীবনধারার মধ্য দিয়েও প্রভাবিত হয়ে থাকে। সেটিও এখন ফ্যাশনের অংশ।

এই জায়গাটিতে হয়তো অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকবেন আর্লিং হালান্ড ও কিলিয়ান এমবাপ্পের মতো তারকারা। যাঁরা মাঠের নৈপুণ্যের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ সরব। নতুন প্রজন্মও তাঁদের দ্বারা দারুণভাবে প্রভাবিত। আর এই তারকাদের এমন ভক্ত-সমর্থক আছে, যার খোঁজ ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোও করে। আর এই অনুসারীদের নিশ্চয় ভবিষ্যতের ভোক্তা হিসেবে তৈরি করতে চাইবে ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো। দি অ্যাথলেটিক অবলম্বনে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত