Ajker Patrika

খেয়াঘাটের অবস্থা নাজুক

দাকোপ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ মে ২০২২, ১৩: ০৪
খেয়াঘাটের অবস্থা নাজুক

দাকোপের বাজুয়া দিগরাজ খেয়াঘাটের অবস্থা নাজুক। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে এ ঘাটটি এখন ভাঙাচোরা মনে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে এ ঘাট দিয়ে পশুর নদী পার হচ্ছেন হাজারো মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা শিগগিরই ঘাটটি সংস্কার করা না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দ্রুত সময়ের মধ্যে খেয়াঘাটটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাজুয়া দিগরাজ ঘাটটি আন্তজেলা খেয়াঘাট। এ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে দাকোপ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও বাগেরহাট জেলার দিগরাজ এলাকার হাজারো মানুষ। খেয়াঘাটটি ইজারা দিয়ে সরকার প্রতি বছর প্রায় অর্ধকোটি টাকা রাজস্ব আয় করে থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিন বেহাল পড়ে থাকায় এ ঘাট দিয়ে নদী পার হতে আসা মানুষকে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।

জানা গেছে, খেয়াঘাটটির অবস্থা খুবই নাজুক। নদীতে চর পড়ে যাওয়ায় বাঁশ দিয়ে লম্বা সাঁকো তৈরি করা হয়েছে, যার অবস্থাও খুব খারাপ। ভাঙা ও নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোটি দিয়েই যাত্রীদের নৌকায় উঠতে হচ্ছে। বিশেষ করে ভাটার সময় নারী, শিশু, রোগী, সাধারণ মানুষসহ বাইসাইকেল, ভ্যান, মোটরসাইকেল পারাপার করতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

কথা হয় নদী পার হতে আসা শেখ শামিম হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘খেয়াঘাটটির সংস্কারে কারও মাথাব্যথা নেই। প্রতিদিন শত শত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ ঘাট দিয়ে নদী পার হন। ভাটার সময় এখান থেকে নদী পার হতে হলে হয় কাদা ভেঙে ট্রলারে ওঠানামা করতে হয়। শিগগিরই এ সমস্যা সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছি।’

কৈলাশগঞ্জ বুড়িরডাবুর এলাকার মাছ ব্যবসায়ী অরুণ সরকার বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন মাছ নিয়ে এ খেয়াঘাট দিয়ে নদী পার হয়ে দিগরাজ মাছের আড়তে যাই। ঘাটটির অবস্থা অনেক খারাপ হওয়ায় মাছ নিয়ে নদী পার হতে অনেক সমস্যা হয়। তাছাড়া ঘাটে কোনো সরকারি ভাড়ার তালিকা না থাকায় ঘাট ইজাদারেরা নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করছেন।’

অরুণ সরকার আরও বলেন, ‘আমি প্রতিদিন দিগরাজে আসি মাছ বিক্রি করতে ও যাওয়ার সময় বরফ নিয়ে যাই। ইজারাদারেরা তাঁদের যখন যেমন মনে হয় তেমন ভাড়া দাবি করেন। প্রতিবাদ করতে গেলে মাঝি ও ঘাটের লোকেরা মারতে আসেন। জানি না তাঁরা এত সাহস কোন জায়গা থেকে পান। আমরা জনগণ এদের কাছে জিম্মি হয়ে গেছি।’

যাত্রীদের কাছে থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রলারের মাঝিরা বলেন, ‘জনপ্রতি ১০ টাকা করে ভাড়া নিই। অর্ধেক দিতে হয় ঘাট ইজারাদারকে, আর অর্ধেক পাই আমরা।’

নাম না প্রকাশের শর্তে এক ভাড়া আদায়কারী বলেন, ‘ঘাটে এখন মানুষের ভিড় বেশি। তবে প্রয়োজনের তুলনায় ট্রলারের সংখ্যা কম। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত টাকা নিতে হচ্ছে, এতে আমাদের করার কিছু নাই।’

দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিন্টু বিশ্বাস জানান, খেয়াঘাটটির অবস্থা আসলেই খুব খারাপ। এটি সংস্কারের বিষয়ে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও জানান, কেউ যদি অতিরিক্ত টোল আদায় করে তাহলে শিগগিরই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার বলেন, ‘খেয়াঘাটের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করেছি। বরাদ্দ পেলে শিগগিরই সংস্কারকাজ শুরু হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত