Ajker Patrika

দু-চার দিনেই মাস!

সম্পাদকীয়
দু-চার দিনেই মাস!

বাংলাদেশের প্রায় সব সরকারি অফিস-আদালতেই কম-বেশি দুর্নীতির সংবাদ মাঝেমধ্যে প্রকাশ পায়। সেবা দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষ নেওয়া থেকে শুরু করে সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য বিভিন্ন ধরনের কেনাকাটায় দুর্নীতি হয়ে থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও কাজে গাফিলতির অভিযোগও নতুন নয়।

নতুন কিছু করার তাগিদ থেকেই হয়তো একজন প্রকৌশলী মাসে দু-চার দিন অফিস করে পুরো মাসের বেতন নিয়ে খবর তৈরি করেছেন। ৮ ডিসেম্বর আজকের পত্রিকায় এ-সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে।

প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, চাঁদপুরে রেলের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. হারুন সপ্তাহে এক দিন এসে ছয় দিনের উপস্থিতির অগ্রিম স্বাক্ষর করে মাস শেষে তুলে নেন পুরো মাসের বেতন। তাঁর অধীনে ১২ জন কর্মচারী আছেন। কয়েকজন ছাড়া প্রায় সবাই মাসে নামমাত্র দু-চার দিন হাজিরা দিয়ে পুরো মাসের বেতন তুলে নেন। এই সুবিধার জন্য তাঁরা বেতনের ৩০ শতাংশ তুলে দেন হারুনের হাতে। হারুন ওই অফিসে কয়েকজনকে নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে অনিয়মের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তাঁরা ওই অফিসে কর্মহীনতার একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলেছেন। কে কত দিন কাজ না করে পুরো বেতন নিয়ে সেখান থেকে হারুন ও তাঁর সহযোগীদের কত ভাগ দিয়ে রফা করছেন, সেটা এখন অনেকটা ‘ওপেন সিক্রেট’। রেলের বিদ্যুৎ বিভাগের মতো একটি জরুরি প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তারা দল বেঁধে কীভাবে কাজে ফাঁকি দিতে পারছেন, সেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাবেই হারুনদের মতো ফাঁকিবাজ প্রকৌশলীরা পার পেয়ে যাচ্ছেন।

সরকারি চাকুরেরা যে পদ-পদবির অধিকারী হন না কেন, তাঁরা আসলে রাষ্ট্রের সেবক। তাঁদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয় জনগণের করের টাকায়। অথচ অফিস ফাঁকি দিয়ে বা কাজ না করে বেতন নিয়ে বড় ধরনের অপরাধই করছেন তাঁরা। যেকোনো অপরাধেরই শাস্তি হওয়া বাঞ্ছনীয়। না হলে সব ক্ষেত্রেই বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা তৈরি হয়।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে বিভাগীয় মামলা এবং বরখাস্ত করার নিয়ম আছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ নিয়ম রক্ষা করা হয় না।

সরকার দুর্নীতি রোধে আইন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করেছে। কিন্তু শতভাগ অভিযোগ দুদক আমলে নেয় কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। আবার দুদকের পক্ষ থেকে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠিত হলে ওপরমহলের হস্তক্ষেপের কথাও শোনা যায়। অথচ দুর্নীতি দমন করতে হলে দুদককে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে অপরাধীরা যেন সাজা এড়াতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কয়েকজনের কাজ না করে বেতন নেওয়ার রহস্য প্রকাশের পর তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল

গাজীপুরে রাস্তা বন্ধ করে চলাচল করা সেই পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার

ধর্ষণে মেয়ে গর্ভবতী, বাবার আমৃত্যু কারাদণ্ড

ভারতসহ একসঙ্গে তিন দেশ সামলাবেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত, দিল্লিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নারীর সঙ্গে ঝগড়ার পর রূপসা সেতু থেকে নিচে লাফ দেন সাংবাদিক বুলু: কোস্ট গার্ড

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত