Ajker Patrika

‘সুন্দর ঘর পাইছি, অহন কইতে পারি আমরা ভূমিহীন না’

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর
আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ৩৯
‘সুন্দর ঘর পাইছি, অহন কইতে পারি আমরা ভূমিহীন না’

‘সুন্দর ঘর পাইছি, জমি পাইছি। অহন কইতে পারি আমরা ভূমিহীন না। যা কোনো দিন স্বপ্নেও দেহি নাই। এর থাইক্যা আনন্দের আর কি আছে? এত দিন আমরা মাইনষের বাড়িতে, অন্যের জমিতে খুপরি বানাইয়্যা থাকতাম। আইজ এহানে তো কাল অন্যহানে। কতজনে কত কথা কইছে।’ এভাবে অনুভূতি প্রকাশ করেন মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমিসহ ঘর পাওয়া বৃদ্ধা আছিয়া বেগম।

পেয়ারপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে তোলা হয়েছে সারি সারি ঘর। সুন্দর এবং মজবুত এসব ঘরের পেছনে-সামনে নানা জাতের গাছ রোপণ করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরের সামনে রয়েছে খোলা জায়গা। কেউ সেই জায়গায় বাগান করেছেন, কেউ সবজি চাষ করেছেন, কেউ আবার নির্মাণ করেছেন দৃষ্টিনন্দন তোরণ। আশ্রয়ণ প্রকল্পে রয়েছে বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ-সুবিধা। বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে প্রতি ১০ পরিবারের জন্য স্থাপন করা হয়েছে একটি করে গভীর নলকূপ।

সুবিধাভোগী আবদুল ওয়াহেদ তালুকদার বলেন, ‘এখানের ঘরগুলো বেশ টেকসই। অন্য জেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের ক্ষেত্রে যে কথা শুনেছি, তাতে চিন্তায় ছিলাম। সে তুলনায় এখানের ঘরগুলো টেকসই ও সুন্দর।’

আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পাওয়া গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে আজ সুখে আছি। ঘরের সামনের গেট বানিয়ে রং করেছি; যাতে আরও সুন্দর দেখায়।’

মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দুই দফায় ১৭৫টি ঘর বরাদ্দ পেয়েছি। এর মধ্যে ১০০টি ঘর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারকে ২ শতাংশ জমিসহ ঘর সুবিধাভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ৭৫টি ঘরের নির্মাণকাজ চলছে। কাজ শেষ হলে তা হস্তান্তর করা হবে।’

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাইনউদ্দিন বলেন, ‘সরকারি তত্ত্বাবধানে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। আরও পরিকল্পনা আছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগী পরিবারের সন্তানেরা যাতে লেখাপড়া শিখতে পারে, সে জন্য প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হবে। এ জন্য স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। মাটি দিয়ে জায়গা ভরাটের কাজ চলছে।’

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ঘরগুলো নির্মাণ করায় এর গুণগতমান ভালো হয়েছে। দেশের কয়েকটি জেলার আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর নির্মাণে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এরপরে সরকার কিছুটা বরাদ্দ বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে আশা করি দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের ঘরগুলো আরও উন্নতমানের হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত