Ajker Patrika

৯ হাজার গ্রাহকের ভোগান্তি

আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২১, ১০: ৫৩
৯ হাজার গ্রাহকের ভোগান্তি

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি বিমা প্রতিষ্ঠান বাউফল উপজেলায় গ্রাহকদের আমানতের টাকা আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকদের বিমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও কর্তৃপক্ষ ওই টাকা গ্রাহকদের ফেরত দিচ্ছে না। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন প্রায় ৯ হাজার গ্রাহক।

অভিযোগ রয়েছে, যেসব গ্রাহক উপজেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের চাহিদা মতন ঘুষ দিতে পারছেন, তাদের আমানতের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির এসবি (সেভিংস) ও একক বিমা নামে দুইটি প্রকল্প চলছে। বাউফল জোনাল অফিসে এসবি বিমায় প্রায় ৩০ হাজার ও একক বিমায় প্রায় ৯ হাজার গ্রাহক রয়েছেন।

এর মধ্যে ২০২০ সালে এসবি প্রকল্পে ৭ হাজার ও একক বিমা প্রকল্পে ২ হাজার গ্রাহকের বিমা মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। এসব গ্রাহকের বিমা দাবির পরিমাণ প্রায় ১৩৫ কোটি টাকা।

পৌর শহরের বাসিন্দা রানু বেগম অভিযোগ করেন, তিনি দরিদ্র পরিবারের গৃহবধূ। উপজেলার সদরে ঘরভাড়া করে স্বামী–সন্তানদের নিয়ে থাকেন। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ১০ বছর মেয়াদি এসবি বিমা প্রকল্পে টাকা জমা রাখেন। বিমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে ২০২০ সালে। টাকা পেতে এক বছর ধরে অফিসের বারান্দায় ঘুরছেন তিনি। গত সোমবার ফারইস্টের মাঠ উন্নয়ন কর্মকর্তা আবুল হোসেন ও ম্যানেজার (এসবি) মেজবা উদ্দিন বাদল তাঁর বাসায় গিয়ে ৩ হাজার টাকা দাবি করেন।

আমেনা বেগম নামে এক গ্রাহক বলেন, ‘খোরপোষের একাংশ বিমা হিসেবে জমিয়েছি একটি বাড়ি তৈরির আশায়। কিন্তু বিমার টাকা পাব কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’

সালমা বেগম নামে এক গ্রাহক বলেন, ‘মাসে ২ হাজার টাকা করে ২ বছর ধরে বিমা পলিসি করেছি। কবে টাকা পাব, আদৌ পাব কি না, কিছুই বলছেন না তারা। কষ্টার্জিত আয়ের অংশ বিমা পলিসিতে জমা করে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এখন দুশ্চিন্তা নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী গ্রাহকের কাছে সংরক্ষিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মাঠ উন্নয়ন কর্মকর্তা আবুল হোসেন আঞ্চলিক ভাষায় কু–ইঙ্গিত করছেন ওই নারীকে। একপর্যায়ে ওই কর্মকর্তা বলছেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গেলেও টাকা পাবে না। টাকা দেবে সরকার। যুবলীগ–আওয়ামী লীগের নেতাদেরও অফিস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। আরডিবি–যুবক পালিয়েছে, কেউ কিছু করতে পারছে কি? ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স সরকারি প্রতিষ্ঠান, কেউ কিছুই করতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ হলেই জরুরি টাকা পাওয়া যায়।’

অভিযোগের ঘটনায় আবুল হোসেন বলেন, ‘কোনো গ্রাহকের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলা হয়নি।’

ম্যানেজার (এসবি পলিসি) মেজবা উদ্দিন বাদল ফোনে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তা পদে পরিবর্তন আসায় গ্রাহকের অর্থ দিতে পারছি না। ডিসেম্বরের মধ্যে বিমা দাবির অর্থ গ্রাহকদের দেওয়া হবে, এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নাই।’

উপজেলা ম্যানেজার (একক বিমা) শাহদাত হোসেন বলেন, ‘গ্রাহক বিমা দাবির জন্য সরাসরি ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলবেন। কেউ ঘুষ চাইলে তা দেওয়া যাবে না।’

এ ঘটনায় জোনাল ম্যানেজার খায়রুল কবির বলেন, ‘কেউ ঘুষ চাইতে পারবে না। রিজার্ভ কম থাকায় বিমা দাবির টাকা দিতে সমস্যা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

সেদ্ধ ডিমের খোসা ছাড়ানোর সহজ উপায় জানালেন বিজ্ঞানীরা

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত