Ajker Patrika

চাল পাবেন এক-তৃতীয়াংশ জেলে

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
চাল পাবেন এক-তৃতীয়াংশ জেলে

মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান প্রায় শেষের দিকে। এখনো সরকারি সহায়তা পাননি রাজবাড়ীর বেশির ভাগ জেলে। জেলার ১৩ হাজার জেলের মধ্যে চাল বরাদ্দের জন্য তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে ৪ হাজার ৭০০ জনের। সেটাও এখনো মেলেনি অনেকের ভাগ্যে। জেলার দুই উপজেলার কিছুসংখ্যক জেলে পেয়েছেন সরকারি বরাদ্দের চাল। তবে সেখানেও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। সরকারি সহায়তাবঞ্চিত বেকার জেলেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক জেলে বেকার হয়ে পড়ায় অলস সময় পার করছেন। কেউ বসে গল্প করছেন। কেউ তাস, কেউ লুডু খেলছেন, কেউবা ছেঁড়া জাল মেরামত করছেন। এদিকে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে স্পিডবোটে ও ট্রলারে করে অভিযান চালাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার জেলে সাহেব উদ্দিন জানান, স্ত্রী ও দুই ছেলেসহ আটজনের পরিবার তার। তাঁরা দুই ভাই পেশায় মৎস্যজীবী। তালিকায়ও নাম আছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো সহায়তা তাঁরা পাননি। নদীতে মাছ শিকার নিষিদ্ধ করায় তাঁরা বাড়িতে বেকার সময় কাটাচ্ছেন। ধারদেনা করে সংসার চালাচ্ছেন। ধারদেনার টাকা ফুরিয়ে গেলে সওদা কিনতে হয় বাকিতে। দোকানদার বাকি দিতে চায় না। জোরজবরদস্তি করে সওদা নেন।

সাহেব উদ্দিন অভিযোগ করেন, সরকারি নির্দেশনা তাঁরা ঠিকই মানছেন; কিন্তু অনেকেই দিনরাতে লুকিয়ে নদীতে মাছ ধরছেন।

কালুখালী উপজেলার জেলে মিরাজ খান বলেন, ‘আমি ৩০ বছর ধরে নদীতে মাছ ধরি, আজ পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাইনি। চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে অনেক বলেছি একটি কার্ডের জন্য। তাঁরা বলেছেন করে দেবেন; কিন্তু আজ পর্যন্ত হয়নি।’

আরেক জেলে মিলন হালদার বলেন, প্রকৃত জেলেরা চাল পায় না। চাল পায় ভ‍্যানচালক, অটোচালক, দোকানদারেরা।

জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী সদর, কালুখালী ও পাংশা—এই চার উপজেলায় তালিকাভুক্ত জেলের সংখ্যা ১৩ হাজার ৩৩৮ জন। এর মধ্যে সরকারি সহায়তাপ্রাপ্তির জন্য ৪ হাজার ৭০০ জনের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। জেলার কালুখালী ও গোয়ালন্দ উপজেলায় চাল বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। রাজবাড়ী সদরের ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে দাদশী ও চন্দনী ইউনিয়নে গত বৃহস্পতিবার দেওয়া হয়েছে। বাকি ইউনিয়নগুলোতে আজ শনিবার দেওয়ার কথা।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, গোয়ালন্দ ও কালুখালী—এই দুই উপজেলায় প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি  সরকারি বরাদ্দের চাল দেওয়া হয়েছে। সদর উপজেলার চন্দনী ও দাদশী ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার চাল দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবারের মধ্যে বাকিদের দেওয়া হবে।

মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, চলতি ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে ৭ থেকে ২০ অক্টোবর সকাল পর্যন্ত জেলা মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে ১২৯টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। মামলা হয়েছে ৫৪টি। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ৩৫ জেলেকে। জরিমানা আদায় করা হয়েছে মোট ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। মাছ উদ্ধার হয়েছে ১৭১ কেজি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত