Ajker Patrika

ঢুলিদের উৎসবের আমেজ

ইমাম হাসান মুক্তি, লালপুর (নাটোর)
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬: ১২
ঢুলিদের উৎসবের আমেজ

সুনিল চন্দ্র দাস (৬৫)। একজন পেশাদার ঢাকি। ঢাকঢোল মেরামতের মিস্ত্রিও তিনি। আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাক মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাপ-দাদা বংশপরম্পরায় প্রায় ২০০ বছর ধরে এ পেশায় জড়িত।

এ বছর নাটোরের লালপুরের রায়পুর দাসপাড়ার (ঢুলিপাড়া) ২১ জন ও আটঘরিয়া দক্ষিণ দাসপাড়ার ৯ জন ঢাকি বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ঢাক বাজানোর চুক্তি নিয়েছেন। হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজাকে স্বাগত জানাতে ঢুলিদের এ ব্যস্ততা।

সরেজমিনে রায়পুর দাসপাড়ায় দেখা যায়, সুনিল চন্দ্র দাস ঢাক মেরামতের জন্য বাঁশের বাতা তৈরি করছেন। ঢাকিরা ঢাকঢোল বাজিয়ে পরীক্ষা করছেন। গ্রামের নারী-শিশু, বয়োবৃদ্ধ সবাই ভিড় করে বাজনা উপভোগ করছেন। পাড়াজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এ বছর পাড়ার ২১ জন ঢুলি বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ডাক পেয়েছেন। প্রতি মণ্ডপে দুজন করে পূজার পাঁচ দিনের জন্য ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা চুক্তিতে ঢাক বাজাবেন।

খগেন চন্দ্র দাস (৭৫) বলেন, বাপ-দাদারা বংশপরম্পরায় প্রায় ২০০ বছর ধরে এ পেশায় জড়িত। পূজা ছাড়াও বিয়েতে তিন-চার দিনের জন্য পাঁচজনের দল ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বাজনার চুক্তি নেন। অন্য সময় তাঁদের প্রধান পেশা চর্মকার (মুচি)।

ঢুলিপাড়ার দলনেতা অজিত চন্দ্র দাস (৪২) বলেন, একটি ছোট ঢাকের দাম ৪ হাজার টাকা। বড় ঢাক কাঠের তৈরি ১৪ হাজার আর টিনের পড়ে ৫ হাজার টাকা। বিয়ে ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিটি ঢোল ৮ হাজার টাকা, কর্ণেক বাঁশি সাধারণ ১১ হাজার, সাইড ড্রাম ৪ হাজার, ঝুমকা ৫০০, ঝাঁজ আড়াই হাজার, ক্যাসিও ১২ হাজার, ফ্লট ৮ হাজার টাকার যন্ত্রপাতি লাগে।

অজিত চন্দ্র দাস আরও বলেন, ‘এসব যন্ত্র এককভাবে কেনার সামর্থ্য নেই। এত টাকা পাব কোথায়। উপার্জনের সব দিয়ে এসব কিনলে খাব কী?’

আটঘরিয়া দক্ষিণ দাসপাড়া গ্রামের ঢুলি বসু চন্দ্র দাস (৫২) বলেন, তিনি ঢাকঢোল নিজেই মেরামত করেন। ঢাক মেরামতের জন্য প্রতিটি চামড়া ৩৫০ টাকায় কিনে আনেন। পূজার জন্য ঢাক মেরামত করছেন।

উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার পাল বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ বছর লালপুরে ৪২টি মন্দিরে দুর্গাপূজা উদ্‌যাপিত হবে। পূজা শুরু হবে আগামী ১১ অক্টোবর, আর প্রতিমা বিসর্জন ১৫ অক্টোবর।

নাটোর জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ বলেন, জেলায় ৩৮৩টি মণ্ডপে উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত