Ajker Patrika

বিচার চেয়ে গ্রামবাসীর বিক্ষোভ

ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৫২
বিচার চেয়ে গ্রামবাসীর বিক্ষোভ

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় মাছচাষি দানেজ আলীকে (৫৫) কুপিয়ে হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন গ্রামবাসী। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় ভেড়ামারা-দৌলতপুর মহাসড়কে প্রেসক্লাবের সামনে দানেজের মরদেহ নিয়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন হয়। পরে গ্রামবাসী ও তাঁর স্বজনেরা মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন। এদিকে এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের বিলশুকা গ্রামের দানেজকে একা পেয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় দানেজের ছেলে উজ্জ্বল ভেড়ামারা থানায় ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

বিক্ষোভে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় তাঁরা দানেজ হত্যায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। বিক্ষোভকারীরা হত্যার প্রধান আসামি জিয়াসহ অন্যদের ফাঁসি দাবি করেন।

মানববন্ধনে নিহত দানেজের ছেলে ও মামলার বাদী উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি আসামিরা আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমার বাবা, ভাই ও আমি আহত হই। সে ঘটনায় বাবা দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হন। জিয়াসহ জড়িতদের আসামি করে মামলা করলে জামিন নিয়ে এসেই তারা আমাদের হত্যার হুমকি দিতে থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জানতে পেরেছি, কয়েক দিন আগে আসামিরা সাইফুল নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে মিটিং করে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, বাবাসহ ৬ জনকে বিভিন্ন কায়দায় তারা হত্যা করবে। সেটা আমার বাবাকে দিয়েই শুরু করল। এখন আমার পরিবারের সবাই আতঙ্কিত। জিয়া এর আগেও শান্ত (১৯) নামে একজনকে খাবারে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে হত্যা করেছে। এ ব্যাপারে নিহতের মা রাশি খাতুন মামলাও করেছেন। তাকেও হুমকি–ধমকি দেওয়া হয়। তার বিভিন্ন অপকর্মে আমার বাবা প্রতিবাদ করলে তিনি টার্গেটে পরিণত হন।’

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন শান্তর মা রাশি খাতুন। তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘৬ বছর আগে আমার একটি মাত্র সন্তান শান্তকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খাবারের মধ্যে বিষ খাইয়ে হত্যা করেছে। মামলা করেছি কিন্তু বিচারের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে হুমকি–ধমকি দিয়েই আসছে মামলা তুলে নিতে। সন্তান হারিয়ে আমার স্বামী এখন মানসিক রোগী। আমার কেউই নেই। সন্তান হত্যার বিচার চাইতে এসেছি। জিয়ার ফাঁসি চাই।’

বিলশুকা গ্রামের রূপালি ও দৃষ্টি খাতুন বলেন, ‘দানেজের নিথর দেহ মাটিতে পড়ে থাকার সময় জিয়া ও তার ছেলে একাধিক বার মুখে লাথি মারে আর বলে এখনো মরছিস না কেন, মর মর। জিয়াসহ এসব খুনিদের ফাঁসি চাই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসী বলেন, জিয়া ও তার লোকজন গ্রামের মানুষকে নির্যাতন, হয়রানি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত। প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে এসব করতেন তারা। কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাননি। দানেজ এসবের প্রতিবাদ করলে জিয়া ক্ষিপ্ত হয়। জিয়াসহ সব জড়িতদের ফাঁসি চাই।

উজ্জ্বল আরও বলেন, এজাহার নামীয় আসামি ছাড়াও হত্যার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে আরও ব্যক্তি জড়িত রয়েছে, বিষয়টি পরে জেনেছি। তাদের নাম থানায় জানানো হবে।

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব। মামলায় এজাহার নামীয় আসামি ছাড়াও কেউ জড়িত থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধেও তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত