Ajker Patrika

প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি

শিপুল ইসলাম, তারাগঞ্জ
আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২১, ১৪: ২৮
প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি

তারাগঞ্জের পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন হবে ২৮ নভেম্বর। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে প্রচার। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে চলছে নির্বাচনী সভা। পাশাপাশি প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। পাওয়া যাচ্ছে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩০ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন আওয়ামী লীগের পাঁচ, জাতীয় পার্টির এক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পাঁচ, জাসদের এক ও স্বতন্ত্র ১৮ প্রার্থী।

গতকাল বৃহস্পতিবার সয়ার ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিউদ্দিন আজম নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত। তিনি বলেন, ‘গত পাঁচ বছর জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছি। ভিজিডি, ভিজিএফ, বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতাসহ সরকারি সব সহযোগিতা সঠিকভাবে বিতরণ করেছি। এবার নির্বাচিত হলে কিছু অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করব। রাস্তাঘাটেরও উন্নয়ন করব।’

একই ইউনিয়নের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আল ইবাদত হোসেন বুড়িরহাট গ্রামে ভোট চাইতে গিয়ে বলেন, ‘জয়ী হতে পারলে এলাকার চিত্র বদলে দেব। সারা জীবন আপনাদের বিপদ-আপদে পাশে থাকব। গরিবের হক মেরে খাব না। সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করব।’

কুর্শা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আফজালুল হক ঘনিরামপুর গ্রামে প্রচারে গিয়ে জানান, গত পাঁচ বছরে এলাকায় অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। চুরি, ডাকাতি বন্ধ করেছেন। এবার কিছু অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য প্রার্থী হয়েছেন। জনগণ নির্বাচিত করলে সে সব কাজ শেষ করবেন।

ইকরচালী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস উদ্দিনকে দেখা গেল কাঁচনা গ্রামে প্রচার চালাতে। তিনি দাবি করেন, গত নির্বাচনে দেড় শ ভোটের জন্য বিজয়ী হতে পারেননি।

ইদ্রিস বলেন, ‘নির্বাচিত হতে পারলে এলাকার বড় সমস্যাগুলো আগে সমাধান করব। ঘুষ ছাড়াই ভিজিডি, ভিজিএফ, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড করে দেব। কোনো সরকারি কাজে একটি পয়সাও নিব না।’

আলমপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন রবিউল ইসলাম রাসেল। তিনি দোয়ালীপাড়া গ্রামে ভোট চাইতে গিয়ে বলেন, ‘একবার সুযোগ দেন, আলমপুর ইউনিয়নের চিত্র বদলে দেব। ইউনিয়নকে দারিদ্র্যমুক্ত করব।’

তবে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরিতে খুব একটা ভরসা পাচ্ছেন না ভোটারেরা। হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের সরকারপাড়া গ্রামের মন্নুজা বেগম বলেন, ‘ভোট আলছে, চেয়ারম্যান-মেম্বারেরা বাড়ি আসি ওমার মার্কাত ভোট চাওছে। কওচে ওমাক ভোট দিলে হামার উন্নয়ন হইবে। রাস্তা পাকা করবে, মাংনায় ভাতা করি দিবে। চাল-ডাল দিবে। কিন্তু ভোট গেইলে তো আর ওমরা এগলা কথা মনে থোয় না। সউগ ভুলি যায়। এবার দেখি শুনি সৎ মাইনসোক ভোট দিমো।’

শুধু প্রার্থীর মিষ্টি কথায় ভোট দেবেন না বলে জানান ইকরচালীর জগদীশপুর গ্রামের এমদাদুল হক। তিনি বলেন, ‘দেখি, শুনি ভোট দেইম। যায় বাল্যবিয়াও ঠেকেবার পাইবে, টাকা ছাড়া রিলিফ দেবে, গরিব দুখির কষ্ট বুঝবে, হামার গ্রামের উন্নতি করবে তাঁর মার্কা ভোট দেইম।’

সয়ারের হাজীরহাট গ্রামের দিনমজুর একরামুল হক আক্ষেপ করে বলেন, ‘ভোট আইলে প্রার্থীরা হামার কাচত আইসে, রাস্তাঘাটে দেখা হইলে সালাম দেয়, বুকোত জড়ে ধরি উন্নয়নের করিবার আশাও দেয়। ভোট গেইলে সব কথা ভুলি যায়। নিজের উন্নয়ন নিয়া ব্যস্ত হয়। তাই এবার দেখি শুনি ভোট দিমো। যায় দশের, এলাকার উন্নয়ন করবে তাকে ভোট দিমো।’

প্রচারের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন জানান, প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে নানা কৌশলে ভোট চাইতে পারেন। তবে টাকা দেওয়া, বা কোনো প্রতিষ্ঠানে অর্থসহায়তার বিনিময়ে ভোট চাওয়া আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে। এ রকম অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

ইসরায়েলে ২০ লাখ রুশভাষীর বাস, রাশিয়াকে তাঁদের কথা ভাবতে হয়: পুতিন

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে পরবর্তী ঘোষণার আগপর্যন্ত বাংলাদেশি সব ফ্লাইট বাতিল

ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা কাতারের, পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত