আমরা একটা সুন্দর সময়ে সুবর্ণজয়ন্তী অতিক্রম করছি। এই পঞ্চাশ বছরে আমাদের ওপর দিয়ে অনেক ঝড়, বন্যা, টর্নেডো বয়ে গেছে। রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক জীবনে চলেছে অনেক উত্থান-পতন। প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব করতে গেলে নিক্তির কাঁটা কোন দিকে ঝুঁকবে জানি না। তবে আমার নিক্তিতে প্রাপ্তিযোগ অনেক বেশি। এর কারণ সম্ভবত; আমি তথ্যপ্রযুক্তি জগতের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত আছি, তাই।
আমরা এমন একটা সময় অতিক্রম করছি, যখন সারা বিশ্ব চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এবং এই শিল্পবিপ্লব এর আগের তিনটি শিল্পবিপ্লব থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এর আগের সব কটি শিল্পবিপ্লবে আমরা ছিলাম প্রান্তিক ব্যবহারকারী। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব আবিষ্কারের সুফল পেয়েছি শত বছর পরে। প্রায় সবই ছিল আমাদের অজানা-অচেনা। পক্ষান্তরে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মূল ভিত্তি হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি। সেই সঙ্গে এই শিল্পের মূল উপাদান হচ্ছে যুক্তি আর অঙ্ক। ঐতিহ্যগতভাবে এবং সামাজিক ও নৃতাত্ত্বিকভাবে প্রমাণিত যে আমাদের এই অঞ্চল অঙ্কশাস্ত্রে আর যুক্তিশাস্ত্রে আগাগোড়া এগিয়ে আছে।
দুর্ভাগ্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর এই বিপ্লবের মহড়ায় আমরা যাত্রা শুরু করেছি কিছুটা পরে। যে সময় বিনা মূল্যে সাবমেরিন কেবলের সংযোগ পাওয়া যাচ্ছিল, অর্থাৎ নব্বই দশকের প্রথমার্ধে, তখন আমরা তা প্রত্যাখ্যান করেছি নিরাপত্তাঝুঁকি বিবেচনা করে। বস্তুত এই পদক্ষেপ আমাদের পিছিয়ে দিয়েছে ২০ থেকে ২৫ বছর। এর পরের উল্লম্ফন ও সাফল্যগুলোই এর স্বাক্ষর বহন করে। বাস্তবিক অর্থে তথ্যপ্রযুক্তিশিল্প এবং কম্পিউটার জগতের সঙ্গে আমাদের যাত্রা শুরু নব্বই দশকের শেষভাগ থেকে। শিল্প গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা কমিশন এবং তাদের প্রতিবেদন। গড়ে উঠেছে সফটওয়্যার নির্মাতা কোম্পানি এবং তাদের সংগঠন। লাখ টাকার মোবাইল ফোন অল্প সময়ের মধ্যে হয়ে গেল সবার ব্যবহারিক পণ্য। কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক উপকরণের ওপর কর মওকুফ করা হলো। কম্পিউটার, ল্যাপটপ, নোটবুক চলে এল সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। পাশাপাশি সফটওয়্যার শিল্পের বিকাশের জন্য গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের জন্য শত একর জমি বরাদ্দ করা হলো। যদিও আজ পর্যন্ত সে পার্ক পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি, কিন্তু শুরুটা হয়েছিল তখন থেকেই।
বলা যায় চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে আমরা একাকার হয়ে গেলাম ২০০৮ সালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার রূপকল্প ঘোষণার মধ্য দিয়ে। যদিও শুরুতে এই লক্ষ্য নিয়ে ঠাট্টা, তামাশা, হাস্যরস অনেক হয়েছে, কিন্তু আজ নিশ্চয় সবাই স্বীকার করবেন যে আমাদের জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির নানা উপকরণ ও সেবা। আমরা এখন অজান্তেই মোবাইল ফোন, কম্পিউটার এবং তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর অনেক সেবার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি।
এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলও আওতার বাইরে নয়। সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন উন্নয়ন কেন্দ্র গ্রামীণ জীবন পাল্টে দিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তিসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। বিকাশ, নগদ, উপায় নগর-বন্দর-গ্রাম—সবার জীবন সহজ করে দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের এই মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস অনেক উন্নত দেশের চেয়ে এগিয়ে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের এই ঘোষণাগুলো খুলে দিয়েছে এক অপার সম্ভাবনার দুয়ার। তরুণদের সামনে উন্মোচন করেছে ফ্রিল্যান্সিংয়ের দুনিয়া। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করছে জেলা-উপজেলা, এমনকি গ্রামে বসে।
গত দুই দশক ছিল প্রযুক্তিনির্ভর শিল্প গড়ে ওঠা এবং সেবা প্রদানের উৎকৃষ্ট সময়। কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম বন্দর, রেলওয়েসহ সরকারি দপ্তর ও মন্ত্রণালয়গুলো অটোমেশনের পথে পা বাড়িয়েছে। ই-নথি এখন প্রায় সব সরকারি অফিসে ব্যবহৃত হচ্ছে। টেন্ডারগুলোয় অনুসরণ করা হচ্ছে ই-জিপি (ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট) টুলস। শুধু সফটওয়্যার বা কম্পিউটার ব্যবহার নয়, গত দশকে সামগ্রিকভাবে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে গবেষণা, উদ্ভাবন, চর্চা, আগ্রহ—সবই বেড়েছে। আমাদের দেশ থেকে পাটের জন্মরহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। এর পরপরই বায়ো-ইনফরমেটিকস এবং জিনোমিকসের বেশ কিছু উদ্ভাবন হয়েছে। বেশ কিছু উন্নত মানের গবেষণাগার গড়ে উঠেছে। রোবটিকস প্রতিযোগিতা বা গণিত অলিম্পিয়াডে আমাদের ছেলেমেয়েরা পদক জয় করে আনছে।
সুবর্ণজয়ন্তীর এই মুহূর্তে দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে নেই। আমাদের অনেক দূর যেতে হবে, অনেক কিছু করার আছে। সামনে আছে অপার সম্ভাবনা। সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের দেশ তরুণদের দেশ। এই তারুণ্যের হাতে যদি প্রযুক্তির মশাল ও হাতিয়ার তুলে দিতে পারি, তবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারব; এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকাও। সেটি করার জন্য প্রয়োজন কিছু নীতিগত পদক্ষেপ এবং তার বাস্তবায়ন। শিল্প গড়ে তোলার জন্য ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ স্লোগানের পাশাপাশি কিছু বাস্তব উদ্যোগ নিতে হবে। ভ্যাট-ট্যাক্সের বিষয়টি অনুকূল করতে হবে। শিল্প গড়ে তোলার পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। অ্যাকসেস টু ফাইন্যান্স অর্থাৎ অর্থায়নের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আমাদের দেশের অনেক মেধাবী বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিশিল্পে কাজ করছেন। তাঁদের দেশে এসে কাজ করার পরিবেশ অথবা বিদেশে থেকে দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে।
শিল্পক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে হবে। উচ্চশিক্ষায় ‘আউটকাম বেইজড এডুকেশন’ অর্থাৎ চাহিদা অনুযায়ী মানবসম্পদ তৈরি করার নীতি গ্রহণ করতে হবে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যাতে স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করে এবং একটি ইতিবাচক অবস্থান থাকে, সে ব্যাপারে লক্ষ রাখতে হবে। বিশ্বব্যাপী সাম্প্রতিক অতিমারি আমাদের জীবন ওলট-পালট করে দিয়ে গেছে। আমরা হারিয়েছি অনেককে। এই অতিমারি অনেক ক্ষেত্রেই জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন আনতে বাধ্য করেছে। প্রবল এই ধ্বংসাত্মক এবং তাণ্ডবলীলার মধ্যেও তথ্যপ্রযুক্তি সাহস জুগিয়েছে। আমাদের মনিটরিং, টিকা ও তথ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা অনেক উন্নত দেশের চেয়ে ভালো হয়েছে। আমরা অনলাইন জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি। হোম অফিস, অনলাইনে কেনাকাটা, অনলাইনে সভা-সেমিনার, এমনকি ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনা সত্যিকার অর্থেই নতুন জীবনযাত্রার পথ দেখিয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তির এই পথচলায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের পথ ধরে দেশকে নিয়ে যেতে পারব অন্য এক নতুন স্তরে। ২০৪১ সালে উন্নত অর্থনৈতিক দেশ হওয়ার স্বপ্ন আর স্বপ্ন হয়ে রইবে না, বাস্তব রূপ নেবে। কারণ, সুবর্ণজয়ন্তীতে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব এবং আমাদের তারুণ্য এক সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।
লেখক: তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং এমডি, ডাটাসফট
আমরা একটা সুন্দর সময়ে সুবর্ণজয়ন্তী অতিক্রম করছি। এই পঞ্চাশ বছরে আমাদের ওপর দিয়ে অনেক ঝড়, বন্যা, টর্নেডো বয়ে গেছে। রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক জীবনে চলেছে অনেক উত্থান-পতন। প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব করতে গেলে নিক্তির কাঁটা কোন দিকে ঝুঁকবে জানি না। তবে আমার নিক্তিতে প্রাপ্তিযোগ অনেক বেশি। এর কারণ সম্ভবত; আমি তথ্যপ্রযুক্তি জগতের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত আছি, তাই।
আমরা এমন একটা সময় অতিক্রম করছি, যখন সারা বিশ্ব চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এবং এই শিল্পবিপ্লব এর আগের তিনটি শিল্পবিপ্লব থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এর আগের সব কটি শিল্পবিপ্লবে আমরা ছিলাম প্রান্তিক ব্যবহারকারী। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব আবিষ্কারের সুফল পেয়েছি শত বছর পরে। প্রায় সবই ছিল আমাদের অজানা-অচেনা। পক্ষান্তরে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মূল ভিত্তি হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি। সেই সঙ্গে এই শিল্পের মূল উপাদান হচ্ছে যুক্তি আর অঙ্ক। ঐতিহ্যগতভাবে এবং সামাজিক ও নৃতাত্ত্বিকভাবে প্রমাণিত যে আমাদের এই অঞ্চল অঙ্কশাস্ত্রে আর যুক্তিশাস্ত্রে আগাগোড়া এগিয়ে আছে।
দুর্ভাগ্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর এই বিপ্লবের মহড়ায় আমরা যাত্রা শুরু করেছি কিছুটা পরে। যে সময় বিনা মূল্যে সাবমেরিন কেবলের সংযোগ পাওয়া যাচ্ছিল, অর্থাৎ নব্বই দশকের প্রথমার্ধে, তখন আমরা তা প্রত্যাখ্যান করেছি নিরাপত্তাঝুঁকি বিবেচনা করে। বস্তুত এই পদক্ষেপ আমাদের পিছিয়ে দিয়েছে ২০ থেকে ২৫ বছর। এর পরের উল্লম্ফন ও সাফল্যগুলোই এর স্বাক্ষর বহন করে। বাস্তবিক অর্থে তথ্যপ্রযুক্তিশিল্প এবং কম্পিউটার জগতের সঙ্গে আমাদের যাত্রা শুরু নব্বই দশকের শেষভাগ থেকে। শিল্প গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা কমিশন এবং তাদের প্রতিবেদন। গড়ে উঠেছে সফটওয়্যার নির্মাতা কোম্পানি এবং তাদের সংগঠন। লাখ টাকার মোবাইল ফোন অল্প সময়ের মধ্যে হয়ে গেল সবার ব্যবহারিক পণ্য। কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক উপকরণের ওপর কর মওকুফ করা হলো। কম্পিউটার, ল্যাপটপ, নোটবুক চলে এল সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। পাশাপাশি সফটওয়্যার শিল্পের বিকাশের জন্য গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের জন্য শত একর জমি বরাদ্দ করা হলো। যদিও আজ পর্যন্ত সে পার্ক পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি, কিন্তু শুরুটা হয়েছিল তখন থেকেই।
বলা যায় চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে আমরা একাকার হয়ে গেলাম ২০০৮ সালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার রূপকল্প ঘোষণার মধ্য দিয়ে। যদিও শুরুতে এই লক্ষ্য নিয়ে ঠাট্টা, তামাশা, হাস্যরস অনেক হয়েছে, কিন্তু আজ নিশ্চয় সবাই স্বীকার করবেন যে আমাদের জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির নানা উপকরণ ও সেবা। আমরা এখন অজান্তেই মোবাইল ফোন, কম্পিউটার এবং তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর অনেক সেবার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি।
এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলও আওতার বাইরে নয়। সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন উন্নয়ন কেন্দ্র গ্রামীণ জীবন পাল্টে দিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তিসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। বিকাশ, নগদ, উপায় নগর-বন্দর-গ্রাম—সবার জীবন সহজ করে দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের এই মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস অনেক উন্নত দেশের চেয়ে এগিয়ে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের এই ঘোষণাগুলো খুলে দিয়েছে এক অপার সম্ভাবনার দুয়ার। তরুণদের সামনে উন্মোচন করেছে ফ্রিল্যান্সিংয়ের দুনিয়া। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করছে জেলা-উপজেলা, এমনকি গ্রামে বসে।
গত দুই দশক ছিল প্রযুক্তিনির্ভর শিল্প গড়ে ওঠা এবং সেবা প্রদানের উৎকৃষ্ট সময়। কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম বন্দর, রেলওয়েসহ সরকারি দপ্তর ও মন্ত্রণালয়গুলো অটোমেশনের পথে পা বাড়িয়েছে। ই-নথি এখন প্রায় সব সরকারি অফিসে ব্যবহৃত হচ্ছে। টেন্ডারগুলোয় অনুসরণ করা হচ্ছে ই-জিপি (ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট) টুলস। শুধু সফটওয়্যার বা কম্পিউটার ব্যবহার নয়, গত দশকে সামগ্রিকভাবে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে গবেষণা, উদ্ভাবন, চর্চা, আগ্রহ—সবই বেড়েছে। আমাদের দেশ থেকে পাটের জন্মরহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। এর পরপরই বায়ো-ইনফরমেটিকস এবং জিনোমিকসের বেশ কিছু উদ্ভাবন হয়েছে। বেশ কিছু উন্নত মানের গবেষণাগার গড়ে উঠেছে। রোবটিকস প্রতিযোগিতা বা গণিত অলিম্পিয়াডে আমাদের ছেলেমেয়েরা পদক জয় করে আনছে।
সুবর্ণজয়ন্তীর এই মুহূর্তে দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে নেই। আমাদের অনেক দূর যেতে হবে, অনেক কিছু করার আছে। সামনে আছে অপার সম্ভাবনা। সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের দেশ তরুণদের দেশ। এই তারুণ্যের হাতে যদি প্রযুক্তির মশাল ও হাতিয়ার তুলে দিতে পারি, তবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারব; এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকাও। সেটি করার জন্য প্রয়োজন কিছু নীতিগত পদক্ষেপ এবং তার বাস্তবায়ন। শিল্প গড়ে তোলার জন্য ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ স্লোগানের পাশাপাশি কিছু বাস্তব উদ্যোগ নিতে হবে। ভ্যাট-ট্যাক্সের বিষয়টি অনুকূল করতে হবে। শিল্প গড়ে তোলার পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। অ্যাকসেস টু ফাইন্যান্স অর্থাৎ অর্থায়নের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আমাদের দেশের অনেক মেধাবী বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিশিল্পে কাজ করছেন। তাঁদের দেশে এসে কাজ করার পরিবেশ অথবা বিদেশে থেকে দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে।
শিল্পক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে হবে। উচ্চশিক্ষায় ‘আউটকাম বেইজড এডুকেশন’ অর্থাৎ চাহিদা অনুযায়ী মানবসম্পদ তৈরি করার নীতি গ্রহণ করতে হবে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যাতে স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করে এবং একটি ইতিবাচক অবস্থান থাকে, সে ব্যাপারে লক্ষ রাখতে হবে। বিশ্বব্যাপী সাম্প্রতিক অতিমারি আমাদের জীবন ওলট-পালট করে দিয়ে গেছে। আমরা হারিয়েছি অনেককে। এই অতিমারি অনেক ক্ষেত্রেই জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন আনতে বাধ্য করেছে। প্রবল এই ধ্বংসাত্মক এবং তাণ্ডবলীলার মধ্যেও তথ্যপ্রযুক্তি সাহস জুগিয়েছে। আমাদের মনিটরিং, টিকা ও তথ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা অনেক উন্নত দেশের চেয়ে ভালো হয়েছে। আমরা অনলাইন জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি। হোম অফিস, অনলাইনে কেনাকাটা, অনলাইনে সভা-সেমিনার, এমনকি ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনা সত্যিকার অর্থেই নতুন জীবনযাত্রার পথ দেখিয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তির এই পথচলায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের পথ ধরে দেশকে নিয়ে যেতে পারব অন্য এক নতুন স্তরে। ২০৪১ সালে উন্নত অর্থনৈতিক দেশ হওয়ার স্বপ্ন আর স্বপ্ন হয়ে রইবে না, বাস্তব রূপ নেবে। কারণ, সুবর্ণজয়ন্তীতে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব এবং আমাদের তারুণ্য এক সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।
লেখক: তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং এমডি, ডাটাসফট
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৫ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৫ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৫ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫