Ajker Patrika

বীরগঞ্জের রসগোল্লা

আনিসুল হক জুয়েল, দিনাজপুর
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২২, ১৭: ১৩
বীরগঞ্জের রসগোল্লা

১৯৫৪-৫৫ সালে চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে কাজের সন্ধানে দিনাজপুরের বীরগঞ্জে আসেন মণীন্দ্র নাথ ঘোষ। তারও আগে বার্মায় (বর্তমান মিয়ানমার) চায়নিজদের রেস্তোরাঁয় মিষ্টির কারিগর হিসেবে কাজ করেন তিনি। মণি ঘোষের মামা বীরগঞ্জে রেস্তোরাঁর ব্যবসা করতেন। সেখানে তিনি মিষ্টি বানাতে শুরু করেন। দেশ স্বাধীন হলে বীরগঞ্জের ডাক্তারখানা মাঠসংলগ্ন একটি দোকানে নিজেই মিষ্টির ব্যবসা শুরু করেন তিনি। নাম দেন মানিক মিষ্টান্ন ভান্ডার। সে সময় বীরগঞ্জে গোপাল শাহর মালিকানাধীন তৃপ্তি মিষ্টান্ন ভান্ডার নামে আরেকটি মিষ্টির দোকান ছিল। ২০০২ সালে মণীন্দ্র নাথ মারা যান।

বিভিন্ন কারণে মণীন্দ্র নাথের জীবদ্দশায় মিষ্টির ব্যবসা থেকে সরে আসে তাঁর পরিবার। তবে তিনি জীবিত থাকাকালে তাঁর শ্যালক মনোরঞ্জন ঘোষ আশির দশকের শুরুতে মিষ্টির ব্যবসা শুরু করেন। একসময় ভগ্নিপতির প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিজ্ঞতার সুবাদে সুনাম কুড়ান তিনি। বর্তমানে মানিক মিষ্টান্ন ভান্ডারের আরেক কর্মচারী মৃদুল কান্তি দেব নব্বইয়ের দশকে আরাধনা মিষ্টান্ন ভান্ডার নামে শুরু করেন মিষ্টির ব্যবসা। পরে নাম বদলে নতুন নাম দেন আশা সুইটস।

পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের বীরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে সাধনা মিষ্টান্ন ভান্ডার আর আশা সুইটস। একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, ক্রেতারা মিষ্টির অর্ডার দিচ্ছেন এক কেজি থেকে শুরু করে পাঁচ কেজি, দশ কেজি পর্যন্ত। আবার আপনার সামনেই কেউ যদি এক বা আধা মণ মিষ্টির অর্ডার দেন, অবাক হবেন না।

দোকান দুটোয় সারি সারি ট্রেতে সাজানো রয়েছে হরেক পদের মিষ্টি। সবচেয়ে বেশি চাহিদা রসগোল্লার, যা এখন স্পঞ্জ মিষ্টি নামে পরিচিত। পাশাপাশি আছে মালাইকারি, ইন্দ্রাণী, তপসি, লেলচা ভোগ, রাজভোগ, কালোজাম, ছানার জিলাপি। বাহারি নামের পাশাপাশি স্বাদেও অপূর্ব এসব মিষ্টি। গরুর দুধের ছানা থেকে তৈরি এখানকার মিষ্টির খ্যাতি জেলার গণ্ডি পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়েছে ইতিমধ্যে। দুটো দোকানেই আট-দশজন কর্মচারী কাজ করেন।

আশা সুইটসের বর্তমান স্বত্বাধিকারী মৃদুল কান্তি দেব জানান, বিভিন্ন গ্রাম থেকে দুধ সংগ্রহ করে ছানা তৈরি করা হয়। রাত ৮টার পর শুরু হয় মিষ্টি বানানোর কাজ। চলে মধ্যরাত অবধি। প্রতিদিন তাঁর দোকান তিন-চার মণ মিষ্টি বিক্রি হয়। এগুলোর অর্ধেকের বেশি রসগোল্লা।

সাধনা মিষ্টান্ন ভান্ডারের বর্তমান স্বত্বাধিকারী মনোরঞ্জন ঘোষের ছেলে সুব্রত ঘোষ মাধব জানান, প্রতিদিন নিজ জেলা ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকে ক্রেতারা আসেন মিষ্টি কিনতে। মিষ্টি যায় ঢাকায়ও।

বীরগঞ্জের মিষ্টি ব্যবসায়ীরা জানান, শুধু স্বাদে অনন্য বলেই নয়, বীরগঞ্জের মিষ্টি পুরো দেশে দামেও সেরা (সস্তা)।

দরদাম

প্রতি কেজি স্পঞ্জ মিষ্টি ২২০, মালাইকারি ২৮০, ইন্দ্রাণী ৪০০, তপসি ২৫০, লেলচা ভোগ ২৫০, রাজভোগ ২০০, কালোজাম ২০০ টাকা দামে বিক্রি হয়। ছানার জিলাপি প্রতি পিসের দাম ২০ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত