Ajker Patrika

অনেক ঘাটতি নিয়েই বিশেষায়িত হাসপাতাল

সম্পাদকীয়
অনেক ঘাটতি নিয়েই বিশেষায়িত হাসপাতাল

টাকা ব্যয়ে কেনা চিকিৎসা সরঞ্জাম অব্যবহৃত থাকারও নজির আছে। কলকাতার জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী নচিকেতার বিখ্যাত ‘ও ডাক্তার…’ গানটি শুনলে ডাক্তার সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা তৈরি হয় না। তবে সব পেশার মধ্যে ভালো-খারাপ আছে। তাই মুষ্টিমেয় ডাক্তারের ব্যবসায়িক মনোভাবের কারণে পুরো চিকিৎসক সমাজকে মূল্যায়ন করাও ঠিক হবে না।

আমাদের দেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনা, নৈরাজ্য, প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতা, দক্ষ জনবলের অভাব ও কিছু চিকিৎসকের ব্যবসায়িক মনোবৃত্তির কারণে সুচিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। অসুস্থ মানুষ সুচিকিৎসা পাওয়ার জন্যই হাসপাতালে যায়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের অভিজ্ঞতা সুখকর হয় না। সরকার পরিচালিত বিশেষায়িত হাসপাতালগুলো নিয়ে আজকের পত্রিকায় বুধবার প্রকাশিত সংবাদটি কিছুটা উদ্বেগজনক বৈকি! সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সরকারি হাসপাতালগুলো পরিদর্শনের পর যে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, তাতে একধরনের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। দেশের বেশির ভাগ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর অবস্থা জেলা-উপজেলা হাসপাতালের চেয়ে কোনোভাবেই উন্নত নয়। হাসপাতালগুলোর অধিকাংশ যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার কারণে রোগীদের তেমন কোনো কাজে আসে না। 

আমাদের দেশে অধিকাংশ গরিব মানুষ টাকার অভাবে সরকারি হাসপাতালে যায়। যাদের আর্থিক সংগতি আছে, তারা যায় বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে টাকার বদৌলতে মোটামুটি ভালো মানের চিকিৎসা পাওয়ার ব্যবস্থা আছে। দেশে অধিকাংশ জনের ভাষ্য, বেসরকারির চেয়ে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার মান ভালো। আর কম টাকায় সেখানে চিকিৎসা পাওয়া যায়। কিন্তু বড় সমস্যাটা হলো, সেখানে চ্যানেল না থাকলে সিট পাওয়া, পরীক্ষা, অপারেশনসহ অনেক কিছু যথাসময়ে করা যায় না। আর যদি পরীক্ষার যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকে, তাহলে তো সুচিকিৎসা পাওয়া দুর্লভ ব্যাপার।

দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার সামগ্রিক চিত্র ফুটে উঠেছে এই পরিদর্শনে। যে প্রতিবেদনটি দেওয়া হয়েছে তার আলোকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন হাসপাতালে যন্ত্রপাতি পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য কিছু যন্ত্রপাতি কিনতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনও চাওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগ ইতিবাচক। তবে এটাও আমরা জানি যে আমাদের দেশে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সরকারি অনেক ভালো উদ্যোগও অনেক সময় ভেস্তে যায় বা কার্যকর হয় না। এ ক্ষেত্রে তেমন যেন না হয়।

অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশে সুচিকিৎসা পাওয়া দুর্লভ বিষয় হয়ে উঠেছে। আর এ ব্যবস্থায় পুরোপুরি নৈরাজ্য চলছে। তাই মানুষের মৌলিক অধিকারের অন্যতম চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির পথ আমাদের দেশে মসৃণ ও সহজলভ্য করতে এই প্রতিবেদনের আলোকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। একই সঙ্গে চিকিৎসা খাতে দায়বদ্ধতা, জবাবদিহি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে করণীয়গুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা দরকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

চিকিৎসক হওয়ার আগেই শীর্ষ সবার শীর্ষে

আসামে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ বহাল থাকবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জম্মু-কাশ্মীরে ধ্বংস করা হলো ৪৪ হাজার কেজি রসগোল্লা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত