Ajker Patrika

পাবনা-১: বড় চ্যালেঞ্জ জামায়াতের ‘ভোটব্যাংক’

শাহীন রহমান, পাবনা 
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯: ৩৩
পাবনা-১: বড় চ্যালেঞ্জ জামায়াতের ‘ভোটব্যাংক’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বাকি এক বছর। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর নড়াচড়া। সভা-সমাবেশের পাশাপাশি নানা কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে। মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতি নিয়ে আজকের পত্রিকার নিয়মিত আয়োজন ‘ভোটের মাঠে’। 

দেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামীর কোনো রাজনৈতিক জৌলুশ নেই। তারপরও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-১ (সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলার আংশিক) আসনে দলটির বেশ শক্ত অবস্থান রয়ে গেছে। মতিউর রহমান নিজামী এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৬ সালের মে মাসে তাঁর ফাঁসি কার্যকর হয়। স্বাভাবিকভাবেই দ্বাদশ জাতীয় 
সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাছে জামায়াতের ‘ভোটব্যাংক’ বড় চ্যালেঞ্জ।

সাঁথিয়া উপজেলা এবং বেড়া উপজেলার আংশিক (বেড়া পৌরসভা, হাটুরিয়া-নাকালিয়া, নতুন ভারেঙ্গা, চাকলা ও কৈটোলা ইউনিয়ন) নিয়ে গঠিত পাবনা-১। আসনের বর্তমান এমপি শামসুল হক টুকু ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি। তিনিই দল থেকে মনোনয়ন পাবেন বলে শোনা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সংবিধানপ্রণেতা সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ সংস্কারপন্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত। লড়তে পারেন গণফোরামে যোগ দেওয়া আওয়ামী লীগের সাবেক এই এমপিও। এ ছাড়া সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ার, সদ্য সাবেক রেলসচিব মানবাধিকার কমিশনের সদস্য এম সেলিম রেজা ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য অধ্যাপক আবদুল আওয়ালের নাম শোনা যাচ্ছে।

বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক এমপি মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) মনজুর কাদের, সাঁথিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামছুল ইসলাম ওরফে ভিপি শামছুল, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি সিআইপি ইউনুস আলী, বেড়া উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক রইজ উদ্দিন। শোনা যাচ্ছে, জামায়াতে ইসলামীর নেতা আব্দুল বাসেত খানও এই আসন থেকে লড়তে পারেন।

এই আসনে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পরপর তিনবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুল হক টুকু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জামায়াতের মতিউর রহমান নিজামী এমপি হন। ১৯৯৬ সালে এমপি হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু সাইয়িদ। ২০০১ সালে আবার এমপি হন মতিউর রহমান নিজামী। তবে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের টুকুর কাছে হেরে যান।

২০০৮ সালের নির্বাচনের দিকে তাকালেই জামায়াতের ‘ভোটব্যাংক’-এর বিষয়টি পরিষ্কার হবে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামসুল হক টুকুর কাছে ২১ হাজার ৯০০ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেলেও মতিউর রহমান নিজামী পেয়েছিলেন ১ লাখ ২৩ হাজারের বেশি ভোট। ভোটের মাঠে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের পাশাপাশি এখনো শক্ত অবস্থানে জামায়াত।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এরই মধ্যে প্রার্থীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। প্রার্থী ও তাঁদের অনুসারীরা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। ব্যানার, ফেস্টুন লাগিয়ে দোয়া চাইছেন। ফেসবুকে তাঁদের সরব উপস্থিতি।

বেশি তৎপর বর্তমান এমপি শামসুল হক টুকু। পাবনায় এলেই সভা-সমাবেশে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছাকাছি তাঁকে দেখা যাচ্ছে। অধ্যাপক আবু সাইয়িদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অনেকটাই অন্তরালে। তাঁর অনুসারীরা জানান, তিনি রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হলে নির্বাচনে অংশ নেবেন। সে ক্ষেত্রে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জন্য বিষফোড়া হয়ে দেখা দিতে পারেন।

মনোনয়নপ্রত্যাশী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ার বলেন, ‘যদি জনপ্রিয়তা যাচাই করে নেত্রী মনোনয়ন দেন, তাহলে আমি মনোনয়ন পাব বলে আশাবাদী। বর্তমান এমপি ব্যক্তিগতভাবে কোনো উন্নয়ন করেননি।’

এদিকে বিএনপি এখনো নির্বাচনে আসার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ বিষয়ে বেড়া উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক রইজ উদ্দিন বলেন, আসনটি মূলত বিএনপির। তাঁরা এখন প্রার্থী নিয়ে ভাবছেন না। চলমান আন্দোলনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পর দল যাঁকেই মনোনয়ন দেবে, বিএনপির প্রত্যেক নেতা-কর্মী তাঁর পক্ষে কাজ করে আসনটি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবেন। এই আসনে জাতীয় পার্টির তেমন অবস্থান নেই।

[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন বেড়া উপজেলা প্রতিনিধি মো. ওয়াহিদুজ্জামান ও সাঁথিয়া উপজেলা প্রতিনিধি মো. আবুল কাশেম।]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত