Ajker Patrika

মাদক কারবার ও রাঘববোয়াল

সম্পাদকীয়
মাদক কারবার ও রাঘববোয়াল

হাতে নিয়ে শুরুতেই এই খবরের সঙ্গে পরিচিত হতে হয়েছে পাঠককে। খবরের তথ্য কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে বৈকি—কয়েকজন নয়, কয়েক শ নয়, দেশে মাদক কারবারে জড়িত ৬৬ হাজার ১৮ জন! তাহলে মাদকসেবীর সংখ্যা লাখ লাখ হওয়াটা কোনো ব্যাপারই নয় মনে হচ্ছে।

একটা সময় মাদকবিরোধী ক্যাম্পেইন বা প্রচার-প্রচারণা কম হয়নি এ দেশে—টেলিভিশনে, রেডিওতে কিংবা খবরের কাগজে—বিজ্ঞাপন, নাটিকা, পোস্টার কিংবা দেয়াললিখনের মাধ্যমে। ফলাফল আমরা জানি না। কোনো হিসাব নেই যে এ দেশে কতজন মাদকাসক্ত। তবে মাদক কারবারিদের হিসাব জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। নিয়মিত মাদক কারবারিদের তালিকা হালনাগাদও করা হচ্ছে। এই তালিকার সর্বশেষ হিসাবই সেই ৬৬ হাজার ১৮ জনের।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নিজস্ব তালিকায় মাদক কারবারির সংখ্যা ১৭ হাজার ৬০৩, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তালিকায় ১১ হাজার ১৭৬, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তালিকায় ৩ হাজার ৮৯২, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) তালিকায় ৫ হাজার ৯১, র‍্যাবের তালিকায় ৩ হাজার ২৫, কোস্ট গার্ডের তালিকায় ২ হাজার ৩১ এবং বাংলাদেশ পুলিশের তালিকায় ২৫ হাজার জন রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর মাদক কারবার করে পাওয়া ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা তারাই পাচার করছে। তালিকার সবাই যে সরাসরি মাদক কারবারি তা নয়, এখানে আছে মাদক কারবারের পৃষ্ঠপোষকদের নামও।

নিয়মিত না হয় মাদক কারবারিদের তালিকা হালনাগাদ করা হলো, কিন্তু এর পরের কাজ? তাদের কারবারের বারোটা বাজবে কবে? কিংবা কেইবা বাঁধবে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা? যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। আরও কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

এই আস্থাটুকু আমরা রাখতে চাই। তবে এর আগে সমস্যাকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলা জরুরি। কোনো এক বস্তির কোনো এক ব্যক্তি দুটো মাদকের ‘বড়ি’ বিক্রি করলে শুধু যে তাকে ধরেই শাস্তি দিতে হবে, তা নয়। ওই যে পৃষ্ঠপোষকেরা বসে আছে সমাজের নানা স্তরের সিংহাসনে আর বাহুবলের মাধ্যমে চালিয়ে যাচ্ছে পর্দার পেছনের কাজ, তাদেরও তো শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তাহলেই বাঁধা হবে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ ও পুলিশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুকও একই সুরে বলছেন, তালিকা করাই সমাধান নয়, ধরতে হবে পৃষ্ঠপোষক রাঘববোয়ালদের।

এসব রাঘববোয়াল নিশ্চয়ই দুর্নীতিগ্রস্ত, অসৎ। তাই সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে এমন মানুষদের প্রতিস্থাপন করতে হবে, যাঁরা সৎ। কাজটা যদিও সহজ নয়; তবে ইচ্ছা থাকলে নীতিনির্ধারকেরা সেটাও করে দেখাতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুর, আবারও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

২০২৬ সালের পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নামের আগে গণহত্যাকারী, ফেসবুকে আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত