Ajker Patrika

হ্যামলেটের চোখ

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২২, ০৯: ৪৪
হ্যামলেটের চোখ

লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গেছেন তপন সিংহ। ডার্ক বোগার্ডে বললেন, ‘কাল লাঞ্চের সময় একজনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব।’ তপন সিংহ অপেক্ষায় আছেন। যথাসময়ে যাকে দেখলেন, তিনি আর কেউ নন স্যার লরেন্স অলিভিয়ার! কিংবদন্তি এই অভিনেতা তখন খাচ্ছিলেন। তপন সিংহ বললেন, ‘আমি ভারতের কলকাতা থেকে এসেছি।’

লরেন্স অলিভিয়ার ভারতবর্ষ, কলকাতা এবং কলকাতার নাটক সম্পর্কে জানতে চাইলেন। সব উত্তর দেওয়ার পর তপন সিংহ বললেন, ‘আপনার ছবি দেখেছি।’

লরেন্স বললেন, ‘স-ব?’

তপন সিংহ এক এক করে স্যার লরেন্স অভিনীত ছবির নাম বলে গেলেন।

লরেন্স হাসতে হাসতে বললেন, ‘তার মানে, লেখাপড়া কিছু করোনি, খালি সিনেমা দেখেছ!’ মুখে তাঁর বিখ্যাত সেই হাসিটি।

তপন বললেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে আপনার “সিজার অ্যান্ড ক্লিওপেট্রা” নাটকটি দেখলাম। একটা জিনিস খুব অদ্ভুত লাগল। ভিভিয়ান লি এখন প্রৌঢ়া, কিন্তু চঞ্চলা হরিণীর মতো ক্লিওপেট্রা হয়ে ছোটাছুটি করার সময় দেখে মনে হচ্ছিল, তাঁর বয়স আঠারোর বেশি নয়। বহু আগে আপনার আর ভিভিয়ান লির “লেডি হ্যামিলটন” দেখেছিলাম। প্রথম দৃশ্যে তিনি বৃদ্ধার বেশে অভিনয় করেছিলেন। সারা অঙ্গে দারিদ্র্যের চিহ্ন। তখন তিনি তরুণী।’

অলিভিয়ার বললেন, ‘তখন আমিও তরুণ। অভিনয় করতে এলে শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হয়।’ তপন সিংহের মনে পড়ে গেল অতীন্দ্র চৌধুরীর কথা, ‘দেহ পট সনে নট সকলি হারায়।’

বছর কয়েক পর অলিভিয়ার যখন বৃদ্ধ, শীর্ণ চেহারা তাঁর। তখন লন্ডনের এক টিভি সাক্ষাৎকারে এক তরুণ তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আপনার মতো বিরাট অভিনেতা এত আজেবাজে ছবিতে অভিনয় করেন কেন?’

মুহূর্তে স্যার লরেন্স অলিভিয়ারের চোখ দুটি হ্যামলেটের মতো জ্বলে উঠল। তিনি বললেন, ‘তুমি আমার সংসার চালাবে? আমার ছেলেমেয়ের স্কুল-কলেজের খরচ দেবে?’

সূত্র: তপন সিংহ, মনে পড়ে, পৃষ্ঠা ৪৬-৪৭

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত