Ajker Patrika

পাসপোর্ট বিড়ম্বনা

সম্পাদকীয়
পাসপোর্ট বিড়ম্বনা

পাসপোর্ট করা নিয়ে বিড়ম্বনার কথা নতুন নয়। অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হলেও দালাল ও পুলিশের দৌরাত্ম্য যে কমেনি, সেটা আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত  প্রতিবেদনে আবারও দেখা গেল। অর্থাৎ, অনলাইনে আবেদন করছেন, পাসপোর্টের সবকিছুই নিয়মমাফিক হয়ে যাবে, এমন ভাবার সময় এখনো আসেনি।

অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সেবা খাতের বেশ কিছু বিল জমা দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে ব্যাংকে মানুষের দীর্ঘ সারি আর দেখা যায় না। যে যাঁর মোবাইল ফোন থেকেই বিল দিতে পারছেন। ঝক্কিহীন এই সেবায় উপকৃত হয়েছেন নাগরিকেরা। কিন্তু পাসপোর্টের ব্যাপারটিকে অত সহজ করে দেখা যাচ্ছে না। চোখ ও আঙুলের ছাপের জন্য একবার পাসপোর্ট অফিসে যেতেই হয়। পাসপোর্ট পাওয়ার দিনটিতেও যেতে হয়। অনলাইনে উপস্থিত হওয়ার মেসেজ এলেও অকুস্থলে যাওয়ার পর মানুষের যে দীর্ঘ সারি দেখা যায়, তাতে বুঝতে পারা যায়, ডিজিটাল হওয়া এই সেবা খাতের কাছ থেকে ‘দিল্লি বহুৎ দূর’। চাইলেই কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়া যাবে না। এমনকি বয়োবৃদ্ধদের জন্যও এমন কোনো ব্যবস্থা নেই, যেন তিনি পাসপোর্টের ব্যাপারে অগ্রাধিকার পান।

দালাল প্রসঙ্গটি এসেছে প্রতিবেদনে। লাইনে অযথাই দাঁড়িয়ে থাকেন তাঁরা। টাকার বিনিময়ে লাইনে তাঁর জায়গাটি বিক্রি করেন। একটা জায়গা বিক্রি করতে পারলে ৫০০ টাকা পান। ভেবে দেখুন, বিনা পুঁজিতে এই ব্যবসাটা চলছে। যোগ্যতা আর কিছু নয়, সকাল সকাল এসে পাসপোর্টের সারিতে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। ব্যস! আর কোনো সমস্যা নেই। আবার আরও কিছু দালাল আছেন, যাঁদের দৌড় পাসপোর্ট অফিসের সর্বত্র। তাঁদের মাধ্যমে গেলে যেকোনো জায়গায় দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যায়।

আর পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিষয়টিও বড়ই বেদনাদায়ক। নানাভাবে নাগরিকদের নিরুৎসাহিত করার কত যে ফন্দিফিকির করা হয় এই সেবা নিতে গেলে, তা ভুক্তভোগীমাত্রেই জানেন।

প্রতিবেদনে বিদেশেও পাসপোর্ট বিড়ম্বনা নিয়ে নানা তথ্য উঠে এসেছে।

এই সবকিছু পর্যালোচনা করে পাসপোর্ট পাওয়ার বিষয়টি যে এখন জটিল হয়ে উঠেছে, সেটা সহজেই বোঝা যায়। আমাদের দেশে কেন একজন মানুষ পাসপোর্টের জন্য এত বিড়ম্বনা পোহাবে?

পাসপোর্ট করতে যাওয়ার আগে জনগণেরও কিছু দায়িত্ব আছে। নিজের সম্পর্কে দেওয়া তথ্যে অসংগতি থাকলে তিনি নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনবেন। দরকারি কাগজপত্রে তথ্যে গরমিল থাকলে সে দায় তো সংশ্লিষ্ট মানুষটিকেই নিতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রে তথ্য এক রকম, এসএসসির সনদে অন্য রকম, পাসপোর্টে একেবারে আরেক রকম—এই যদি হয় তথ্যের গরমিল, তাহলে তাঁকে তো ঘুরতে হবেই! এই বিড়ম্বনা যেন না হয়, সে জন্য নিজের তথ্যগুলো ঠিকভাবে উপস্থাপন করা নাগরিক দায়িত্ব।

আর দালাল, পুলিশ ইত্যাদি যে বিড়ম্বনাগুলো আছে, এগুলো থেকে মুক্তির একটাই পথ—পাসপোর্ট প্রাপ্তির সহজ পথ খুঁজে বের করা। অনেক অনাবশ্যক কাজে শিক্ষা নিতে বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠানো হয় সরকারি কর্মচারীদের। সেটা না করে পাসপোর্ট-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পাঠানো হোক প্রশিক্ষণে। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোয় কীভাবে কাজটি সহজে সম্পন্ন হয়, সেটা হাতে-কলমে শিখে আসুক তাঁরা। তাতে অবস্থার উন্নতি ঘটলেও ঘটতে পারে।

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে পরবর্তী ঘোষণার আগপর্যন্ত বাংলাদেশি সব ফ্লাইট বাতিল

ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা কাতারের, পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি

নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা ছাত্রদল কর্মী ইপ্সিতার, ধর্ষণের অভিযোগ আসে ৯৯৯ থেকে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত