বিকল্প সড়কেও কমেনি দুর্ভোগ

দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে ঢাকায় আসার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান গাজীপুরের টঙ্গী-আবদুল্লাহপুর সংযোগ সেতু। গত বুধবার দুই দফায় এ সেতুর কিছু অংশ ভেঙে যাওয়ায় বিকল্প পথে শুরু হয় যান চলাচল। তবে তার আগেই সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের। যানজটে আটকে থেকে অতিষ্ঠ হয়ে হাজারো যাত্রী হেঁটেই পৌঁছান গন্তব্যে।

গত বুধবার ভোরে চারটার দিকে সেতুর কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। এতে সেতুর দুই পাশে কয়েক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। ভাঙা অংশে স্টিলের পাত বসিয়ে বেলা দশটা থেকে সেতুর একপাশ দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়। তখন সেতুটি দিয়ে উভয় পাশ থেকে একটি করে যানবাহন পার করায় যানজট কিছুটা হলেও ছিল।

এদিকে, বুধবার মধ্যরাতে সেতুটির বিভিন্ন স্থানে ফের ভাঙন দেখা দেয়। এতে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। ফলে বুধবার রাত থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে আটকে পড়া যানবাহন বিকল্প পথে চলাচল শুরু করে। ঢাকাগামী সব যানবাহন টঙ্গীর মুন্নু গেট এলাকা দিয়ে কামারপাড়া সংযোগ সড়ক ব্যবহার করে রাজধানীতে প্রবেশ করে। সেই সঙ্গে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যানবাহন তুরাগ নদের ওপর আব্দুল্লাহপুর-টঙ্গী বেইলি সেতু ব্যবহার করে গাজীপুরসহ দেশের উত্তরাঞ্চলে যান চলাচল শুরু হয়।

তবে কয়েক ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী বাজার থেকে ভোগড়া বাইপাস ও টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়কের নিমতলী পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়। এসব এলাকায় প্রায় আট কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ যানজট দেখা যায়। বেলা বাড়তে থাকলে টঙ্গীর প্রায় সব শাখা সড়কেও যানজট লেগে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন কয়েক লাখ যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিক।

জরুরি প্রয়োজনে রাজধানীর মগবাজারে যেতে গাজীপুরের বোর্ড বাজার থেকে বাসে ওঠেন শাহরিয়ার হোসাইন কানন। যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে পৌঁছান টঙ্গীর মিলগেট এলাকায়। তিনি বলেন, বিকল্প সড়কে ভোগান্তি বেড়েছে। সেই সঙ্গে সঠিক সময়ে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া এবং কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনায় এমন ভোগান্তি হচ্ছে বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ঢাকা-গাজীপুর পথে চলাচলকারী ভিআইপি-২৭ বাসের চালক আবুল বাশার বলেন, ‘সকাল সাড়ে সাতটা থেকে গাড়ি নিয়ে বড়বাড়ি এলাকায় বসে আছি। প্রতি কিলোমিটার পথ যেতে সময় লাগছে দেড় ঘণ্টারও বেশি। যানজটের কারণে বাসের অধিকাংশ যাত্রী বাস থেকে নেমে হেঁটে রওনা দিয়েছেন।’

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দ্বিতীয় দিনেও একই সড়কে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। সকালে সড়কে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ থাকায় মহাসড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা দেয়। এর আগে বুধবার মধ্যরাত থেকে ওই সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রকল্প পরিচালক মহিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর বুধবার সকালে সেতুর এক অংশ যান চলাচলের উপযোগী করা হয়। সেতুটি মেরামতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা করতে দ্রুত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক উত্তর বিভাগ ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের সঙ্গে জরুরি আলোচনা করি। রাতেই সেতুটিতে যান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা