Ajker Patrika

চালের লাইনে মধ্যবিত্ত নিত্যপণ্যের দামে অস্বস্তি

মো. আতাউর রহমান, জয়পুরহাট
চালের লাইনে মধ্যবিত্ত নিত্যপণ্যের দামে অস্বস্তি

‘ওএমএসের চাউল পায়ে মোর অনেক উপকার হোচে। ওই চাউল যখন থেকে দেচে, তখন থেকেই লেচি। হামরাই সাতজন মানুষ। এক সংসারে খাই।

রোজগার করে একজন। এক দিন পরপর পরিবারপ্রতি ৫ কেজি করে চাউল দেয়; কিন্তু হাতে সব সময় ট্যাকা থাকে না। কারণ এখন রোজগার ভালো হচে না, যা রোজগার তারচে খরচই বেশি হওচে। বাজারত চাউলের দাম বেশি। তাই ট্যাকা বাঁচাতে ওএমএসের চাউল কিনি।’

কথাগুলো বলেন জয়পুরহাট পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের বাবুপাড়া মহল্লার বাসিন্দা শেফালী বেগম। কেবল শেফালী বেগমই নন, একই সুরে কথা বললেন চাল কিনতে আসা আসলাম আকন্দ, সিরিয়া রবিদাসসহ অনেকে।

জানা গেছে, নিম্ন আয়ের মানুষকে সহায়তা এবং বাজারদর স্থিতিশীল রাখতেই ওএমএসের চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জয়পুরহাট সদর পৌরসভার পাঁচজনসহ পাঁচবিবি, কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর পৌরসভার ২০ জন ওএমএস ডিলার প্রতিদিন চাল বিক্রি করছেন।

শুক্র ও শনিবার ছাড়া সপ্তাহে পাঁচ দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ওএমএস ডিলাররা এই চালগুলো বিক্রি করেন। সাধারণ ক্রেতা এবং টিসিবি কার্ডধারীদের কাছে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে এই চাল বিক্রি করা হচ্ছে।

বাজারে চাল, ভোজ্যতেল, মাছ, মাংস, ডিম, শাকসবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম বেশি। তাই রোজগারের সঙ্গে ব্যয়ের সংগতি রাখা অনেকের পক্ষেই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে নিম্নবিত্তদের সঙ্গে মধ্যবিত্তরাও ভিড় করছেন ওএমএসের দোকানে।

জয়পুরহাট পৌরসভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ওএমএসের চাল কিনতে এসেছিলেন আসলাম আকন্দ। তিনি বলেন, ‘আমার পাঁচজনের সংসার। রোজগার করি একাই। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নিয়ে আমরা আছি বেকায়দায়। পারি না অন্যের বাড়িতে কাজ করতে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয়  সব জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। আমাদের আয় বাড়েনি। তাই সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। ৩০ টাকা কেজিতে এক দিন পরপর ৫ কেজি করে চাল পাওয়া যাচ্ছে। এতে উপকার হচ্ছে।’

জয়পুরহাট চিনিকল এলাকার এফ-টাইপ কলোনির বাসিন্দা মঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী আজহার আলী জয়পুরহাট সুগার মিলে চাকরি করেন।

তিনি যে টাকা বেতন পান, তা দিয়ে ছয়জনের সংসার চালাতে কষ্ট হয়। মাস শেষে টাকা সঞ্চয় করতে পারি না;

বরং প্রতি মাসেই ধারদেনা করে চলতে হয়। তাই শুরু থেকেই আমরাও ৩০ টাকা কেজির ওএমএসের চাল নিয়মিত কিনছি।’

জয়পুরহাট পৌরসভার তাজুরমোড় মহল্লার বাসিন্দা সিরিয়া রবিদাস (৬৭) বলেন, ‘ওএমএসের চাল না পাওয়া গেলে অনেককেই না খেয়ে থাকতে হতো। কম দামে চাল পাওয়ায় কিছু টাকা বেঁচে যাচ্ছে; কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম না কমালে আমাদের অস্বস্তি কমবে না।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জ্ঞানপ্রিয় বিদুষী চাকমা বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ওএমএস ডিলারের বিক্রয় কেন্দ্রগুলো থেকে সাধারণ ক্রেতা এবং টিসিবি কার্ডধারীরা চাল সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রতি ডিলারের জন্য প্রতিদিন ২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ থাকে। বরাদ্দের চাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত ডিলারকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে হবে। কোনো ডিলার দুর্নীতি-অনিয়ম করছেন কি না তা আমাদের লোক নিয়মিত তদারকি করছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফোন-ইন্টারনেট ভাতা পাচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের সব কর্মচারী

এস আলমের জামাতার পেটে ৩৭৪৫ কোটি টাকা

ভাড়া বাড়িতে চলা ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

পিপির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ৪৯ জন সহকারী পিপির

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত