রুমা মোদক
আমার ১৬ বছরের ছেলে কাব্য ছোটবেলায় খুব বায়নাবাজ ছিল। প্রায়ই এটা-ওটা বায়না করত। টিনএজে পড়ার পর ওর পরিবর্তনটা লক্ষ করি। পরিবারের সামর্থ্য বুঝতে পারে। একদম কমে যায় ওর এটা-ওটার বায়না।
মাত্রই ষাণ্মাসিক পরীক্ষা শেষ হলো স্কুলে। নাওয়া-খাওয়াহীন পড়ালেখা, আর পরীক্ষাভীতির ঘুমহীন রাতের শেষ। আমি বলি, ‘বাবা, এবার কদিন রেস্ট নাও।’ তবু পরপর দুদিন গভীর রাতে ওর হাতে মোবাইল দেখে কৌতূহলী হই। এত রাতে মোবাইল দিয়ে কী করো?
কাঁচুমাচু মুখে ও অনেক ভণিতা করে। শেষে বলে, ‘দেবে মা?’ আমি ওর মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি মেসেঞ্জার গ্রুপ করে বন্যার্তদের জন্য টাকা সংগ্রহ করছে। হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্ররা। আমি অশ্রু গোপন করে ওর হাতে ৫০০ টাকা তুলে দিই। মোট ৮ হাজার টাকা সংগ্রহ হয় ওদের। প্রয়োজনীয় সওদাপাতি কিনে ত্রাণ দিতে যাওয়া আরেকটি দলের হাতে জিনিসগুলো তুলে দেয় ওরা।
এ আরেক বাংলাদেশ। মূল্যবোধের অবক্ষয়ে আত্মস্বার্থবাদী হয়ে গড়ে ওঠা প্রজন্ম নিয়ে আমাদের যে হতাশা, তার বিপরীতে গড়ে ওঠা আরেক বাংলাদেশ। এ দেশের নরম পলিমাটির মতোই যেমন ইচ্ছে গড়ে নেওয়ার মতো একটি প্রজন্ম। সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বন্যার্তদের দুর্দশা দেখে বিবেকের দায়িত্বে আলোড়িত হওয়া। আমিও এদের জন্য কিছু করতে পারি— এমন ভাবনায় উদ্বেলিত হওয়া ছেলেগুলো। যাদের প্রবণতা বলে দেয় সুকুমার বৃত্তিরই উচ্চকিত ভূমিকা এদের বেড়ে ওঠায়। এখন যা অ্যামেচার আবেগ, ভবিষ্যতে তারাই হয়ে উঠতে পারে পুরো দেশের আশা আর ভরসার জায়গা।
সিলেট, সুনামগঞ্জের প্রলয়ংকরী বন্যার সময় এবার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে স্বেচ্ছাসেবকেরা। সাংগঠনিকভাবে, এককভাবে, দলীয়ভাবে। বন্যার্ত মানুষকে উদ্ধার করা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষকে ত্রাণ পৌঁছানো—সবাই সবার অবস্থান থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। সরকারি ত্রাণ কখন পৌঁছাবে, সে আশায় বসে থাকেনি কেউ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেজ খুলে, পোস্ট দিয়ে, ঘরে ঘরে সাহায্যের জন্য গিয়ে, বাচ্চা ছেলেরা রাস্তায় গান গেয়ে পর্যন্ত টাকা সংগ্রহ করেছে। এই শহরেই দেখেছি এসব। সেই টাকায় ত্রাণ নিয়ে ছুটে গেছে বন্যাদুর্গত প্রত্যন্ত গ্রামে।
এভরি ক্লাউড হ্যাজ এ সিলভার লাইন। এই প্রলয়ংকরী বন্যার ইতিবাচকতা হলো নতুন করে এ দেশের তারুণ্যের শক্তিকে অনুভব করিয়েছে।
পুরো সুনামগঞ্জে বন্যার পানির তীব্র তোড়ে ঝলমল করছিল এই তারুণ্যের ঝলসানি। সারা দেশ থেকে হাজারো মানুষ ছুটে গেছে সুনামগঞ্জে বন্যার্ত মানুষের পাশে।
সিলেটের বন্যায় ওদের এই প্রয়াস একটা উদাহরণ মাত্র। এই যে মানুষের জন্য মানুষ পাশে দাঁড়ায়, স্বেচ্ছাসেবী হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে যেসব তরুণ, তারা আমাদেরই সন্তান। আমাদের ভবিষ্যৎ। এদের এই সুকুমার বৃত্তিকে কাজে লাগানো গেলে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণ খুব কঠিন নয়। আর যদি এর ব্যত্যয় হয়, তবে তার জন্য দায়ী থাকব আমরা—পূর্ব প্রজন্ম। এখন আমরা যাঁরা অভিভাবক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক সবাই।
লেখক: সাহিত্যিক
আমার ১৬ বছরের ছেলে কাব্য ছোটবেলায় খুব বায়নাবাজ ছিল। প্রায়ই এটা-ওটা বায়না করত। টিনএজে পড়ার পর ওর পরিবর্তনটা লক্ষ করি। পরিবারের সামর্থ্য বুঝতে পারে। একদম কমে যায় ওর এটা-ওটার বায়না।
মাত্রই ষাণ্মাসিক পরীক্ষা শেষ হলো স্কুলে। নাওয়া-খাওয়াহীন পড়ালেখা, আর পরীক্ষাভীতির ঘুমহীন রাতের শেষ। আমি বলি, ‘বাবা, এবার কদিন রেস্ট নাও।’ তবু পরপর দুদিন গভীর রাতে ওর হাতে মোবাইল দেখে কৌতূহলী হই। এত রাতে মোবাইল দিয়ে কী করো?
কাঁচুমাচু মুখে ও অনেক ভণিতা করে। শেষে বলে, ‘দেবে মা?’ আমি ওর মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি মেসেঞ্জার গ্রুপ করে বন্যার্তদের জন্য টাকা সংগ্রহ করছে। হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্ররা। আমি অশ্রু গোপন করে ওর হাতে ৫০০ টাকা তুলে দিই। মোট ৮ হাজার টাকা সংগ্রহ হয় ওদের। প্রয়োজনীয় সওদাপাতি কিনে ত্রাণ দিতে যাওয়া আরেকটি দলের হাতে জিনিসগুলো তুলে দেয় ওরা।
এ আরেক বাংলাদেশ। মূল্যবোধের অবক্ষয়ে আত্মস্বার্থবাদী হয়ে গড়ে ওঠা প্রজন্ম নিয়ে আমাদের যে হতাশা, তার বিপরীতে গড়ে ওঠা আরেক বাংলাদেশ। এ দেশের নরম পলিমাটির মতোই যেমন ইচ্ছে গড়ে নেওয়ার মতো একটি প্রজন্ম। সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বন্যার্তদের দুর্দশা দেখে বিবেকের দায়িত্বে আলোড়িত হওয়া। আমিও এদের জন্য কিছু করতে পারি— এমন ভাবনায় উদ্বেলিত হওয়া ছেলেগুলো। যাদের প্রবণতা বলে দেয় সুকুমার বৃত্তিরই উচ্চকিত ভূমিকা এদের বেড়ে ওঠায়। এখন যা অ্যামেচার আবেগ, ভবিষ্যতে তারাই হয়ে উঠতে পারে পুরো দেশের আশা আর ভরসার জায়গা।
সিলেট, সুনামগঞ্জের প্রলয়ংকরী বন্যার সময় এবার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে স্বেচ্ছাসেবকেরা। সাংগঠনিকভাবে, এককভাবে, দলীয়ভাবে। বন্যার্ত মানুষকে উদ্ধার করা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষকে ত্রাণ পৌঁছানো—সবাই সবার অবস্থান থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। সরকারি ত্রাণ কখন পৌঁছাবে, সে আশায় বসে থাকেনি কেউ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেজ খুলে, পোস্ট দিয়ে, ঘরে ঘরে সাহায্যের জন্য গিয়ে, বাচ্চা ছেলেরা রাস্তায় গান গেয়ে পর্যন্ত টাকা সংগ্রহ করেছে। এই শহরেই দেখেছি এসব। সেই টাকায় ত্রাণ নিয়ে ছুটে গেছে বন্যাদুর্গত প্রত্যন্ত গ্রামে।
এভরি ক্লাউড হ্যাজ এ সিলভার লাইন। এই প্রলয়ংকরী বন্যার ইতিবাচকতা হলো নতুন করে এ দেশের তারুণ্যের শক্তিকে অনুভব করিয়েছে।
পুরো সুনামগঞ্জে বন্যার পানির তীব্র তোড়ে ঝলমল করছিল এই তারুণ্যের ঝলসানি। সারা দেশ থেকে হাজারো মানুষ ছুটে গেছে সুনামগঞ্জে বন্যার্ত মানুষের পাশে।
সিলেটের বন্যায় ওদের এই প্রয়াস একটা উদাহরণ মাত্র। এই যে মানুষের জন্য মানুষ পাশে দাঁড়ায়, স্বেচ্ছাসেবী হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে যেসব তরুণ, তারা আমাদেরই সন্তান। আমাদের ভবিষ্যৎ। এদের এই সুকুমার বৃত্তিকে কাজে লাগানো গেলে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণ খুব কঠিন নয়। আর যদি এর ব্যত্যয় হয়, তবে তার জন্য দায়ী থাকব আমরা—পূর্ব প্রজন্ম। এখন আমরা যাঁরা অভিভাবক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক সবাই।
লেখক: সাহিত্যিক
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫