Ajker Patrika

রসিকরাজ

সম্পাদকীয়
রসিকরাজ

ডা. মহম্মদ আবদুল ওয়ালীর সঙ্গে বেশ সখ্য ছিল সৈয়দ মুজতবা আলীর। তিনি ছিলেন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ। একদিন ঝুম বৃষ্টি। প্রতিবেশী এক বন্ধুর বাড়ির আড্ডায় উপস্থিত মুজতবা আলী আর ডা. ওয়ালী। মুজতবা আলী কোনো আসরে থাকলে দ্বিতীয় কোনো বক্তার প্রয়োজন পড়ে না। তিনি কথা বলেই চলেছেন। ঝুম বৃষ্টির মধ্যে হঠাৎ তাঁর ইচ্ছে হলো একটা বই আনতে বাড়ি যাবেন। দরকারি বই। সবাই হা হা করে উঠল। বলল, ‘বাইরে তুমুল বৃষ্টি। যাবেন না, যাবেন না, বাইরে যাবেন না!’
মুজতবা আলী বললেন, ‘কেন যাব না।’

‘দেখছেন না, বৃষ্টি হচ্ছে। ভিজে যাবেন যে!’

শুনে হেসে ফেললেন মুজতলা আলী। বললেন, ‘আমি মিছরি না চিনি? ভিজলে কি আমি গলে যাব?’

ওয়ালী সাহেবদের একবার দাওয়াত দিয়েছেন সৈয়দ মুজতবা আলী। খাওয়া আর আড্ডা শেষে বাড়ির পথ ধরেছেন তাঁরা। মুজতবা আলীও তাঁদের সঙ্গ দিতে 
এগিয়ে গেলেন অনেকটা পথ। সৌজন্য করে ওয়ালী সাহেব বললেন, ‘অনেকটা পথ এসেছেন। আপনি আর এগোবেন না।’

কিন্তু আরও অনেকটা পথ তাঁদের এগিয়ে দিলেন তিনি। তারপর যখন ফেরার সময় হলো, তখন বললেন, ‘আমি আমার বন্ধুদের ঠিক সেই পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে যাই, যেখান থেকে তাদের ফিরে আসার আর কোনো সম্ভাবনা থাকে না।’

পরের ঘটনাটা রাধাপ্রসাদ গুপ্তের। তাঁকে শাঁটুল মামু বলে ডাকতেন মুজতবা আলী। মুজতবা আলীর লেখা ‘দেশে বিদেশ’ বইয়ের একটা রিভিউ লিখেছেন রাধাপ্রসাদ গুপ্ত। সেই রিভিউ পড়ে মুজতবা আলী রাধাপ্রসাদকে পাঠিয়ে দিয়েছেন ‘দেশে বিদেশে’র একটা কপি। বইয়ের সঙ্গে একটা চিরকুট। ‘শাঁটুল মামু, তুমি আমার বইয়ের যে রকম বেশরম প্রশংসা করেছ, তা থেকে পরিষ্কার মালুম হচ্ছে, তুমি আমার লেখাটা পড়োনি। যাতে ভালো করে পড়তে পারো, সে জন্য এই বইটা দিলাম।’

সূত্র: সৈয়দ মুজতবা আলী স্মারকগ্রন্থ, তারাপদ রায়, পৃষ্ঠা ২৪-২৫

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত