Ajker Patrika

প্রতারণা থেকে সাবধান

সম্পাদকীয়
প্রতারণা থেকে সাবধান

বিজ্ঞান-প্রযুক্তির উৎকর্ষের সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার ধরন বদলেছে। সময়ের সঙ্গে আমরা যত বেশি ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, তত বেশি ‘ডিজিটাল’ অপরাধের মাত্রা বাড়ছে। সাধারণত সহজ-সরল মানুষেরাই প্রতারকদের প্রধান টার্গেট হয়ে থাকে। অল্প সময়ে বেশি লাভের মিথ্যা প্রলোভনে পড়ে অনেক মানুষ প্রতারণার শিকার হচ্ছে।

গত বছরের আগস্টে অ্যাপভিত্তিক অনলাইন ট্রেডিং গ্রুপ ‘মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ’ (এমটিএফই)-এ বিনিয়োগ করে শত শত কোটি টাকা আমাদের দেশের মানুষ খুইয়েছে। এটা ছিল অ্যাপভিত্তিক বিদেশি সাইট।

কিন্তু এবার দেশীয় অ্যাপভিত্তিক ‘ইউএস অ্যাগ্রিমেন্টের’ মাধ্যমে প্রতারণা করা হয়েছে। এটা পরিচালিত হতো মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে। পুরোনো পদ্ধতিতে এবারও একইভাবে মানুষের পকেট কাটা হয়েছে। প্রথম দিকে এই অ্যাপ ১ লাখ টাকা বিনিয়োগে মাসে লাভ দিত ১১ হাজার ২০০ টাকা। কিন্তু এক-দুই মাস পর লাভ দেওয়া বন্ধ করে দেয়। একসময় অ্যাপটাই বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে সারা দেশে দুই হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে খবর বেরিয়েছে আজকের পত্রিকায়।

প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে কিছু মানুষের সর্বস্বান্ত হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। কয়েক বছর আগেও নানা উপায়ে প্রতারক চক্র সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিয়ে হাওয়া হয়ে গেছে। যুবক, ডেসটিনিতে টাকা বিনিয়োগ করে কেউ ফেরত পায়নি। এরপর একে একে ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, কিউকম, ইভ্যালিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দ্বারা মানুষ প্রতারিত হয়েছে। এই কোম্পানিগুলো অ্যাপভিত্তিক ছিল না। সরাসরি গ্রাহক সংগ্রহ করে লোভ দেখিয়ে অর্থ আদায় করা হতো।

এসবের অধিকাংশই ছিল দেশীয় কোম্পানি। এর মধ্যে ডেসটিনি, ই-অরেঞ্জ, ইভ্যালির মালিকদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে নতুনভাবে অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণা করা হচ্ছে। গ্রাহকের মোবাইলে শুধু অ্যাপটি ইনস্টল করলেই কাজ শেষ হয়ে যায়। তার আর দৌড়ঝাঁপ করার দরকার পড়ে না।

দেশে অর্থ এবং সাইবার সিকিউরিটি-সংশ্লিষ্ট যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তাদের অবিলম্বে এ ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানো এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। শুধু সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে নজরদারি নয়, এসব অ্যাপভিত্তিক গ্রুপকে দেশে অবৈধভাবে ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়া ঠিক হবে না।

এমটিএফই বিদেশি অ্যাপ হওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব ছিল না। কিন্তু ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট আমাদের দেশ থেকে পরিচালিত হওয়ায় প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া নিশ্চয়ই কঠিন হবে না।

সাধারণ মানুষকে অহেতুক দোষ দিয়ে লাভ নেই। কে না চাইবে বিনা কায়িক পরিশ্রমে একটু অর্থ উপার্জন করতে? কিন্তু এই লোভে পড়ে মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই প্রচারণা তো সরকার ও পুলিশ করতেই পারে। যেকোনো ডিজিটাল প্রতারণা ও অনিয়মের ঘটনা নিশ্চয়ই তাদের নজর এড়ায় না। যেমন প্রচারণায় অ্যাপগুলোর খবর সাধারণ মানুষ পায়, ঠিক তেমনি প্রচারণার মাধ্যমে কিন্তু প্রতারক থেকে সাবধান করে দেওয়া সম্ভব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত