Ajker Patrika

নিষিদ্ধ জালে জাটকা নিধন

মোহাম্মদ কাজী রাকিব, পাথরঘাটা (বরগুনা)
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ০৯
নিষিদ্ধ জালে জাটকা নিধন

জাটকা রক্ষায় বরগুনার পাথরঘাটায় সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানছেন না জেলেরা। প্রতিদিন নিষিদ্ধ জালে জাটকাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিধন করছেন। অবৈধ মাছ শিকার বন্ধে মৎস্য অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।

সরকারের মৎস্য আইনানুযায়ী সাড়ে ৬ সেন্টিমিটারের ছোট ব্যাস বা ফাঁসের জাল সারা বছরই অবৈধ। আকারে ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা ইলিশ জাটকা নামে অভিহিত; যা অবৈধ। ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আট মাস জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই অবাধে চলছে জাটকাসহ ইলিশের পোনা নিধন।

দেশের বৃহত্তর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য বাজারে সরেজমিন দেখা যায়, ঘাটে ট্রলার থেকে ঝুড়িভর্তি ইলিশ নামানো হচ্ছে। তার ৮০ থেকে ৯০ ভাগ জাটকা বা এর কাছাকাছি আকারের ইলিশ। আড়দারেরা নিলাম হেঁকে তুলে দিচ্ছে পাইকারদের ট্রাকে। জাটকা ধরার বিষয়ে একাধিক ট্রলার মালিক স্বীকার না করলেও তাঁদের ছোট ফাঁসের জাল আছে বলে জানান।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, সাগরে মাছের চরম সংকট। দেশের বৃহত্তর এই বিএফডিসি পাইকারি বাজারে গতকাল রোববার মাত্র ২০ মণ ইলিশ উঠেছে; যার ৮০ থেকে ৯০ ভাগ জাটকা। প্রতিদিনের চিত্র একই রকমের। একই কথা বলেন মৎস্য পাইকার সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসাইন। এ ছাড়া সব জাটকা স্থানীয় বাজারে আসে না। বিক্রি হয় গ্রামে ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার ছোট বাজারে।

পাথরঘাটা শহরে জাল বিক্রির দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাল বিক্রি কম, তবে ছোট ফাঁসের (জাটকা ধরার জাল) বেশি বিক্রি হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জাল বিক্রেতা এ কথা স্বীকার করেন।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ম্যানেজার লেফটেন্যান্ট মো. লুৎফুর রহমান জানান, পাইকারি বাজারে যে মাছ বিক্রির জন্য আসে, তার অধিকাংশ ছোট। যার ২০০ পিচ ওজন করলেও এক মণ হয় না। গ্রেড বা এলসির মাছ ৩০ থেকে ৩২টায় এক মণ ওজন হয়ে যায়। ছোট মাছের বাজারমূল্য কম, অপরিণত আকারের ইলিশ শিকার করায় লাভের মুখ দেখছে না জেলেরা। ভরা মৌসুমে আশানুরূপ ইলিশ না পাওয়ায় অবৈধ উপায় অবলম্বন করছে। অনেকে কারেন্ট জালও ব্যবহার করে থাকে।

বিসিজি দক্ষিণ জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন এম মনজুরুল করিম চৌধুরী গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে পাথরঘাটা বিসিজি স্টেশন কার্যালয়ে এ প্রান্তিক জেলেদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন।

এ সময় মৎস্যজীবীরা জোনাল কমান্ডারকে জানান, বঙ্গোপসাগরে সুন্দরবন লাগোয়া বলেশ্বর, বিষয়খালী ও পায়রা নদী মোহনায় অসংখ্য ডুবোচর ইলিশের চলাচল বাধাগ্রস্ত করছে। এই অসংখ্য ডুবোচরে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ বেহুন্দি, চরঘেরা ও ঘোপ জাল দিয়ে নির্বিচারে ইলিশের বাচ্চাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছ ও ডিম নিষিক্ত হওয়ার আগেই ধ্বংস করা হচ্ছে। যা প্রশাসন দেখেও যেন না দেখার ভান করছে।

পাথরঘাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, ‘নিকটবর্তী বিস্তীর্ণ চরে পাহারায় যেতে যে লোকবলসহ লজেস্টিক দরকার, তা আমাদের নেই। নিকটবর্তী সুন্দরবনের তিন দিকে চরগুলো অবৈধ বেহুন্দি ও ঘোপ জাল দিয়ে পোনা ধ্বংস করলেও আমাদের এখতিয়ারের বাইরে।’

দক্ষিণ জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন এম মনজুরুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘প্রান্তিক জেলেদের সঙ্গে মতবিনিময় করে আমরা অনেক তথ্য পেয়েছি। এগুলো বাস্তবায়নে শিগগিরই কোস্টগার্ড অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোরপূর্বক অপুর স্বীকারোক্তি নিয়েছেন বিএনপির ইশরাক, এনসিপির ব্যবস্থা করা সংবাদ সম্মেলনে দাবি স্ত্রীর

‘মিরপুরের উইকেটের পাশে পুঁইশাক বের হচ্ছে, এত বছর হয়নি কেন’

ভোররাতে হাঁসের মাংস খেতে ৩০০ ফুটে যান আসিফ মাহমুদ, না পেয়ে যান ওয়েস্টিনে

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ভুলভাবে কথা বলেছেন: প্রেস সচিব

নীলা মার্কেটের হাঁসের মাংস নাকি ওয়েস্টিনের—কোনটি সেরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত